ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই শিক্ষার্থীদের চাকরি দেবে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ১০টি ক্যাম্পাসের ২ লাখ ৯৫ হাজার শিক্ষার্থী
ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

কাজ করার অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) নেই—এমন অবৈধ অভিবাসীকে চাকরি দেবে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (ইউসি)। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির কয়েক দশকের পুরোনো ইমিগ্রেশন আইনকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক সভায় রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের ভোটাভুটির পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফক্স নিউজ ও দ্য পলিটিকোর খবরে বলা হয়েছে, ১৮ মে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার রিজেন্ট বোর্ডে কাজ করার অনুমতি নেই-, এমন অবৈধ অভিবাসীদের চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভোটাভুটিতে পাস হয়েছে। আসছে নভেম্বরে অবৈধ অভিবাসীদের চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

১৯৮৬ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগ্যান স্বাক্ষরিত আইনের কারণে ওয়ার্ক পারমিট নেই, এমন বিদেশিদের (ক্যাম্পাসে চাকরি) নিয়োগ দেওয়া নিষিদ্ধ হয়েছিল। সেই বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া নতুন সিদ্ধান্ত নিল
ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বোর্ডের চেয়ার রিচার্ড লিইব বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহায়তা করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আমি জানি এটার জন্য সময় লাগবে।আমাদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং বিশ্লেষণ করতে হবে, সবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হতে হবে যে আমরা সঠিকভাবে কাজটি করছি কি না।’

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম  ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ১০টি ক্যাম্পাসের ২ লাখ ৯৫ হাজার শিক্ষার্থী আইনগত পরামর্শ, অর্থনৈতিক সহায়তা ও কাউন্সেলিং সেবা পাচ্ছেন। এদের মধ্য ওয়ার্ক পারমিট নেই, এমন শিক্ষার্থীও আছেন।

ক্যাম্পাসগুলোয় এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বা কর্মী নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হলে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদেশি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কাজের সুযোগ পেলে অর্থসংকটে পড়বেন না। তাঁদের মেধাকেও বিশ্ববিদ্যালয় কাজে লাগাতে পারবে। কাজের সুযোগ পেলে হাজারো শিক্ষার্থীর ভাগ্যোন্নয়নের পথ সুগম হবে। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগ্যান স্বাক্ষরিত একটি আইনের কারণে ওয়ার্ক পারমিট নেই, এমন বিদেশিদের (ক্যাম্পাসে চাকরি) নিয়োগ দেওয়া নিষিদ্ধ হয়েছিল। সেই বিধিকে চ্যালেঞ্জ করেই ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া এমন সিদ্ধান্ত নিল।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট দলের নীতিনির্ধারকেরা ২০০১ সাল থেকে টিউশনি ফি নানা ক্ষেত্রে মওকুফের বিধি করেছে
ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন স্কুলের ডিন এবং অধ্যাপকদের নেতৃত্বে পরিচালিত একদল শিক্ষার্থীর যুক্তি হলো, অভিবাসন সংস্কার এবং নিয়ন্ত্রণ আইন অঙ্গরাজ্যগুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়। তাঁরা কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়কে চাপ দিয়ে আসছিলেন যে ক্যাম্পাসে বিদেশি ছাত্রদের চাকরি দেওয়া হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম  ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ১০টি ক্যাম্পাসের ২ লাখ ৯৫ হাজার শিক্ষার্থী আইনগত পরামর্শ, অর্থনৈতিক সহায়তা ও কাউন্সেলিং সেবা পাচ্ছেন। এদের মধ্য ওয়ার্ক পারমিট নেই, এমন শিক্ষার্থীও আছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট দলের নীতিনির্ধারকেরা ২০০১ সাল থেকে টিউশনি ফি নানা ক্ষেত্রে মওকুফের বিধি করেছে। এর সুবিধা ওয়ার্ক পারমিট নেই এমন শিক্ষার্থীরাও পাচ্ছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীরা অঙ্গরাজ্য প্রদত্ত অর্থনৈতিক সহায়তারও আবেদন করছেন। রিপাবলিকানদের আপত্তি সত্ত্বেও বিদেশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও সুযোগ ঠেকাতে পারেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট জস হারনার্ন্ডেজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সব সময় প্রগতিশীল চিন্তাচেতনাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। সে জন্য আমি আশা করছি, অন্য অঙ্গরাজ্যর সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইউসিকে অনুসরণ করবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশা পূরণে।’

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার (ইউসি) ১০টি ক্যাম্পাস হলো—ইউসি বার্কলে, ইউসি ডেভিস, ইউসি আরভিন, ইউসি লস অ্যাঞ্জেলেস, ইউসি মার্সেড, ইউসি রিভারসাইড, ইউসি সানদিয়েগো, ইউসি সান ফ্রান্সিসকো, ইউসি সান্তা বারবারা ও ইউসি সান্তা ক্রুজ।