স্মরণীয় সন্ধ্যা উপহার দিতে প্রস্তুত তারকারা

এত খুশি কেন আফরান নিশো ও সাবিলা নূর! প্রথম আলো
আজ বিকেলে বসছে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ২৪তম আসর। লালগালিচায় হেঁটে ঝলমলে মঞ্চে যাবেন দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। আমন্ত্রিত অতিথিদের একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা উপহার দিতে প্রস্তুত তারকারা। গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত সেসবের জন্য নানা রকম প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। মহড়ার ফাঁকে নিজেদের মধ্যে নানা খুনসুটিতে মেতেছিলেন তাঁরা। সেসব আনন্দের কিছুটা ভাগ করে নেওয়া যাক পাঠকদের সঙ্গেও।
দিব্য ও সৌম্য। প্রথম আলো

‘আমাদের কোনো শাখা নেই’
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি ও নাট্যকার বৃন্দাবন দাসে যমজ সন্তান দিব্য ও সৌম্য। অভিনয়ের গুণে তাঁরাও যেন তারকা হয়ে উঠছেন। দুজনই নাটক, ওটিটি ও সিনেমাতে হাত পাকাচ্ছেন। যমজ হওয়ার কারণে এই দুই ভাইয়ের কে কোনজন, তা নিয়ে প্রায়ই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যান সাধারণ দর্শকেরা। এমনকি কাছের মানুষও। একই চেহারার পাশাপাশি চুলের কাটিং থেকে শুরু করে একই রঙের, ঢঙের পোশাক পরিধান করেন তাঁরা। গত বুধবার রাতে রাজধানীর নিকেতনে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের মহড়াকক্ষে দেখা গেল এই দুই ভাইকে। অভিনেতা, নির্দেশক তারিক আনাম খান কী যেন বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। দুই ভাই নিজেদের মধ্যে সলাপরামর্শ করছিলেন। পাশেই দাঁড়ানো একজন এসে দুই ভাইকে বললেন, ‘ভাই, আপনাদের ফেসবুক আইডিটা বলবেন।’

আরও পড়ুন

দুই ভাই একসঙ্গে বলে উঠলেন, ‘আমরা ফেসবুক ব্যবহার করি না। ইচ্ছা করে না।’ শুনে লোকটি অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, ‘কেন নেই? এটি কি সম্ভব?’ তাঁর কথা শুনে দিব্য ও সৌম্য দুজনই মজা করে বললেন, ‘সত্যিই ভাই, আমাদের ফেসবুক আইডি নেই। বলতে পারেন, আমাদের কোনো শাখা নেই।’ পাশে বসা মা শাহনাজ খুশিসহ উপস্থিত সবাই হেসে উঠলেন।

জ্বর নিয়েও মহড়াকক্ষে মেহজাবীন
মেরিল-প্রথম আলো তারকা জরিপ অনুষ্ঠানে প্রতিবারই কোনো না কোনো আয়োজনে অংশ নিয়ে মঞ্চে আলো ছড়ান মেহজাবীন। এবারও ব্যতিক্রম নয়। সবার আগেই মহড়ায় নেমেছেন এই অভিনেত্রী। মঙ্গলবারের ঘটনা। মহড়াকক্ষে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ব্যস্ত নৃত্য পরিচালক সোহাগ।

মেহজাবীন ও সাবিলা। প্রথম আলো

কিন্তু মূল শিল্পী মেহজাবীনের খোঁজ নেই। ঘটনা কী? সোহাগের কাছ থেকে জানা গেল, মেহজাবীনের জ্বর। আলাদা কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছেন। গিয়ে দেখা গেল, আরেকটি মহড়াকক্ষের এক কোণে চুপচাপ বসে আছেন মেহজাবীন। বললেন, ‘গতকাল রাত থেকেই জ্বর জ্বর ভাব মনে হচ্ছিল। ভাবছিলাম ঠিক হয়ে যাবে। এখন মনে হচ্ছে বেড়ে যাচ্ছে। কী যে হবে অনুষ্ঠানের দিন!’

