৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকদের তালিকা স্বাস্থ্যে যাচ্ছে আজ

করোনার টিকা
ছবি: রয়টার্স

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই সব শিক্ষক-কর্মচারীকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার (প্রথম ডোজ) উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (‍ব্যানবেইস) নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এই দুই সংস্থার মহাপরিচালকের কাছে গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি (এমপিও এবং নন-এমপিও) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) যেসব শিক্ষক-কর্মচারীর বয়স ৪০-এর নিচে, তাঁদের তালিকা (সফট কপি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ছকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠাতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাঁদের নিবন্ধন অপশন নিশ্চিত করার পর এসব শিক্ষক-কর্মচারীকেও নিবন্ধন করে টিকা নিতে হবে। আর যেসব শিক্ষক-কর্মচারীর বয়স ৪০ বা তার বেশি, তাঁদের www.surokkha.gov.bd ঠিকানায় নিবন্ধন করে টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

মাউশির মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন। মঙ্গলবার এই তালিকা দেওয়া হবে।

দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুল-কলেজে শিক্ষক আছেন ৪ লাখ ৬ হাজার ৪৬৭ জন এবং কর্মচারী আছেন ১ লাখ ৬২ হাজারের মতো। তাঁদেরও টিকা দেওয়া হবে।

গত শনিবার সরকার ঘোষণা দিয়েছে, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩০ মার্চ খুলে দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পর্যায়ের সব শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর শতভাগ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

অবশ্য শুরুতে সব শ্রেণির পাঠদান প্রতিদিন হবে না। প্রথমে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দ্বাদশ, মাধ্যমিক পর্যায়ে দশম এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন (সপ্তাহে ছয় দিন) ক্লাস হবে। আর শুরুর দিকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাস হবে। নবম ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস হবে। এরপর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ক্লাস শুরু হবে। আর প্রাক্-প্রাথমিকের ক্লাস আপাতত বন্ধই থাকছে।

এর আগে গত সোমবার শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে ঈদুল ফিতরের পর, ২৪ মে থেকে। তার আগে ১৭ মে আবাসিক হলগুলো খুলবে। তবে আবাসিক হল খোলার আগে আবাসিক ছাত্রছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া এই সময়ে হলগুলোর সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

বর্তমানে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এ ছাড়া নতুন আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১০৭টি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মোট ২২০টি আবাসিক হল আছে। এর মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থী আছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৩৩ জন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ১৫ হাজার ৫২৪ জন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। এর ফলে দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ক্ষতির মুখে পড়েছে।