বাংলা

সংকল্প

প্রিয় শিক্ষার্থী, বাংলা বিষয়ে আজ আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘সংকল্প’ কবিতা নিয়ে আলোচনা করব।

প্রশ্ন: চন্দ্রলোকের অচিনপুরে কারা যেতে চায়?

উত্তর: ‘চন্দ্রলোক’ কথাটির অর্থ হলো চাঁদের দেশ। বিশ্বের মানুষের কাছে এই দেশ একটি অজানা-অচেনা জায়গা। অজানা-অচেনা জায়গা সম্পর্কে মানুষ চিরকালই কৌতূহলী। আর এই কৌতূহলী মানুষই চন্দ্রলোকের অচিনপুরে যেতে চায়। পৃথিবীর এই দুঃসাহসী মানুষ হাউই চড়ে চন্দ্রলোকের অচিনপুর অভিযান সফল করতে চায়। জানতে চায় অচিনপুর চন্দ্রলোকের অজানা সব রহস্য।

প্রশ্ন: কিসের আশায় বীর মরণকে বরণ করছে?

উত্তর: লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য বীরেরা মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণাকেও সাদরে গ্রহণ করে থাকে। রহস্য ভেদ করা, নতুন কিছু সৃষ্টি করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং অজানাকে জানার আশায় বীরেরা মরণকে বরণ করছে।

প্রশ্ন: কবি হাতের মুঠোয় পুরে কী এবং কেন দেখতে চান?

উত্তর: কবি হাতের মুঠোয় পুরে দেখতে চান বিশ্বজগত্টাকে। কারণ, পুরো বিশ্বজগতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক অজানা রহস্য। সেসব রহস্য ভেদ করে তিনি সত্যিটা জানতে চান। আবিষ্কার করতে চান অসীম আকাশের সব অজানা রহস্য। বুঝতে চান কেন মানুষ অতলে, অন্তরিক্ষে, অসীমে ছুটছে। এই জানার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর অদম্য কৌতূহলের সফল প্রকাশ দেখতে চান।

প্রশ্ন: সংকল্প কবিতায় কবি কী কী সংকল্প করেছেন? কবির সংকল্পগুলো লেখো।

উত্তর: ‘সংকল্প’ কবিতায় কবি অনেকগুলো সংকল্প করেছেন। কবির সংকল্পগুলো নিচে লেখা হলো:

১. তিনি জগত্টাকে ঘুরে দেখবেন।

২. যুগ থেকে যুগে মানুষ কীভাবে বেঁচে আসছে, তা তিনি বুঝতে চেষ্টা করবেন।

৩. এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষ কেন ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে, তা দেখবেন।

৪. অগুনতি সাহসী ব্যক্তি কেন বিপদ তুচ্ছ করে নানান কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, মৃত্যু পর্যন্ত বরণ করছে, সেসব তিনি দেখবেন।

৫. সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে ডুবুরি কীভাবে মুক্তা সংগ্রহ করে কিংবা দুঃসাহসী বৈমানিক কীভাবে আকাশে পাড়ি জমায়, তা তিনি জানবেন।

৬. হাউই বা রকেটে চড়ে কে বা কারা চাঁদের দেশে যেতে চায়, কিংবা মঙ্গল গ্রহ থেকে আমাদের পৃথিবীর বুকে কোনো সংকেত ভেসে আসছে কি না, তাও তিনি জানতে চান।

৭. মাটির নিচে পাতালে কী আছে বা মাটির ওপরে আকাশে কী আছে, তা জানার জন্য তিনি পাতাল ও মহাকাশে অভিযান চালাবেন।

৮. তিনি সারা পৃথিবী জয় করবেন, নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিয়ে পৃথিবীকে নেড়েচেড়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন।

প্রশ্ন: কবি পাতাল ফেড়ে নামতে চান কেন?

উত্তর: পাতাল বলতে আমরা সাগরের তলদেশ বা মাটির নিচের দেশকে বুঝে থাকি। মহাকাশের মতো পাতালপুরীও এক অজানা রহস্যঘেরা জায়গা। অসীম বিশ্বকে জানার অদম্য কৌতূহলী কবি মাটির নিচে পাতালে কী আছে, তা জানার জন্য পাতাল ফেড়ে সেখানে নামতে চান। পাতালের অজানা রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে কৌতূহল মেটাতে চান।

প্রশ্ন: বীর ডুবুরি কী করে?

উত্তর: গভীর পানিতে ডুব দিয়ে যারা কোনো জিনিস উদ্ধার করে আনে তাদের ডুবুরি বলা হয়। ‘সংকল্প’ কবিতায় কবি ডুবুরিদের বীর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বীর ডুবুরিরা নদী বা সমুদ্রের তলদেশ থেকে মুক্তা সংগ্রহ করে। নদী বা সমুদ্রের গভীর তলদেশে কোনো নৌকা, লঞ্চ বা জাহাজ নিমজ্জিত হলে বীর ডুবুরিরা তা উদ্ধার করে।

প্রশ্ন: সংকল্প কবিতার মূলভাব লেখো।

উত্তর: সংকল্প কবিতার মূলভাব নিচে লেখা হলো:

কিশোর মন চিরকৌতূহলী। সে জানতে চায় বিশ্বের সবকিছু। আবিষ্কার করতে চায় অসীম আকাশের সব অজানা রহস্য। বুঝতে চায় কেন মানুষ অসীমে, অতলে, অন্তরিক্ষে ছুটছে। বীর কেন জীবন বিপন্ন করে মৃত্যুকে বরণ করছে। সে আরও জানতে চায়, ডুবুরি কেমন করে গভীর পানিতে ডুব দিয়ে মুক্তা আহরণ করছে। দুঃসাহসী অভিযাত্রী কেমন করে আকাশের দিকে উড়ে চলছে। কিশোর মন তাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ঘরে আবদ্ধ না থেকে এই পৃথিবীর সবকিছুকে ঘুরে-ফিরে দেখবে।

সিনিয়র শিক্ষক

আন-নাফ গ্রিন মডেল স্কুল, ঢাকা