শিখন অভিজ্ঞতা–১
সেশন-১: সত্য অনুসন্ধান
তোমাদের মনে আছে, পলাশের বাবা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঠ্যবইয়ের একটি ছবি সম্পর্কে একটি পত্রিকার নামে মিথ্যা তথ্য পেয়েছিল। একটু চিন্তা করে বলি তো, সংবাদপত্রের ওই সংবাদকে কীভাবে বিকৃত বা নকল করা হয়েছে?
নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের একটি এডিট করা ছবি ও ভুল তথ্য পলাশের বাবার বন্ধু সোশ্যাল মিডিয়ার মেসেজে পাঠিয়েছিল, যা দেখে মনে হয় এটি দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সংবাদে লেখা হয়েছে ওই পাঠ্যবইয়ে অপ্রাসঙ্গিক ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সংবাদটি সত্য ভেবে শেয়ার করার কারণে মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। তাই সঠিক তথ্য না জেনে বা কোনো কিছু শেয়ার করা উচিত নয়। সত্যতা না বুঝে ছবি বা ডকুমেন্ট শেয়ার করা, লাইক দেওয়া ও মন্তব্য করাও অন্যায়। এসব ঘটনায় কী করা যেত, তা আমরা লিখি—
আমরা যে তিনটি ঘটনার বিবরণ দিয়েছি তাতে সাগর, জ্যোতি ও জ্যোতির মা ও পলাশের বাবা কী করতে পারতেন বলে আমি মনে করি?
১. সাগরের ওই লোকটিকে বলা উচিত ছিল, আপনার মোবাইলে যে ওয়েবসাইটটি দেখাচ্ছেন, তার লিংক আমার মোবাইলে পাঠান। আর ওয়েবসাইটটির URL বা ঠিকানা দেখলেই সাগর বুঝে যেত এটি নকল ওয়েবসাইট। নিয়োগপত্রটির কাগজ, লোগো, খাম, খামের ঠিকানা দেখলেই সাগর বুঝতে পারত এটি নকল। এ ছাড়া নিয়োগপত্রটি ই–মেইল কিংবা ডাকযোগে সাগরের ঠিকানায় আসার কথা, কোনো ব্যক্তির হাতে নয়।
কোনো চাকরির প্রক্রিয়াতেই চাকরি পাওয়ার লোভে যে কাউকে টাকা দেওয়া অপরাধ। সাগরের এটি করা উচিত হয়নি।
২. ইউটিউব থেকে কোনো ভিডিও দেখলেই যে সেটা সঠিক বা কোনো টিভির নিউজ ভাবা ঠিক নয়। আজকাল ইউটিউবে প্রচুর ভুল ইনফরমেশনসহ ভিডিও পাওয়া যায়, যা এডিট করে মানুষকে অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি করে থাকে। Fact Check Bangladesh এই Key Word দিয়ে সার্চ করে ভুল তথ্যকে যাচাই করা যায়। জ্যোতি ও জ্যোতির মা সে উপায়ে অনুসন্ধান করতে পারতেন যে ল্যাপটপ বিতরণের খবরটি আদৌ সঠিক কি না।
৩. পলাশের বাবাও প্রচলিত পন্থায় পাঠ্যবইয়ের ছবি নিয়ে প্রচারিত খবরটির সত্যতা যাচাইয়ে অধিকতর অনুসন্ধান করতে পারতেন।
বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যারা এ রকম ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করতে সাহায্য করে।
সার্চ ইঞ্জিনে (Google, Bing, yahoo) ‘Fact Check Bangladesh’ এই Key Wordগুলো দিয়ে সার্চ করলে আমরা কিছু ওয়েবসাইটের নাম পাব, যেগুলো ভুল তথ্যকে চেক করে বা যাচাই করে দেয়। আমরা যেকোনো এক-দুটি ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করা কয়েকটি সংবাদ পড়ব এবং শ্রেণিকক্ষের সবাই মিলে একে একে উত্তর দেব, কীভাবে ওই সংবাদকে বিকৃত করা হয়েছে।
প্রকাশ কুমার দাস, সহকারী অধ্যাপক, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা