অধ্যায় ২
প্রশ্ন
ক. জটিল টিস্যু কাকে বলে?
খ. কোন টিস্যু জলজ উদ্ভিদকে ভেসে থাকতে সাহায৵ করে? ব্যাখ্যা করো।
গ. চিত্র R–এর গঠন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. চিত্র P, Q, R–এর মধ্যে কী কী ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়? বিশ্লেষণ করো।
উত্তর
ক. বিভিন্ন প্রকারের কোষ সমন্বয়ে যে স্থায়ী টিস্যু গঠিত হয় তাকে জটিল টিস্যু বলে।
খ. প্যারেনকাইমা টিস্যুর কোনো কোনোটিতে বড় বড় বায়ুকুঠুরিযুক্ত থাকে বলে এগুলোকে অ্যারেনকাইমা বলে। পানিতে বসবাসকারী উদ্ভিদে এ টিস্যুগুলো দেখা যায়। এ কুঠুরিগুলো বায়ুপূর্ণ থাকার কারণে জলজ উদ্ভিদ ভেসে থাকতে পারে।
গ. চিত্র R স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুর নিচে স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুর গঠন বর্ণনা করা হলো:
১. কোষগুলো লম্বাকৃতির, প্রান্ত দুটি সরু।
২. কোষপ্রাচীর লিগানিন যুক্ত হয়ে বেশ পুরু হয়, প্রাচীর সমান পুরুত্ববিশিষ্ট হয়।
৩. প্রস্থচ্ছেদে কোষগুলো বহুভূজাকৃতির হয়ে থাকে।
৪. পরিপক্ক কোষগুলো মৃত এবং নিউক্লিয়াস ও প্রোটোপ্লাজমবিহীন।
ঘ. চিত্র P, Q, R–এ যথাক্রমে প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা ও স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যু দেখানো হয়েছে। নিচের বৈশিষ্ট্যের কারণে টিস্যুগুলো একটি অপরটি থেকে আলাদা:
১. P (প্যারেনকাইমা) টিস্যুতে আন্তঃকোষীয় ফাঁক থাকে। Q (কোলেনকাইমা) টিস্যুতে আন্তঃকোষীয় ফাঁক না–ও থাকতে পারে। R (স্ক্লেরেনকাইমা) টিস্যুতে আন্তঃকোষীয় ফাঁক একেবারেই থাকে না।
২. প্যারেনকাইমা টিস্যুর কোষগুলো আকারে গোলাকার, ডিম্বাকার বা বহুভুজাকার হতে পারে। আর কোলেনকাইমা টিস্যু প্রস্থচ্ছেদে বহুভুজাকার হলেও লম্বচ্ছেদে আয়তাকার। প্রস্থচ্ছেদে স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুর কোষগুলো বহুভুজাকার, তবে লম্বচ্ছেদে সরু ও লম্বা হয়ে থাকে।
৩. প্যারেনকাইমা টিস্যুর কোষপ্রাচীর পাতলা। আর কোলেনকাইমা টিস্যুর কোষপ্রাচীর অপেক্ষাকৃত পুরু। কিন্তু স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুর কোষপ্রাচীর অত্যন্ত পুরু হয়ে থাকে।
৪. প্যারেনকাইমা টিস্যুতে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকতে পারে। আর কোলেনকাইমাতে কখনো কখনো ক্লোরোপ্লাস্ট থাকলেও স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুতে থাকে না।
৫. উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঞ্চল, যেমন মূল, কাণ্ড ও পাতার রসাল এবং নরম অংশে প্যারেনকাইমা টিস্যু অবস্থান করে । পাতার বোঁটা মধ্য শিরায়, ত্বকের নিচে ও ফুলের বোঁটায় এই টিস্যু অবস্থান করে। আর স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যু কর্টেক্স, জাইলেম, ফ্লোয়েমের পেরিসাইকেলে অবস্থান করে।
৬. খাদ্য প্রস্তুত, খাদ্য সঞ্চয় ও খাদ্য পরিবহন প্যারেনকাইমা টিস্যুর কাজ। দৃঢ়তা প্রদান, ক্লোরোপ্লাস্ট থাকলে খাদ্য প্রস্তুত করা কোরেনকাইমা টিস্যুর কাজ। দৃঢ়তা প্রদান করাই স্ক্লেরেনকাইমা টিস্যুর প্রধান কাজ।