এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি-১০৯

অধ্যায়-৭প্রিয় শিক্ষার্থী, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ ২য় পত্র ব্যাংকিং ও বিমা অংশের ৭ম অধ্যায় (বৈদেশিক বিনিময়) থেকে একটি উদ্দীপক ও এর উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।# চিত্রে একটি দেশের মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার প্রদর্শিত হলো:প্রশ্ন:ক. প্রত্যয়পত্র কী!খ. ভ্রমণকারীর চেক বলতে কী বোঝায়?গ. উদ্দীপকের চিত্রে ই-বিন্দুটি কিসের নির্দেশক ব্যাখ্যা করো।খ. দেশটির নতুন বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা রেখা DD-এর প্রভাব উদ্দীপক অনুসারে মূল্যায়ন করো।উত্তর: ক. যে পত্রের মাধমে ব্যাংক তার আমদানিকারকের পক্ষে রপ্তানিকারককে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধের নিশ্চয়তা দেয় এবং আমদানিকারকের অপরাগতায় নিজে পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে প্রত্যয়পত্র (LC) বলে।উত্তর: খ. ভ্রমণকারীর চেক এমন এক ধরণের অ-বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণের দলিল যাতে ইস্যুকারী ব্যাংক দলিলে উল্লেখিত প্রাপককে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করার জন্য ব্যাংকের কোনো শাখা বা প্রতিনিধিকে শর্তহীন নির্দেশ দেয়।এ ধরনের চেক পর্যটকের নগদ অর্থ গ্রহণের ঝামেলা হ্রাস করার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। কারও এ চেক চুরি বা হারানো গেলেও তা অন্য কেউ ভাঙতে পারে না। ইস্যুকারী ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের বিদেশের শাখা বা প্রতিনিধি ছাড়াও বিদেশে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও ভ্রমণকারীর চেক (TC) ভাঙানো যায়।উত্তর: গ. উদ্দীপকের চিত্রে ই বিন্দুটি দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ের ভারসাম্য হার নির্দেশ করছে।বিনিময়ের ভারসাম্য হার মানে হলো ওই বিনিময় হার যেখানে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগান রেখা পরস্পরকে ছেদ করে। তাই এ বিন্দুতে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগান পরস্পর সমান হয়। এ বিন্দুতে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগানের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার ফলে ভারসাম্য বিনিময় হার নির্ধারিত হয়।উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগান রেখা ‘OY’ অঙ্কে অবস্থান করছে আর দেশীয় মুদ্রায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অবস্থান করছে ‘OX’ অঙ্কে। এসব বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা রেখা ‘DD’ ডানদিকে নিম্নগামীর দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, দেশীয় মুদ্রায় বৈদেশিক মুদ্রার দাম যখন কমে, তখন দেশের ভেতরে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার পরিমাণ বাড়ে। তার মানে বৈদেশিক মুদ্রার দাম কমলে বিদেশি দ্রব্য দেশে সস্তা হয় এবং জনগণ বেশি ভোগ করতে চায়। অপর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান রেখা ‘SS’ ডান দিকে উচ্চগামী। এর দ্বারা প্রমাণ হয় বৈদেশিক মুদ্রার দাম বাড়লে এর জোগানের পরিমাণও বাড়ে। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রার দাম বাড়লে আমাদের দেশীয় পণ্য বিদেশে সস্তা হয় এবং ওই সব দেশে আমাদের পণ্যের ভোগ বৃদ্ধি পায়। এতে রপ্তানি বাড়ে এবং দেশে বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে। এখন ‘DD’ এবং ‘SS’ রেখাদ্বয় পরস্পর E বিন্দুতে ছেদ করেছে। ফলে এ বিন্দুতে চাহিদা ও জোগান পরস্পর সমান। অর্থাৎ ‘OP’ পরিমাণ দেশীয় মুদ্রার বিনিময়ে ‘OQ’ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যাবে।সুতরাং, উদ্দীপকে E বিন্দুটি দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার ও দেশীয় মুদ্রার মধ্যকার ভারসাম্য বিনিময় হার নির্দেশ করছে।উত্তর: ঘ. উদ্দীপকে দেশটির নতুন বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা রেখা ‘DD’ দেশটির ভারসাম্য বিনিময় হারকে E থেকে Eর্ বিন্দুতে স্থানান্তরিত করবে। Eর্ নতুন ভারসাম্য বিন্দু যেখানে নতুন চাহিদা রেখা ‘DD’ জোগান রেখা ‘SS’ কে ছেদ করেছে। এবং ওই বিন্দুতে নতুন করে ভারসাম্য হার নির্ধারিত হয়েছে ‘OPর্ = OQর্ ’।উদ্দীপক্ষে আমরা দেখতে পাই, চাহিদা রেখা ডান দিকে সরে গিয়ে নতুন চাহিদা রেখা ‘DD’ হয়েছে। আমরা জানি বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বৃদ্ধি পায় যখন জনগণ বিদেশি দ্রব্য বেশি পরিমাণ ভোগ করতে চায়। সেটা বৈদেশিক মুদ্রার দাম কমার কারণে বা অন্য কোনো কারণেও হতে পারে। উদ্দীপকের দেশটিতে জোগান ঠিক থেকে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে; এতে নতুন ভারসাম্য বিন্দু Eর্ -এর সৃষ্টি হয়েছে যেখানে ‘OPর্ ’ পরিমাণ দেশীয় মুদ্রার বিনিময়ে ‘OQ র্’ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যাবে।সুতরাং: আমরা বলতে পারি, নতুন চাহিদা রেখা ‘DD’ দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার ও দেশীয় মুদ্রার ভারসাম্য বিনিময় হারকে নতুন স্থানে (Eর্ ) নিয়ে যাবে। এটাই বিনিময় হার নির্ধারণের চাহিদা জোগান তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য যে এখানে ভারসাম্য দাম ওঠানামা করে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ও জোগানের হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর।