বসন্ত উৎসব নয়, তবে শিল্পীদের পোশাকে ছিল বসন্ত। লোকগানের অনুষ্ঠানের মঞ্চসজ্জায় ছিল লোকজ গামছা ও একতারা। ফাল্গুনের প্রথম সন্ধ্যায় নির্বাচিত পাঁচ গীতিকবির গান নিয়ে ছায়ানট আয়োজন করেছিল তাদের বার্ষিক লোকসংগীতানুষ্ঠান। প্রতিবছরের মাঘ মাসে এ আয়োজন হলেও এবার করা হলো ফাল্গুনে। গতকাল সন্ধ্যার এ আয়োজনে গাওয়া হয় কাঙাল দীনহীন, আরকুম শাহ্, শমসের আলী, এ কে এম আবদুল আজিজ, সিরাজুল ইসলামের লেখা বেশ কয়েকটি গান। এগুলোর মধ্যে ছিল ‘পন্থ ছাড় যমুনাতে যাই’, ‘ওই দূরে বাজে একতারা’, ‘মুর্শিদ তোমায় ডাকি আমি’, ‘নবী মোর পরশমণি’ গানগুলো।
সন্ধ্যায় ছিল ছায়ানটের শিশু বিভাগের পরীক্ষা। লোকসংগীতানুষ্ঠান শুরুর পর মূল মিলনায়তন ও এর আশপাশ তাই শিশু ও তাদের অভিভাবকদের পদচারণে মুখর ছিল। পরীক্ষা শেষ করে তারা মিলনায়তনে গান শুনতে ঢুকেছিল। গানের ফাঁকে ফাঁকে উপস্থাপক গীতিকবিদের পরিচয়, কীর্তি ও তাঁদের লোকপ্রিয় গানগুলোর কথা শ্রোতাদের জানিয়ে দেন। অনুষ্ঠান শেষ হয় জাতীয় সংগীত দিয়ে।
একক ও সম্মিলিত কণ্ঠে ছায়ানটের সংগীত বিদ্যায়তনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে গান করেন আবুল কালাম আজাদ, নারায়ণ চন্দ্র শীল, স্বপ্না রায়, সঞ্চিতা বর্মণ, মো. খায়রুল ইসলাম, এরফান হোসেন, নাদিরা বেগম, সরদার মো. রহমাতুল্লা ও মোখলেসুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে এ আয়োজন নিয়ে কয়েকটি কথা বলেন শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল।
‘বেদুইন শমসের’ পুরোনো বই নতুন করে
প্রকৃত নাম শমসের আলী হলেও ঔপন্যাসিক ‘বেদুইন শমসের’ ছদ্মনামে সাহিত্যচর্চা করতেন বলে এ নামেই বহুল পরিচিত। ফরিদপুরের তাঁর জন্মন্থান। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরে। লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে শমসের আলী প্রথমে পুলিশ বিভাগে চাকরি করেন। পরে চাকরি ছেড়ে তিনি আইন ব্যবসায় নিয়োজিত হন এবং ঢাকা বারের সঙ্গে যুক্ত হন। আইন ব্যবসার অবসরে তিনি সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন এবং উপন্যাস রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন।
তাঁর রচিত কিছু কাব্যগ্রন্থের পুনর্মুদ্রণ করেছেন তাঁর সন্তানেরা। গতকাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের মিলনায়তনে বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লেখকের মেয়ে ডালিয়া নিলুফার, শাম্মী ইয়াসমিন, জেসমিন নাহিদ ও ছেলে ফেরদৌস আলম।