
এক ছবিতে ১৭টি জাতীয় পুরস্কার। বড় বিজয় তো বটেই। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ইতিহাসে মনে রাখার মতো ঘটনাও। চলচ্চিত্রবিষয়ক গবেষক অনুপম হায়াৎও বলছিলেন, ‘বিস্ময়কর তো অবশ্যই। আমজাদ হোসেন পরিচালিত গোলাপী এখন ট্রেনে ১১টি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিল ১৯৭৮ সালে। আমার জানামতে, এটাই ছিল সর্বোচ্চ। একটি ছবির ১৭টি জাতীয় পুরস্কার বিজয়ের অন্য কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩–তে এই বিস্ময়কর ঘটনারই জন্ম দিল গাজী রাকায়েত পরিচালিত ছবি মৃত্তিকা মায়া। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা-অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ খলচরিত্র, শ্রেষ্ঠ কাহিনিসহ মোট ১৭টি শাখায় শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার পেল মৃত্তিকা মায়া। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র শাখায় যৌথভাবে পুরস্কার পাচ্ছেন ফরিদুর রেজা সাগর ও গাজী রাকায়েত। ছবিটি অন্য যেসব বিভাগে সেরা হয়েছে, তার মধ্যে আছে শ্রেষ্ঠ সম্পাদক, শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক, পোশাক ও সাজসজ্জা এবং মেকআপম্যান।
প্রধান চরিত্রে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন মৌসুমী (দেবদাস) ও শর্মিমালা (মৃত্তিকা মায়া)। সেরা অভিনেতা হয়েছেন তিতাস জিয়া। পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ এবং সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী অপর্ণা। খলচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা মামুনুর রশীদ।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের গতকালের এক প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। একটি চলচ্চিত্রের এতগুলো শাখায় পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে মৃত্তিকা মায়া চলচ্চিত্রটির পরিচালক গাজী রাকায়েত বলেন, ‘এটাই আমার প্রথম ফিচার ফিল্ম। পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে ছবিটি আবার নতুন করে জন্ম নিল। আশা করি, এবার মানুষ ছবিটি আবারও দেখবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারেও একাধিক বিভাগে পুরস্কার জিতেছিল গাজী রাকায়েতের মৃত্তিকা মায়া।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩-এর জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান ও এফডিসির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হারুন-অর-রশীদ জানান, এবার জমা পড়েছিল মোট ২৮টি চলচ্চিত্র। পুরস্কারের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গেলেও এবার জমা পড়া ছবিগুলোর মান বেশ ভালো ছিল।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়।