শিক্ষকতাকে চাকরির সঙ্গে তুলনা নয় : প্রতিমন্ত্রী
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, শিক্ষা হলো দক্ষ মানবসম্পদ ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের চালিকা শক্তি। আর প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে সব শিক্ষার মূল ভিত্তি। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার কারিগর হলো সুশিক্ষিত শিক্ষকসমাজ। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। এ পেশাটাকে কোনো চাকরির সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। সরকার উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষকদের জন্য দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। তাঁদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য পদোন্নতিসহ উন্নত বেতন স্কেল দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নবনিয়োগকৃত সহকারী শিক্ষকদের দুই দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল শনিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষকদের জন্য দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া তাঁদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য পদোন্নতিসহ উন্নত বেতন স্কেল দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশুরা। তাই তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের ভূমিকা হবে নিজ সন্তানের মতো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এমডিজির শর্ত পূরণ করা হয়েছে। এখন এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের শিক্ষকসমাজেকে নিতে হবে। তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা একটি মহান পেশা গ্রহণ করেছেন। এ পেশাটাকে কোনো চাকরির সাথে তুলনা করবেন না।’
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৪ জন শিক্ষককে সরকারীকরণের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির সোপান রচনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি রেজিস্ট্রার্ড ও কমিউনিটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষকের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদান ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল এক ধাপ উন্নীতকরণসহ ১ লাখ ৫ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পণ্ডিত এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।