পাঠ্যবই-বহির্ভূত অনুচ্ছেদ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে প্রস্তুত খাদি বা খদ্দরের সমাদর শুধু গ্রামজীবনেই নয়, শহরের আধুনিক সমাজেও যথেষ্ট রয়েছে। খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হচ্ছে, এর সবটাই হাতে প্রস্তুত। তুলা থেকে হাতে সুতা কাটা হয়। গ্রামবাসী অবসর সময়ে সুতা কাটে। এদের বলা হয় কাটুনি। গ্রামে বাড়ির আশপাশে তুলার গাছ লাগানোর রীতি আছে। সেই গাছের তুলা দিয়ে সুতা কাটা ও হাতে চালিত তাঁতে এসব সুতায় যে কাপড় প্রস্তুত করা হয়, সেই কাপড়ই প্রকৃত খাদি বা খদ্দর। স্বদেশি আন্দোলনের যুগে বিদেশি কাপড় বর্জন করে দেশি কাপড় ব্যবহারের যে আদর্শ প্রবর্তিত হয়েছিল তারই সাফল্যের স্বাক্ষর এই খাদি।
৩. নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি বাছাই করে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখো।
শব্দ - শব্দার্থ
প্রস্তুত - তৈরি
সমাদর - আদর, যত্ন
বিশেষত্ব - বিশেষ গুণ বা ভাব
অবসর - যখন কোনো কাজ থাকে না
রীতি - নিয়ম
আদর্শ - অনুকরণযোগ্য শ্রেষ্ঠ বিষয়
ক. স্কুলশিক্ষক রহমান স্যার আমার ____ ।
খ. ____ সময়ে মা নকশিকাঁথায় ফুল আঁকেন।
গ. মামাবাড়িতে খুব ____ পাওয়া যায়।
ঘ. সমাজের ____ প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
ঙ. মসলিনের ____ কেউ অস্বীকার করে না।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর:
ক. স্কুলশিক্ষক রহমান স্যার আমার আদর্শ।
খ. অবসর সময়ে মা নকশিকাঁথায় ফুল আঁকেন।
গ. মামাবাড়িতে খুব সমাদর পাওয়া যায়।
ঘ. সমাজের রীতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
ঙ. মসলিনের বিশেষত্ব কেউ অস্বীকার করে না।
৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো
ক. খাদি কাপড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী? খাদি কাপড় কীভাবে তৈরি করা হয় তা চারটি বাক্যে লেখো।
খ. স্বদেশি আন্দোলন কখন এবং কেন হয়েছিল? পাঁচটি বাক্যে লেখো।
গ. পাঁচটি বাক্যে বিদেশি কাপড় বর্জন ও দেশি কাপড় ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরো।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর:
ক. খাদি কাপড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি। খাদি কাপড় মূলত তুলা থেকে তৈরি করা হয়। গ্রামবাসী অবসর সময়ে তুলা থেকে সুতা কাটে। সেই সুতা হাতে চালিত তাঁতের মাধ্যমে কাপড়ে পরিণত হয়। এ কাপড়ই হলো খাদি বা খদ্দর।
খ. স্বদেশি আন্দোলন ১৯০৫ সালে শুরু হয়ে ১৯১১ সাল পর্যন্ত চলেছিল। স্বদেশি আন্দোলন ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেরই একটি অংশ। ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের অবসান করাই ছিল এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য। কারণ, ব্রিটিশেরা এ অঞ্চলের জনগণের ওপর শোষণ ও নির্যাতন চালিয়েছিল। তাই ব্রিটিশ পণ্য বর্জন ও দেশীয় শিল্পের উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে স্বদেশি আন্দোলন শুরু হয়।
গ. বিদেশি কাপড় ব্যবহারে দেশের টাকা বিদেশে চলে যায় বিধায় এ কাপড় বর্জন করা প্রয়োজন। তা ছাড়া বিদেশি কাপড় বর্জন না করলে দেশি কাপড় উৎপাদনে তাঁতিরা আগ্রহ হারাবে। দেশি কাপড় ব্যবহার করলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে এবং দেশের উন্নতি হবে। বিদেশি কাপড়ের চেয়ে দেশি কাপড়ের মান যে ভালো তা বোঝার জন্য দেশি কাপড় ব্যবহার করতে হবে। দেশি কাপড়ের ব্যবহার বাড়লে বিদেশিরা বাংলাদেশের বাজার দখল করতে পারবে না।
খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা