প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর
পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর এখন সারা দেশেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বদলির কাজটি অনলাইনে শুরু হচ্ছে। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এই কার্যক্রম।
আজ বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। কাল ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালনের তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর বদলির আবেদন শুরু করে একটি নির্ধারিত সময় দেওয়া হবে। অনলাইন আবেদন ছাড়া কোনোভাবেই বদলির সুযোগ থাকবে না। তবে মহানগর এলাকার (ঢাকাসহ ১১টি মহানগর) বদলির কার্যক্রম আপাতত বন্ধই থাকবে। মহানগরের বাইরে দেশের অন্যান্য এলাকার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এখন বদলির কাজটি হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিকের মাঠ প্রশাসনের বদলির কাজও অনলাইনে করা হবে।
এর আগে গত ২৭ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে এই বদলি শুরু করেছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। ওই দিন কেবল পরীক্ষামূলকভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নতুন পদ্ধতিতে ১৮টি বিদ্যালয়ে শূন্য পদে বদলি করা হয়। সেদিন বলা হয়েছিল, নতুন এই পদ্ধতিতে আগস্ট থেকে সারা দেশে এই বদলির কাজ শুরু করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
এখন নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বর এই বদলির কাজ শুরু হচ্ছে। করোনার সংক্রমণজনিত পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
নতুন পদ্ধতিতে বদলির কাজ হবে পুরোপুরি অনলাইনে। নির্ধারিত একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্ধারিত আইডি ব্যবহার করে শিক্ষকদের বদলির জন্য আবেদন করতে হবে। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ওই শিক্ষক বদলির যোগ্য কি না বা কোন বিদ্যালয়ে বদলি হবেন, তা নির্ধারিত হবে।
বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষক অনলাইনে আবেদনটি করার পর সেটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনিও ওই সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে যাচাই করে দেবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি সেটি যাচাই করে পাঠাবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (ডিপিইও) কাছে। ডিপিইও সেটি মঞ্জুর করে পাঠিয়ে দেবেন আবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি তখন বদলির বিষয়ে আদেশ জারি করবেন এবং শিক্ষক সেটি অনলাইনেই জেনে যাবেন।
তিন ধাপের এই যাচাইয়ে প্রত্যেক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তিন দিন করে সময় পাবেন। এই তিন দিনের মধ্যে যাচাই করে নিষ্পত্তি না করলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাচাইয়ের জন্য নিয়োজিত পরবর্তী ব্যক্তির কাছে চলে যাবে। তখন নিষ্পত্তি না করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় উপজেলাভিত্তিক। তাই সাধারণ নিয়মে উপজেলার মধ্যেই শিক্ষকদের বদলি হতে হবে, তবে বিশেষ কারণে উপজেলা বা জেলা পরিবর্তনেরও সুযোগ আছে।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোয় মোট শিক্ষক আছেন প্রায় পৌনে চার লাখ। এখন নতুন করে আরও ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ নতুন নিয়োগের ফলাফল প্রকাশিত হতে পারে।
এর আগে গত ৩০ জুন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) আবেদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।