ষষ্ঠ অধ্যায়
প্রশ্ন: ‘মাঝি’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে, তা লেখো।
উত্তর: ‘মাঝি’ কবিতার মূলভাব: ‘মাঝি’ কবিতায় চারদেয়ালে বন্দী কোনো এক কিশোর মনের অদম্য ইচ্ছার কথা প্রকাশিত হয়েছে। কিশোরটি তার চারপাশের পরিবেশে মুক্তির আনন্দে ভেসে যেতে চায়; জীবনকে আনন্দময় করার জন্য বেছে নিতে চায় মাঝির জীবন।
বাড়ির কাছে যে নদী আছে, তার ঘাটে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে অনেক ডিঙি বাঁধা থাকে। মাঝিরা এসব নৌকার সাহায্যে নদীর ওপারে যায়। নদীর ওপারের দৃশ্য খুবই সুন্দর। সেখানে কিষানেরা লাঙল কাঁধে করে নদী পার হন, জেলেরা নদীতে জাল টেনে মাছ ধরেন। গরু-মহিষকে সাঁতরে নদী পার করে রাখাল। রাতের বেলা ঝাউঘেরা ডাঙায় শিয়াল ডাকে। সেই ঝাউডাঙার ভেতরে যে জলাভূমি আছে, যেখানে চখাচখী পাখির আসর বসে। সেখানকার শরবনে মানিকজোড় পাখির বাসা রয়েছে, আর কাদায় লেপ্টে আছে কাদাখোঁচা পাখির পায়ের চিহ্ন। সন্ধ্যাবেলায় নদীর ওপারের সাদা কাশবনে জোসনার আভা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রকৃতির নির্ভেজাল আনন্দ উপভোগের জন্য কবি খেয়াঘাটের মাঝি হতে চান। তিনি সারাবেলা এপার-ওপার নৌকা পারাপার করবেন। তাঁর নৌকা পারাপারের দৃশ্য দেখে অবাক হবে পাড়ার ছেলেমেয়েরা। মাঝিগিরি করে কবি দুপুরবেলা ঘরে ফিরে মায়ের কাছে খাবার চাইবেন। সন্ধ্যাবেলাও কবি ঠিকঠাকমতো ঘরে ফিরবেন। কবি সব সময়ে মায়ের আশপাশেই থাকতে চান; বাবার মতো কখনো বিদেশে পড়ে থাকতে চান না। তাই মা যদি রাজি থাকেন, তাহলে বড় হয়ে কবি খেয়াঘাটের মাঝি হতে চান।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা