বাংলাদেশ সফর দারুণ ছিল: সালমান খান

>সালমান খান রোমান্স, অ্যাকশন আর ভরপুর বিনোদন নিয়ে আবার আসতে চলেছেন দাবাং থ্রি ছবিতে। প্রভু দেবা পরিচালিত এই ছবিতে তাঁকে অষ্টাদশী সাই মঞ্জরেকরের সঙ্গে দেখা যাবে। মুম্বাইয়ের মেহেবুব স্টুডিওতে এক আড্ডায় বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য। এই আড্ডায় উঠে এল তাঁর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথাও।
সালমান খান
সালমান খান

দেবারতি ভট্টাচার্য: এবার নবাগতা সাই মঞ্জরেকরের সঙ্গে রোমান্স করলেন। আবার তরুণ সালমানকে দেখা যাবে। কেমন লাগল?
সালমান খান: (স্মিত হেসে) দাবাং থ্রি ছবিতে দেখানো হয়েছে আমার অভিনীত ‘চুলবুল পান্ডে’ চরিত্রটি কোথা থেকে এসেছে। তাই একটা অতীত পরিভ্রমণের ব্যাপার আছে এই ছবিতে। চুলবুলের অতীতকে দেখাতে গিয়ে এই রোমান্স দেখানো হয়েছে।
দেবারতি: এখনো কলেজপড়ুয়ার চরিত্রে কি আপনি স্বচ্ছন্দ?
সালমান: কলেজপড়ুয়া হিসেবে আর নয়। তবে কলেজ থেকে পাস করে বেরিয়েছি, এমন চরিত্রে অভিনয় করতে পারি। আসলে আমি নিজেকে যে ধরনের চরিত্রে দেখতে পছন্দ করি, সে ধরনের চরিত্রেই আমি অভিনয় করি। আমার ভক্তরাও তা–ই চান।
দেবারতি: ‘দাবাং’–এর তৃতীয় ছবি আবার আনলেন। এমন সফল সিরিজের সিক্যুয়েল বানানো কি নিরাপদ বলে মনে করেন?
সালমান: দাবাং থ্রি সিক্যুয়েলের থেকে অনেক বেশি প্রিক্যুয়েল। বলা যায়, এটা একটা অন্য ছবি।
দেবারতি: ওয়ান্টেড ছবির পরিচালক ছিলেন প্রভু দেবা। ১০ বছর পর আবার তাঁর পরিচালনায় কাজ করলেন। কতটা বদলেছেন তিনি?
সালমান: কোনো বদল পাইনি। তিনি একই রকম আছেন। একই রকম নাচ করেন। পরিচালক হিসেবেও তাঁর মধ্যে কোনো বদল আসেনি। আজও একই রকমভাবে ‘ইয়েস স্যার’ এবং ‘নো স্যার’-এর বাইরে কিছু বলেন না। শটের আগে নিজে অভিনয় করে দেখান। আর শটের পর বলেন, ‘ওয়ান মোর শট প্লিজ।’ প্রভু স্যারকে সন্তুষ্ট করা মুশকিল।
দেবারতি: পরিচালকের কতটা বাধ্য আপনি?
সালমান: এটা নির্ভর করে পরিচালকের ওপর। কিছু পরিচালকের বাধ্য নিশ্চয়। তবে আমি নাম নিতে পারব না।
দেবারতি: নবাগত সাইকে এই ছবিতে নেওয়ার কারণ কী?
সালমান: চরিত্রের জন্য সাইকে প্রয়োজন ছিল। সাইকে আমি ওর ছোটবেলা থেকে দেখছি। ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার সব গুণ ওর মধ্যে ছিল। আমি জানতাম বড় হয়ে ও নায়িকাই হবে। আর সাই নায়িকা না হলে ইন্ডাস্ট্রিও একজন ভালো অভিনেত্রী পেত না।
দেবারতি: হিন্দি ছবির আইটেম গানের বিরুদ্ধে এখন অনেকেই সরব। অনেকের বক্তব্য, এই ধরনের গান সমাজে বিপদ ডেকে আনছে। দাবাং থ্রি ছবিতে আইটেম গান ‘মুন্না বদনাম হুই’ নিয়ে আপনি কী বলতে চান?
