পালার নাম 'রক্তাক্ত প্রান্তর'

পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনের মাঝখানে তৈরি হয়েছে যাত্রামঞ্চ। চারদিকে দর্শক পরিবেষ্টিত এ মঞ্চে নানা বাদ্যসহযোগে উচ্চগ্রামে বেজে উঠল যাত্রার কনসার্ট। শুরু হলো যাত্রাপালা রক্তাক্ত প্রান্তর। পানিপথের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি কাহিনি। এক পাশে মুসলিম শিবির, অন্য পাশে মারাঠিদের কুঞ্জুরপুর দুর্গ। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবে যেকোনো সময়। দুই পক্ষেরই চলেছে যুদ্ধের প্রস্তুতি-পরিকল্পনা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী রেপার্টরি যাত্রা দল পরিবেশন করল মুনীর চৌধুরী রচিত ও সুলতান সেলিম নির্দেশিত যাত্রাপালা রক্তাক্ত প্রান্তর। শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা ও চলচ্চিত্রবিষয়ক বিভাগের ব্যবস্থাপনায় যাত্রাপালাটি পরিবেশিত হয়েছে।
রক্তাক্ত প্রান্তর পালাটিতে যুদ্ধরত একটি দলের নেতৃত্ব দেন কাবুলের অধিপতি আহমেদ শাহ আবদালি, রোহিলার নবাব নজীবুদ্দৌলা, অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং মেহেদী বেগকন্যা জোহরা বেগম। অন্যদিকে মারাঠিদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বালাজি রাও পেশোয়া, ত্রিশূল বাহিনীর রঘুনাথ রাও, সদাশিব রাও এবং ইব্রাহিম কুর্দি।
মুসলিম পক্ষের জোহরা বেগমের স্বামী হিন্দুদের পক্ষের সেনাপতি ইব্রাহিম কুর্দি। জোহরা বেগম বারবার ছদ্মবেশ ধারণ করে মারাঠি শিবিরে প্রবেশ করেন স্বামী ইব্রাহিম কুর্দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু ইব্রাহিম কুর্দি নিজ সিদ্ধান্তে অনড়। জোহরা বেগমকে গভীরভাবে ভালোবাসলেও আদর্শগত কারণেই ফিরে আসতে নারাজ তিনি। কারণ ইব্রাহিম কুর্দির যখন কোনো কর্মসংস্থান ছিল না, তখন হিন্দু মারাঠিই তাঁকে চাকরি দিয়েছেন এবং পদোন্নতি দিয়ে সেনাপতি বানিয়েছেন। অতএব, মারাঠিদের বিপদের দিনে তাঁদের ফেলে তিনি চলে আসবেন না।
রক্তাক্ত প্রান্তর-এ অভিনয় করেছেন মিলন কান্তি দে, শির্মমালা, জাফরুল স্বপন, শিশির রহমান, গাজী বেলায়েত, বনশ্রী অধিকারী, সুনীল কুমার দে, মো. আবুল কালাম আজাদ এবং এ বি এম কুদরত কমল।