‘সজল ভাই কী ভিটামিন খান’
ঘড়িতে সময় সন্ধ্যা ৭টা। মহড়াকক্ষে ঢুকতেই দেখা গেল সজল ও দীঘিকে। চারপাশে নাচের ছেলেমেয়েরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন। ফ্লোরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে তাঁরা দুজন কী নিয়ে যেন পরামর্শ করছেন। কী নিয়ে আলাপ চলছে? কাছে গিয়ে জানতে চাইলে দীঘি হেসে হেসে বললেন, ‘সেই ছোটবেলা থেকেই সজল ভাইকে একই রকম দেখে আসছি। আমি কত বড় হয়ে গেলাম। কিন্তু সজল ভাইকে আগে যা দেখেছি, তেমনই আছেন। এ জন্য তাঁকে চুপিসারে জিজ্ঞাসা করছিলাম, তিনি কী ভিটামিন খান? আমারও লাগবে। হা হা হা...।’ দীঘির এ কথা শুনে সজলও হেসে দিলেন। তিনিও বলতে কম গেলেন না। দীঘিকে বললেন, ‘রাতে ফোন দিয়ো, ভিটামিনের নাম বলে দেব। হা হা হা...।’

দীঘি ও সজল। প্রথম আলো

এর আগেও সজলকে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠতে দেখা গেছে। আগে শিশুশিল্পী হিসেবে অংশ নিলেও বড় হওয়ার পর এবারই প্রথম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে পারফরম্যান্স করতে প্রথম মঞ্চে উঠবেন দীঘি। এ জন্য তাঁর আগ্রহটা একটু বেশিই। মহড়াকক্ষে সজলকে বিশ্রাম নিতে দিচ্ছিলেন না দীঘি। ততক্ষণে দুবার মহড়া শেষ। সজল বসে বসে ফেসবুকে কী যেন দেখছিলেন আর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। দীঘি এসে আচমকা সজলের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিলেন। বললেন, ‘কোনো বিশ্রাম হবে না। চলেন চলেন, কাজ শেষ করি। ভালো করে কাজটি তুলতে না পারলে অনুষ্ঠানের দিন দর্শকের তালি পাবেন না। আমাদের পচাবে। হা হা হা...।’ সজল মুচকি হেসে উঠে মহড়ায় দাঁড়ানোর জন্য হাঁটা শুরু করলেন।

নিশো বললেন ১০ মিনিট, সাবিলা ৩০ মিনিট
রাত ৯টার দিকে মহড়াকক্ষে বসে আছেন সাবিলা। কিন্তু আফরান নিশোর কোনো খোঁজ নেই। কিছুক্ষণ পরপর সাবিলা বলতে শুরু করলেন, ‘আর কতক্ষণ অপেক্ষা করব? নিশো ভাই তো আসে না। বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই ফোন দিয়েছিলাম। পৌঁছে যাওয়ার কথা বলল। কিন্তু আসে না তো।’

মঞ্চে মহড়া
কবির হোসেন

সাবিলার অস্থিরতা দেখে আয়োজকদের একজন নিশোকে ফোন দিলেন। প্রথমবার ধরলেন না। দ্বিতীয়বারে ফোন ধরে নিশো ওপাশ থেকে জানালেন, ১০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন। এ কথা শুনে হাসতে হাসতে সাবিলা বললেন, ‘তাহলে আরও ৩০ মিনিট। কী আর করার, ততক্ষণে বসে বসে অন্যদের মহড়া দেখি।’

সাবিলার কথা ঠিক না হলেও কাছাকাছি সময়ের মধ্যে নিশো এসে হাজির। নিশোকে দেখে সাবিলার ভার করা মুখে যেন মৃদ হাসি। ওদিকে এসেই সেই স্বভাবসুলভ রসিকতা নিশোর। হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘এবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে আমাকে যা করা লাগছে, জীবনেও করিনি। যদি মঞ্চে ভুলে যাই, তাহলে সবার সমানেই মঞ্চ থেকে দৌড়ে পালাব কিন্তু। আর সব দোষ থাকবে নৃত্য পরিচালক সোহাগ ভাইয়ের।’ এরপর সোহাগের হাঁকডাক শুরু হলো, নাচের ছেলেমেয়েরা সবাই উঠে দাঁড়িয়ে গেলেন মহড়াকক্ষের ফ্লোরে।