সালমান: ‘আইটেম’ শব্দটি আমরা কখনোই দিইনি। এই ধরনের শব্দের প্রয়োগ মিডিয়াই করেছে। আমরা কখনোই মেয়েদের ‘আইটেম’ হিসেবে দেখাতে চাইনি। আর এই ‘আইটেম’ শব্দটির অপব্যবহার আমরা কেন করি? আমি আমার ছবির সংলাপ থেকে শুরু করে সব বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকি। তা সত্ত্বেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি।
দেবারতি: বিনোদ খান্নাকে এই ছবিতে কতটা মিস করবেন?
সালমান: বিনোদ খান্না আমাকে খুব ভালোবাসতেন। শুধু দাবাং ছবিতে নয়, আমি তাঁকে এমনিতেই মিস করি। তাঁর ভাই প্রমোদ খান্না দাবাং থ্রি-তে আছেন। বিনোদ স্যারের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের খুব মিল। এমনকি প্রমোদ স্যারকে অনেকে বিনোদ স্যার বলে ভুল করতে পারেন। পিকের (প্রমোদ খান্না) সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ।
দেবারতি: শুনেছি এই ছবিতে মারদাঙ্গা সব অ্যাকশন আছে। এর জন্য কি আলাদা কিছু করতে হয়েছে?
সালমান: এখনো অ্যাকশন আর রোমান্স ভালোই করতে পারি। এর জন্য আমাকে আলাদা কিছু করতে হয় না।
দেবারতি: বাবা সেলিম খানের মতামত আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। দাবাং থ্রি নিয়ে তাঁর কী মন্তব্য?
সালমান: আমার মা–বাবা দুজনেই পুরো ছবিটা দেখেছেন। তাঁরা হলেন সেন্সর বোর্ড আর সুপ্রিম কোর্ট। তাঁরা আমার এই ছবিকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। এরপর আর চিন্তা কীসের?
দেবারতি: দীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাটানোর পর আজও বক্স অফিস রিপোর্ট আপনাকে কতটা চিন্তিত করে?
সালমান: দাবাং থ্রির গল্প আমি লিখেছি। ভাগ্যই জানে যে বক্স অফিসের ফলাফল কী হবে। আর যা হবে তার খবর আপনারা পেয়ে যাবেন। সমালোচকদের ওপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।
দেবারতি: ঈদ মানেই ভাইজানের ছবি। কিন্তু আগামী ঈদে তো আপনার রাধে ছবির সঙ্গে অক্ষয় কুমারের লক্ষ্মী বোম্ব মুক্তি পাচ্ছে।
সালমান: ঈদের দিন মানেই ভাইজানের ছবি—এর কোনো মানে নেই। আমি খুব খুশি যে একই দিনে দুটো ছবি মুক্তি পাচ্ছে। যেকোনো উৎসবেই যে কারোর ছবি মুক্তি পেতে পারে। আমি সবাইকে আহ্বান জানাতে চাই।
দেবারতি: তিন দশক ধরে বলিউডে শাসন করে আসছেন। এর রহস্য কী?
সালমান: আমি কখনো নিজেকে সুপারস্টার ভাবি না। সময় ভালো বলে আমার ছবি চলছে। এখন খুব পরিশ্রম করছি। তবে সময় খারাপ এলে এর থেকে ১০ গুণ বেশি পরিশ্রম করতে হবে। আগে সিনিয়রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা ছিল। তখন ভাবতাম, খুবই কঠিন। আজ জুনিয়রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছি। এখন ১০ গুণ বেশি কঠিন চ্যালেঞ্জ।
দেবারতি: শেষ প্রশ্ন, সম্প্রতি বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও আপনার সাক্ষাৎ হয়েছিল। কী রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন?
সালমান: অসম্ভব সুন্দর অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশ সফর দারুণ ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত বিনয়ী, মহান এবং অসম্ভব ব্যক্তিত্বময়ী। আর সব থেকে বড় কথা, তিনি শুধু আমাদের নয়, সবাইকেই সম্মান দিয়ে কথা বলেন। তিনি সবার সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি একজন সংস্কৃতিমনস্ক ব্যক্তি।