বাংলা - ষষ্ঠ শ্রেণি

ষষ্ঠ শ্রেণির পড়াশোনা

দ্বিতীয় অধ্যায়

ভাষার পরিবর্তন

মৌখিক ভাষার মাধ্যমে ভাষার জীবন্ত রূপ সরাসরি উপভোগ করা যায়। ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের মৌখিক ভাষায় বেশ পার্থক্য থাকে। কখনো আবার এমন হয় যে আমরা নিজেদের ঘরে যেভাবে কথা বলি, বাইরে তার চেয়ে ভিন্নভাবে কথা বলি। আবার স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলি, শিক্ষকের সঙ্গে হয়তো তার চেয়ে কিছুটা ভিন্নভাবে কথা বলার চেষ্টা করি। মানুষের কারণে সময় ও পরিবেশের সঙ্গে ভাষারও পরিবর্তন আসে। আবার অঞ্চলভেদে একই ভাষার উচ্চারণ ও শব্দে নানা রকম বৈচিত্র্য থাকে।

আঞ্চলিক ভাষা

ভাষার ধর্মই পরিবর্তিত হওয়া। ভাষার পরিবর্তনের প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষায় পার্থক্য দেখা যায়। অঞ্চলভেদে একই ভাষার উচ্চারণ ও শব্দে বৈচিত্র্য থাকে। ভাষার এই ভিন্ন ভিন্ন রূপকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা। আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করলে এক অঞ্চলের মানুষের ভাষা অন্য অঞ্চলের মানুষ সহজে বুঝতে পারে না।

প্রমিত ভাষা

ভাষার আদর্শ রূপ হচ্ছে প্রমিত ভাষা। এ ভাষায় কথা বললে সব অঞ্চলের মানুষ সহজে বুঝতে পারে। আঞ্চলিক ভাষার সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রমের জন্য প্রমিত ভাষা নির্ধারণ করা হয়। সবাই মান্য করে বলে প্রমিত ভাষাকে ‘মান ভাষা’ও বলে।

প্রমিত ভাষার চর্চা

আমাদের অনেকেই নিয়মিত প্রমিত বাংলায় কথা বলার চর্চা করি, আবার কেউ কেউ করি না। কেউ হয়তো নিজেদের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে স্বাছন্দ্যবোধ করি। আবার কেউ হয়তো প্রমিত ও আঞ্চলিক শব্দ মিশিয়ে কথা বলি। ব্যক্তিগত পরিবেশ বা ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গে প্রমিত ভাষায় কথা না বলাটা খুবই স্বাভাবিক। ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে প্রমিত ভাষায় কথা বলতে পারাটা একটি দরকারি দক্ষতা। আমাদের মধ্যে যারা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত, তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে হয়তো প্রমিত ভাষায় কথা বলাটা সহজ নয়। তবে নিয়মিত অনুশীলন করলে প্রমিত ভাষায় কথা বলা মোটেই কঠিন নয়। বিভিন্ন পরিস্থিতিগুলোতে আমরা অনেক আঞ্চলিক উচ্চারণ করি।

জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা