চট্টগ্রামে জাগরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের মেলা

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে আজ বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ‘কনফিডেন্স সিমেন্ট-প্রথম আলো জাগরণ উৎসব’।
ছবি: প্রথম আলো

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ‘কনফিডেন্স সিমেন্ট-প্রথম আলো জাগরণ উৎসব’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

প্রতিবছর ‘তারুণ্য উৎসব’ নামে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উৎসবে অংশ নিতেন। কিন্তু গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে উৎসবের আয়োজন করতে পারেননি চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। এ বছর করোনা সংক্রমণ কমে আসায় নতুন নামে উৎসব শুরু হয়েছে।

আজ বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, ভাস্কর সামিনা করিম, কনফিডেন্স সিমেন্টের মহাব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মিরাজুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি তাহমিনা সানজিদা ও প্রথম আলোর সহকারী ব্যবস্থাপক কবি সেলিম রেজা সাগর।

প্রতিবছর ‘তারুণ্য উৎসব’ নামে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উৎসবে অংশ নিতেন। কিন্তু গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে উৎসবের আয়োজন করতে পারেননি চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। এ বছর করোনা সংক্রমণ কমে আসায় নতুন নামে উৎসব শুরু হয়েছে।

তিন দিনব্যাপী উৎসবের মধ্যে আছে আন্তস্কুল-কলেজ বিতর্ক ও আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য’-এ বিষয়ের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নে বিশ্বায়ন সফল ধারণা নয়’-এ বিষয়ের ওপর বিতর্ক করবেন ১২টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। আর ‘আর্থিক জরিমানা সড়কের নিরাপত্তার জন্য সমাধান’ বিষয়ে বিতর্ক করছে ১৮টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

সকালে উৎসব প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ে। বিপক্ষ দলকে হারাতে তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন অনুশীলনে। বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহসিনাত সামিহা, ইসরাত জাহান, সৈয়দা যারিন সুবাহ আকতার—তিনজনই শেষ মুহূর্তে নিজেদের যুক্তিগুলো ঝালিয়ে নিচ্ছিল।

তিন দিনব্যাপী উৎসবের মধ্যে আছে আন্তস্কুল-কলেজ বিতর্ক ও আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা।

এক ফাঁকে তারা প্রথম আলোকে বলে, সড়কে ঝরছে হাজারো প্রাণ। আইন, শাস্তি, জরিমানা; কোনো কিছুতেই মৃত্যুর মিছিল থামানো যাচ্ছে না। কিন্তু আর্থিক জরিমানা সড়কের নিরাপত্তার জন্য কী সমাধান—এ প্রশ্নের পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি তারা ঠিক করে এসেছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, গুগল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাদের হারানো সহজ হবে না।

চিটাগাং আইডিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজিজা সিদ্দিকা, উম্মে আম্মারা তামিমা ও তাহমিম ওয়াসিত ওসানকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়। তারা জানায়, সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েই প্রতিযোগিতায় এসেছে। জেতার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।

এর আগে উদ্বোধনী আয়োজনে ভাস্কর সামিনা করিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ করতাম। মা বেশ উৎসাহ দিতেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়ে যেতেন। তোমরাও (শিক্ষার্থীরা) নাচ, গান, ছবি আঁকা, বিতর্কসহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। এতে প্রতিভা বিকশিত হবে।’

সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা হচ্ছে সৃষ্টি ও ধ্বংসের প্রতীক। সৃষ্টির উন্মাদনায়, উদ্ভাবনী ক্ষমতায় ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আবার শিক্ষার্থীদের ধ্বংসের দিকেও ঠেলে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু আমরা সৃষ্টিশীলতার দিকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে চাই। ধ্বংসের দিকে নয়। বিতর্ক, ছবি আঁকা, গান, কবিতা, নৃত্য তথা সাংস্কৃতিক আয়োজন-প্রতিযোগিতা ও পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল করে গড়ে তোলে।’

এ সময় কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপক মিরাজুর রহমান বলেন, ‘কনফিডেন্স সিমেন্ট বরাবরই প্রথম আলোর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে এ উৎসবের আয়োজন করে। কিন্তু গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে সম্ভব হয়নি। এর আগে এটি তারুণ্য উৎসব নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু এবার নাম দেওয়া হয়েছে জাগরণ উৎসব। সঠিক নামটিই দেওয়া হয়েছে। করোনা ভয় ঠেলে আমাদের জেগে উঠতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে।’