ঐশী এক্সপ্রেস এবং...

ঐশী ছবি: মনিরুল আলম
ঐশী ছবি: মনিরুল আলম

‘গান নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। অনেক ভাবনা। গান নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই বহুদূর। বন্ধুরা যখন আড্ডা আর খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত, তখন আমি ব্যস্ত গান নিয়ে।’ বললেন ফাতেমাতুজজোহরা। সবার কাছে তিনি পরিচিত ঐশী নামে।
বছর তিনেক আগে হৃদয় মিক্স থ্রি অ্যালবামের জন্য শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি। প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ঐশী। নানা ধাপ পেরোনোর পর সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। পরে এই আয়োজনের সেরা প্রতিযোগীদের নিয়ে তৈরি অ্যালবামে ‘দখিন হাওয়া’ শিরোনামে একটি গানে কণ্ঠ দেন। সেই থেকে শুরু।
গত তিন বছরে ঐশীর জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। নোয়াখালীর একটি স্কুলের ঐশী কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম একক গানের অ্যালবামও। নতুন করে কণ্ঠ দিয়েছেন বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া লোকগানে, গাইছেন মিশ্র অ্যালবাম আর চলচ্চিত্রের গান। টিভি অনুষ্ঠান ও স্টেজ শো নিয়েও তাঁকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সোমবার বিকেলে নতুন প্রজন্মের এই গায়িকা এলেন প্রথম আলো কার্যালয়ে। শুরুতেই ফটোসেশন। তারই ফাঁকে ঐশীর কথা।
শুরুতেই বললেন, ‘আমি সিনেমার গান গেয়েছি। প্রথম গান গেয়েছি কুমার বিশ্বজিতের সুর ও সংগীতে। এটা আমার জন্য বড় ঘটনা।’
চলচ্চিত্রের গানের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ঐশী বললেন, ‘চলচ্চিত্রের গানে অভিনয়শিল্পীর অভিব্যক্তির বিষয়টি মাথায় রেখে গান গাইতে হয়। অডিও অ্যালবামে তা একেবারে প্রযয়াজন নেই। চলচ্চিত্রে গাওয়ার ব্যাপারটা চ্যালেঞ্জিং হলেও কিন্তু আনন্দের।’
এ বছরের ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পেয়েছে ঐশীর প্রথম অ্যালবাম ঐশী এক্সপ্রেস। এই অ্যালবামের সবগুলো গানের কথা লিখেছেন রবিউল ইসলাম আর সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন ইমরান। ঐশী বললেন, ‘ঐশী এক্সপ্রেস আমার গানের বাহন। এই বাহনে করে আমি বিশ্বের সব গানের স্টেশন ঘুরে বেড়াব।’
ইদানীং মিশ্র অ্যালবামের গানে কণ্ঠ দিচ্ছেন ঐশী। জানালেন, এরই মধ্যে তিনটি অ্যালবামের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
মেডিকেলে ভর্তির জন্য ঐশীকে মাস ছয়েক ঢাকার মণিপুরিপাড়ার একটি ছাত্রীনিবাসে থাকতে হয়েছে। এটা জীবনের অন্যতম একটা অধ্যায়। ঐশী বললেন, ‘কঠিন জীবন। এই প্রথম মা-বাবা ছাড়া থাকতে হয়েছে। তবে নতুন কিছু বন্ধুর দেখা পেয়েছি।’
সপ্তাহ খানেক আগে ভর্তি হয়েছেন ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে। ঐশী বললেন, ‘গান আর চিকিৎসা পেশা—এই দুটো নিয়ে আমার সব স্বপ্ন। আমি স্বপ্ন পূরণের রাস্তা খুঁজে পেয়েছি। এখন দুটি পথ ভালোভাবে পাড়ি দিতে চাই। সেভাবেই আমার সব পরিকল্পনা করে ফেলেছি।’
এবার একটু পেছনে ফেরা যাক। গানের শুরুর গল্প শোনালেন এভাবে, ‘আমার মা (নাসিমা আক্তার) গান করতেন। বাবাও (আবদুল মান্নান) গানপাগল। তাঁদের চাওয়া আমি যেন সংগীতশিল্পী হই। মায়ের কাছে হাতেখড়ি। বাবার চাকরির সুবাদে আমার ছোটবেলা কেটেছে রংপুরে। ২০০০ সালে রংপুর শিশু একাডেমীতে গান শেখার শুরু। এরপর ২০০৩ সালে নোয়াখালী চলে যাই। সেখানে মুহাম্মদ শরীফ ও পরবর্তী সময়ে হাফিজ উদ্দীন বাহারের কাছে দীর্ঘদিন উচ্চাঙ্গ ও নজরুল সংগীতে তালিম নিয়েছি। এখনো শিখছি।’
কোন ধরনের গান আপনাকে বেশি টানে? ‘সব ধরনের গানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি। তবে সবাই বলে, লোকগান নাকি আমার কণ্ঠে দারুণ মানায়। আমার ইচ্ছা ফোক ও রক গানের মিশ্রণে কিছু করা। ইংরেজি গানও করব।’ বললেন ঐশী।