‘অসহায়তার দৃশ্যে তিনি অনবদ্য’
সুমন বাবা হতে অক্ষম, কিন্তু এটা সে মানতে নারাজ। ফলে সুমন ও শুভ্রার সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে। একটা সময় আলাদা হয়ে যায় তারা। এরপর সুমনের জীবনে আসে বাংলাদেশি গায়িকা মেঘনা। তার স্বামী মারা গেছে। মেঘনাকে নিয়ে নতুন সংসার পাতে সুমন। মোটাদাগে এটাই কৌশিক গাঙ্গুলীর সিনেমা ‘অর্ধাঙ্গিনী’র গল্প।
গত শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। এতে মেঘনা মুস্তাফি চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। মুক্তির পর সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে ‘অর্ধাঙ্গিনী’। পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম ছবির প্রধান দুই অভিনেত্রী চূর্ণী গাঙ্গুলী ও জয়া আহসানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
আনন্দবাজারের প্রিন্ট সংস্করণে ছাপা হয়েছে ‘দুই নারী, হাতে তরবারি’ শিরোনামে রিভিউ। সমালোচকেরা ছবিটিকে দশে সাত দিয়েছেন। অভিনয় প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘জয়ার চরিত্রটি চূর্ণীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গিয়েছে সমানে। বিপদে দিশাহারা, আবার লেজে পা পড়তেই ফোঁস করে ওঠা মেঘনাকে পর্দায় বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জয়া।’
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে লেখা আলাদা সমালোচনায় বলা হয়েছে, ‘“অর্ধাঙ্গিনী” যতটা চূর্ণীর, ঠিক ততটাই জয়ার। সাধারণত স্ত্রীকে স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী বলা হয়, কিন্তু এই ছবিতে শব্দটির ভিন্ন অর্থ খুঁজতে চেয়েছেন পরিচালক। দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন চূর্ণী। জয়ার চরিত্রটি যেভাবে লেখা হয়েছে, তাতে অসহায়তার দৃশ্যে তিনি অনবদ্য।’
কলকাতার আরেক দৈনিক এই সময় ছবিটিতে অভিনেত্রীদের অভিনয় প্রসঙ্গে লিখেছে, ‘ছবিতে জয়া ও চূর্ণী টান টান অভিনয় করেছেন। একজন অসহায় মেয়ের চরিত্রে জয়ার অভিনয় অনবদ্য।’
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায় লেখা হয়েছে, ‘জয়া আর চূর্ণীকে নিয়ে সত্যি কথা বলার কিছু নেই। প্রতিটা এক্সপ্রেশন, সিন ভীষণই নিখুঁত করে ফুটিয়েছেন তাঁরা। একদিকে জয়া যেমন চূর্ণীর থেকে সাহায্য চাইছেন, লাঞ্ছিত হচ্ছেন, তেমনই ভুল ধরা পড়লে বদলে যেতে পিছপা হচ্ছেন না। অন্যদিকে সম্পর্ক ছেড়ে এলেও নিজের সংসার অন্য কাউকে তুলে দিতে, গুছিয়ে দিতে যেমন সাহায্য করছেন চূর্ণী, তেমনই তাঁকে কথা শোনাতে আবার ভালোবেসে কাছে টেনে নিতেও রেয়াত করছেন না।’
পশ্চিমবঙ্গের আরেক দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, ‘চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় বোধ হয় তাঁর জীবনের সেরা অভিনয়টা করেছেন। আসলে তাঁকে যেভাবে এমনি কথা বলতে দেখেছি, পর্দাতেও সেটাই দেখলাম। চূর্ণী শুধু বিহেভ করেছেন এবং সেটা এতটাই পাওয়ারফুল যে দম বন্ধ লাগে। এই ছবির অনেকটাই তাঁর দিকে ঝুঁকে।
‘জয়া আহসানের কাজটা আরও অনেক কঠিন ছিল। হাততালি দেওয়া সংলাপ তাঁর জন্য বরাদ্দ নেই সংগত কারণেই। না হলে আপাতদৃষ্টে নরম এবং ভালনারেবল স্বভাবের মেঘনার বিপরীতে দৃঢ় এবং সংযত শুভ্রার চারিত্রিক কনট্রাস্ট তৈরি করা যেত না। অচেনা শহরে নিরুপায়, অসহায় মেঘনা, যাকে দাঁতে দাঁত চেপে সবটা সহ্য করে যেতে হবে—মুখের মধ্যে সারল্য ফুটিয়ে সেই অভিনয়ে জয়া দুর্দান্ত।’