ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ

ফুলব্রাইট ভিজিটিং স্কলার প্রোগ্রামের ২০২২ সালে অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আমেরিকান সেন্টার। ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এ বছরের ফুলব্রাইট ভিজিটিং স্কলার প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণ অর্থায়নে অধ্যয়নের জন্য অনুদান প্রদানের লক্ষ্যে আবেদন গ্রহণ করছে।

এক শিক্ষাবর্ষ মেয়াদে গবেষণার জন্য এ অনুদান দেওয়া হবে। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বাংলাদেশি সরকারি-বেসরকারি পেশাজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সরকারি–বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত গবেষকদের (১০ বছর বা ততোধিক সময়ের পেশাগত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন) গবেষণা বা শিক্ষকতার কাজ পরিচালনার জন্য এ অনুদান দেওয়া হবে। এ ফেলোশিপ বাংলাদেশিদের জন্য।

ফুলব্রাইট ভিজিটিং স্কলারের উদ্দেশ্য হলো উচ্চতর ডিগ্রি (পিএইচডি) বা সমমানের পেশাগত ডিগ্রিসম্পন্ন, গভীরভাবে অনুপ্রাণিত এবং নিজ নিজ বিশেষায়িত ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনা ও শিক্ষকতার প্রস্তাবনা পেশকারী শিক্ষকদের অনুদান প্রদান করা। আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ১১ ডিসেম্বর। ওই দিন বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে আবেদন করতে হবে আগ্রহীদের।

ফুলব্রাইট অনুদানসুবিধার মধ্যে রয়েছে ফিরতি বিমানসহ যাতায়াত ভাড়া, শিক্ষাদান ও সংশ্লিষ্ট একাডেমিক ফি, কক্ষ, আবাস ও আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহে মাসিক বৃত্তি, বইপত্র ক্রয়ের ভাতা, স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বিমা, ভ্রমণ ভাতা ও অতিরিক্ত মালপত্রের ভাতা।

ঢাকার আমেরিকান দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, দূরশিক্ষণ, শিক্ষা প্রযুক্তি, জনস্বাস্থ্য, জীববিজ্ঞান ও ফার্মাসি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা–সম্পর্কিত সব শাখার বিস্তৃত বিষয়ে প্রস্তাবনা আহ্বান করা হচ্ছে। সব শাখায় প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রম উন্নয়ন–সম্পর্কিত চাহিদা নিরূপণ ও গবেষণা পরিচালনা, মাধ্যমিক-পরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উন্নয়ন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক বা প্রশিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং একাডেমিক পাঠ্যক্রম বা শিক্ষা উপকরণ প্রণয়ন ও মূল্যায়নে আগ্রহী শিক্ষকদের জন্য কিছু স্বল্পমেয়াদি অনুদানও প্রদান করা হবে। পেশাদারি দক্ষতার জন্য প্রার্থীদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে।

ফুলব্রাইট অনুদানসুবিধার মধ্যে রয়েছে ফিরতি বিমানসহ যাতায়াত ভাড়া, শিক্ষাদান ও সংশ্লিষ্ট একাডেমিক ফি, কক্ষ, আবাস ও আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহে মাসিক বৃত্তি, বইপত্র ক্রয়ের ভাতা, স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বিমা, ভ্রমণ ভাতা ও অতিরিক্ত মালপত্রের ভাতা।

এ বছর ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়েছেন এই আট তরুণ।
ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত

যাঁরা আবেদন করতে পারবেন
এই ফেলোশিপ বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য। আবেদনকালে সম্ভাবনাময় আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থান করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অভিবাসন বা নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন অথবা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী অভিবাসন পেতে যাচ্ছেন, এমন আবেদনকারীরা এ অনুদানের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না। অনুদানের স্বল্পতার কারণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো অনুদানপ্রাপ্ত অথবা বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয়ন সম্পন্নকারীদের জন্য সিনিয়র ফুলব্রাইট অনুদানের আবেদনের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করা আবশ্যক। পূর্বে ফুলব্রাইট ভিজিটিং স্কলার অনুদানপ্রাপ্ত আবেদনকারীকে অত্যন্ত বিরল কোনো প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয়বারের জন্য এ অনুদান দেওয়া যেতে পারে।

যোগ্যতা
অনুদান প্রার্থীদের অবশ্যই শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিদেশে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফুলব্রাইট অনুদানের জন্য বিবেচিত হতে অবশ্যই জীবনবৃত্তান্ত ও শিক্ষকতার জন্য আমন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিত চূড়ান্ত আমন্ত্রণপত্রসহ কোর্সের পাঠ্যক্রম পেশ করতে হবে। স্বল্পমেয়াদি অনুদানের ক্ষেত্রে আমন্ত্রণপত্র না পেয়ে থাকলে তাঁরা যে ধরনের প্রকল্প গ্রহণে আগ্রহী, সে ধরনের প্রকল্পের জন্য যথাযথ সুযোগ-সুবিধা আছে, এমন তিনটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করার জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আবেদনপত্রে পছন্দের ক্রমানুসারে কাঙ্ক্ষিত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এবং পছন্দের যথাযথ যুক্তি উল্লেখ করতে হবে।
আবেদনকারীদের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন–সম্পর্কিত সব নথিপত্রও অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেমে ইলেকট্রনিকভাবে আপলোড করতে হবে।

আবশ্যকীয় নথিপত্রের তালিকা

  • তিনটি সুপারিশপত্র (সুপারিশপত্র বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য আবেদনের নির্দেশনাগুলো পড়ুন)

  • আমন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিত চূড়ান্ত আমন্ত্রণপত্র

  • যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পত্রালাপগুলো, যদি থাকে

  • জীবনবৃত্তান্ত

  • প্রার্থীর ও তাঁর সঙ্গে গমনেচ্ছু নির্ভরশীল সবার পাসপোর্টের কপি

আবেদনকারী প্রার্থীদের করণীয়
অনলাইন আবেদন ফরম এই লিংকে পাওয়া যাবে। আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে একটি লগইন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ নির্দেশাবলি পাওয়া যাবে এই লিংকে। আরও বিস্তারিত জানতে ঢাকার আমেরিকান দূতাবাসের কালচারাল অ্যাফেয়ার্স স্পেশালিস্ট রায়হানা সুলতানার ই–মেইলে ([email protected]) যোগাযোগ করা যেতে পারে।

ফরম পূরণের আগে আবেদনকারীকে অবশ্যই সব নির্দেশনা পড়তে হবে। পেশ করা প্রস্তাবনাগুলো অবশ্যই বিস্তারিত ও যথাযথভাবে লিখিত হতে হবে এবং এর সঙ্গে গবেষণা পরিকল্পনার রূপরেখা জমা দিতে হবে, যা অনুদানের ব্যাপ্তিকালে সম্পন্ন করা যাবে। প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনার পর সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের ঢাকার আমেরিকান সেন্টারে সাক্ষাৎকারের জন্য আহ্বান জানানো হবে।