বাংলা | পাঠ্যবই–বহির্ভূত অনুচ্ছেদ

ইঁদুর

অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তরগুলো লেখো।

এক মুদির দোকানে অনেক ইঁদুর বাস করত। প্রতিদিন রাতে তারা শস্যদানা, রুটি, বিস্কুট ও শুকনো যা পেত, সব খেয়ে ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নষ্ট করত। দোকানের মালিক ইঁদুরদের দৌরাত্ম্যে অস্থির হয়ে পড়ল। দোকানের জিনিস নষ্ট হওয়ায় তার ব্যবসায়ে লোকসান হতে লাগল। সে ভাবল, ‘এই সর্বনাশা ইঁদুরদের হাত থেকে আমাকে বাঁচতে হবে।’ অনেক ভেবে সে একটা বড় মোটা বিড়াল দোকানে পুষতে লাগল। ফলে ইঁদুরদের একাধিপত্য কমতে শুরু করল। তারা বিড়ালের ভয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছিল না। কারণ, প্রতিদিনই বিড়াল দু-চারটে করে ইঁদুর ধরে মারতে লাগল। ইঁদুরেরা খুবই চিন্তায় পড়ে গেল।

তারা সভা ডেকে বিড়ালের হাত থেকে মুক্তির উপায় আলোচনা করতে লাগল। প্রথমে কেউই কোনো উত্তর দিতে পারল না। কিছুক্ষণ পর এক চালাক ইঁদুর উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘বন্ধুগণ, বিড়াল খুব দ্রুত ও নিঃশব্দে চলাফেরা করে বলে আমরা বোঝার আগেই সে আমাদের আক্রমণ করে। তাই বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা দরকার।’ অন্য এক ইঁদুর এতে সমর্থন করে বলল, ‘হ্যাঁ, এর ফলে ঘণ্টার আওয়াজে আমরা বুঝতে পারব যে বিড়াল আসছে, তখন সবাই লুকাতে পারব। সব ইঁদুর আস্তে আস্তে এ প্রস্তাবে সায় দিল। এ সময় একটি বয়স্ক ইঁদুর দাঁড়িয়ে বলল, ‘ভাইসব উল্লাস বন্ধ করো, তোমরা কেউ বলতে পারো সাহস করে বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা কে বাঁধতে যাবে?’ মুহূর্তের মধ্যে সবাই চুপ। কেউ সাহস করে বলতে পারল না যে ‘আমি যাব বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে।’

৩. কয়েকটি শব্দ এবং শব্দার্থ দেওয়া আছে। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখো।

শব্দ অর্থ

অভিজ্ঞ জ্ঞানী

দৌরাত্ম্য নির্যাতন

একাধিপত্য একজনের কর্তৃত্ব

সমর্থন পক্ষাবলম্বন

উল্লাস পরম আনন্দ

নিঃশব্দে শব্দহীনভাবে

ক. স্কুলে ভালো ফলাফল করে ছাত্রছাত্রীরা— করছে।

খ. পলি_পড়াশোনা করছে।

গ. মিথ্যা বলা আমি মোটেও_করি না।

ঘ. দিন দিন মশার_বেড়েই চলেছে।

ঙ. কোনো কাজে_না দেখিয়ে সকলের মতামত নেওয়া উচিত।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. স্কুলে ভালো ফলাফল করে ছাত্রছাত্রীরা উল্লাস করছে।

খ. পলি নিঃশব্দে পড়াশোনা করছে।

গ. মিথ্যা বলা আমি মোটেও সমর্থন করি না।

ঘ. দিন দিন মশার দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।

ঙ. কোনো কাজে একাধিপত্য না দেখিয়ে সকলের মতামত নেওয়া উচিত।

৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো

ক. দোকানমালিকের ব্যবসায় লোকসান হচ্ছিল কেন? দোকানিদের আর কী কীভাবে ক্ষতি হতে পারে? তিনটি কারণ লেখো।

খ. সভায় বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কেন? বিড়াল পোষার তিনটি উপকারিতা লেখো।

গ. কী কী উপায়ে ইঁদুর মারা যায়? পাঁচটি উপায় লেখো।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. প্রতিদিন ইঁদুর এসে দোকানের সবকিছু খেয়ে এবং ছড়িয়ে–ছিটিয়ে তছনছ করে রাখত বলে অনেক জিনিস নষ্ট হয়ে যেত। সে জন্য দোকানমালিকের ক্ষতি হচ্ছিল। এ ছাড়া আরও অনেক কারণে দোকানিদের ক্ষতি হতে পারে। যেমন চুরি হয়ে গেলে, বৃষ্টির পানি দোকানে ঢুকে গেলে, বেশির ভাগ জিনিস বাকিতে বিক্রি করে টাকা আদায় না করতে পারলে, একটানা বেশিদিন দোকান বন্ধ রেখে কোনাবেচা না করলে।

খ. ইঁদুরেরা বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কারণ, বিড়াল খুব নীরবে এসে ইঁদুরদের ধরে ফেলত। নীরবে আসায় ইঁদুরেরা টেরই পেত না যে বিড়াল আসছে। তাই ইঁদুরেরা বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

বিড়াল পোষার তিনটি উপকারিতা: বিড়াল ইঁদুর মারতে পারে ও ইঁদুরের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে পারে। বিড়াল মানুষের উচ্ছিষ্ট খেয়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। এ ছাড়া অনেকে বিড়াল পুষে আনন্দ লাভ করে।

গ. বিভিন্ন উপায়ে ইঁদুর মারা যায়। তার পাঁচটি উপায় হলো— ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়ে, ইঁদুর মারার কল ব্যবহার করে, ইঁদুরের গর্তে গরম পানি ঢেলে দিয়ে, ইঁদুরের আশ্রয়স্থল ভেঙে দিয়ে, নির্দিষ্ট দিনে ইঁদুর মারার অভিযান চালিয়ে।