বাংলা ২য় পত্র

.
.

ব্যাকরণ
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ২য় পত্রের ব্যাকরণ অংশের প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: বাক্য কাকে বলে? গঠন অনুসারে বাক্যে কত প্রকার ও কী কী? উদহরণসহ আলোচনা করো।
অথবা, গঠন অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? প্রত্যেক প্রকার বাক্যের উদাহরণ দাও।
অথবা, গঠন অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী, আলোচনা করো।
উত্তর: বাক্য: যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে। ডক্টর সুনীতিকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘পরস্পর অর্থসম্বন্ধবিশিষ্ট যে পদগুলোর দ্বারা একটি সম্পূর্ণ ধারণা বা বক্তব্য বা ভাব প্রকাশ পায়, সে পদগুলোর সমষ্টিকে বাক্য বলে।’
গঠন অনুসারে বাক্য: গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। যথা
সরল বাক্য: যে বাক্যে একটি মাত্র কর্তা এবং একটি মাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যথা: দ্বীনা বই পড়ে। এখনে দ্বীনা কর্তা এবং পড়ে সমাপিকা ক্রিয়া।
জটিল বাক্য: যে বাক্যে একটি মাত্র প্রধান খণ্ড বাক্য এবং তার ওপর এক বা একাধিক নির্ভরশীল বাক্য পরস্পর সাপেক্ষভাবে ব্যবহৃত হয়, তাকে জটিল বাক্য বলে। যেমন: যে পরিশ্রম করে সেই সুখ লাভ করে। এখানে ‘যে পরিশ্রম করে’ নির্ভরশীল বাক্য এবং ‘ সেই সুখ লাভ করে’ প্রধান খণ্ড বাক্য।

যৌগিক বাক্য: পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা জটিল বাক্য কোনো অব্যয় দ্বারা সংযুক্ত হয়ে একটি পূর্ণ বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন: লোকটি ধনী কিন্তু অসুখী।
যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো এবং ও, কিন্তু, অথবা, অথচ প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত থাকে।

শব্দ গঠন
প্রশ্ন: শব্দ কাকে বলে? উৎপত্তি অনুসারে বাংলা ভাষার শব্দসম্ভারকে কয় ভাগ করা যায়? উদাহরণসহ প্রতিটি আলোচনা করো।
অথবা, উৎপত্তিগত দিক থেকে বাংলা শব্দ কয় প্রকার ও কী কী উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: শব্দ: অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির নাম শব্দ। মনে রাখতে হবে ধ্বনির সমষ্টি হলেই তা শব্দ হবে না, তাকে একটি অর্থ প্রকাশ করতে হবে। যেমন: কলম, টেবিল, হাত।
উৎপত্তি অনুসারে শব্দের শ্রেণীবিভাগ: উৎপত্তি অনুসারে বাংলা ভাষার শব্দসম্ভারকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১। তৎসম শব্দ, ২। অর্ধতৎসম শব্দ, ৩। তদ্ভব শব্দ, ৪। দেশি শব্দ ও ৫। বিদেশি শব্দ।
তৎসম শব্দ: তৎসম অর্থ হচ্ছে ‘তার সমান’ অর্থাৎ সংস্কৃতের মতো। সুতরাং যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে অবিকৃতভাবে হুবহু বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, তাদের তৎসম শব্দ বলে। যেমন: চন্দ্র, সূর্য, জল, পৃথিবী, নিমন্ত্রণ ইত্যাদি।
অর্ধতৎসম শব্দ: যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, তাদের অর্ধতৎসম শব্দ বলে। যেমন: নিমন্ত্রণ>নেমন্তন্ন, গাত্র>গতর, জ্যোৎস্না>জোছনা ইত্যাদি।
তদ্ভব শব্দ: তদ্ভব অর্থ তা (সংস্কৃত) থেকে উৎপন্ন, সুতরাং যেসব শব্দ সংস্কৃত থেকে প্রাকৃত ভাষার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে, তাদের তদ্ভব শব্দ বলে। যেমন: হস্ত>হত্থ>হাত, চন্দ্র>চন্দ>চাঁদ, ইত্যাদি।
দেশি শব্দ: যেসব শব্দ আর্য ও অনার্য জাতির ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় এসেছে, তাদের দেশি শব্দ বলে। যেমন: ঢেঁকি, কুলা, টোপর, চোঙা ইত্যাদি।
বিদেশি শব্দ: রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি বাংলাদেশে এসে বসবাস করার ফলে বহু বিদেশি শব্দ বাংলা ভাষায় স্থান পেয়েছে। এসব শব্দকে বিদেশি শব্দ বলে। যেমন: আল্লাহ, চেয়ার, কাগজ, দারোগা ইত্যাদি।
# বাকি অংশ ছাপা হবে আগামী মঙ্গলবার
শিক্ষক
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা