বিদ্যমান কাঠামো রেখেই টিএসসির নতুন নকশা, পছন্দ হয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া চাহিদার আলোকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) নতুন খসড়া নকশা প্রস্তুত করেছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর। এই নকশায় টিএসসির বিদ্যমান কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে শুধু নতুন একটি ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। নকশাটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পছন্দও হয়েছে।

আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের একটি দলের বৈঠক হয়। বৈঠকে টিএসসির নতুন খসড়া নকশাটি উপস্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম সিকদার৷

সভার আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, সভায় গণপূর্তের প্রকৌশলীরা একটি নকশা নিয়ে এসেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সেটি ভালো লেগেছে। চার সপ্তাহ পরে গণপূর্তের সঙ্গে আরও একটি সভা হবে। সেখানে নকশা চূড়ান্ত করা হতে পারে। খসড়া নকশায় কী আছে, জানতে চাইলে আবুল কালাম সিকদার বলেন, টিএসসির পুরোনো নকশার বিদ্যমান কাঠামোটি অক্ষুণ্ন থাকবে আর বর্তমানে টিএসসির যেখানে সুইমিং পুল আছে, সেখানে নতুন একটি ভবন হবে।

আরও পড়ুন

গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবনটিকে তিনি আধুনিক ভবন হিসেবে দেখতে চান। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভবনের নকশা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়। টিএসসিকে নতুন করে গড়ার লক্ষ্যে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর কাজ করছে। গত বছরের শেষ দিকে গণপূর্তকে টিএসসি নিয়ে নিজেদের চাহিদাপত্র জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে টিএসসি ভবন ভাঙা হতে পারে—এমন খবরে সমালোচনায় মুখর হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। তাঁরা টিএসসির দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ভেঙে ফেলার বিরোধিতা করেছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওই অংশের অনেকের অভিযোগ, টিএসসিকে ভেঙে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। সংবাদ সম্মেলন করে টিএসসি ভেঙে ফেলার বিরোধিতা করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্র জোট।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাহিদাপত্র পাওয়ার পর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা টিএসসিকে ভেঙে নতুন করে গড়ার জন্য একটি খসড়া নকশা প্রস্তুত করেছিলেন। ওই নকশায় টিএসসির বিদ্যমান সব ভবন ভেঙে নতুন তিনটি ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়। টিএসসির সামনের প্রশস্ত ভবনটি ভেঙে একটি ছয়তলা ভবন এবং ভেতরের মিলনায়তনটি ভেঙে আরও একটি ছয়তলা ভবন নির্মাণের কথা বলা হয় সেখানে। এ ছাড়া টিএসসির ক্যাফেটেরিয়া ও অতিথিকক্ষের স্থলে নয়তলা একটি ভবন নির্মাণের কথা বলেন গণপূর্তের প্রকৌশলীরা। গত ৩ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গণপূর্তের এক সভায় ওই খসড়া উপস্থাপন করা হয়। তবে নকশাটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘পুরোপুরি মনঃপূত’ হয়নি। তাই একে আরও ‘মডিফাই’ করতে গণপূর্তের প্রকৌশলীদের কিছু পরামর্শ দেয় কর্তৃপক্ষ। ওই পরামর্শের আলোকে নতুন খসড়া নকশা প্রণয়ন করে গণপূর্ত। আজকের সভায় সেই নকশাটিই উপস্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন