পঞ্চম শ্রেণি - বাংলা | বাংলাদেশের জাতীয় কবি - রচনা (১)

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

বাংলাদেশের জাতীয় কবি

ভুমিকা

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে বেশি পরিচিত। তাঁর কবিতা, গান ও লেখায় নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বাণী ধ্বনিত হয়েছে।

জন্ম

১৮৯৯ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

বাল্যকাল

মাত্র আট বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে দুঃখ-কষ্টে তাঁর বাল্যজীবন অতিবাহিত হয়। চাচার চেষ্টায় গ্রামের মক্তবে বাংলা ছাড়াও আরবি-ফারসিতে তিনি জ্ঞান লাভ করেন। গান-বাজনার দিকে ঝোঁক থাকায় লেখাপড়া ছেড়ে তিনি ‘লেটো’র দলে যোগ দেন। তারপর আসানসোলে এসে এক রুটির দোকানে কাজ নেন, এখানে সময় পেলেই তিনি সুর করে পুঁথি পড়তেন।

ছাত্রজীবন

ত্রিশালের এক ভদ্রলোক ছিলেন আসানসোলের দারোগা। তিনি নজরুলের প্রতিভার পরিচয় পেয়ে তাঁকে নিজের গ্রাম ময়মনসিংহের দরিরামপুর হাই স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন।

সৈনিক জীবন

কাজী নজরুল ইসলাম ১৯১৭ সালে ৪৯ বাঙালি পল্টনে সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণের জন্যে তিনি করাচি গমন করেন এবং অল্পদিনের মধ্যে হাবিলদার পদে উন্নীত হন।

সাহিত্যকর্ম

মহাযুদ্ধ থেমে গেলে কলকাতায় ফিরে তাঁর কবিজীবন শুরু হয়। তাঁর প্রথম কবিতার নাম ‘মুক্তি’। তাঁর রচিত ‘দোলন-চাঁপা’, ‘বুলবুল,’ ‘ঝিঙেফুল’, ‘ভাঙার গান’, ‘বিষের বাঁশী, ‘অগ্নিবীণা’ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া ‘আলেয়া’, ‘ঝিলিমিলি’, ‘পুতুলের বিয়ে’ ইত্যাদি নাটক এবং ‘বাঁধনহারা’ ‘মৃত্যুক্ষুধা’, ‘কুহেলিকা’ প্রভৃতি উপন্যাস তাঁর অনন্য সাহিত্য সৃষ্টি। তিনি বহু গান লিখেছেন এবং নিজেই সেগুলোতে সুর দিয়েছেন। এছাড়া ‘ধূমকেতু’ ও ‘লাঙল’ নামে দুটি পত্রিকার সম্পাদনাও করেন তিনি।

মৃত্যু

কবি কাজী নজরুল ইসলাম সালের ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট মারা যান।

উপসংহার

বাংলা সাহিত্যে নজরুলের অবদান অনন্য–অসাধারণ। কবি নজরুল তাঁর সব লেখায় মানুষের কথা বলেছেন, মানবতার কথা বলেছেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি।

খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্​স লিট্​ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা