আসাদুজ্জামান নূর ও মমতাজের পর এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়বেন ফেরদৌস

আসাদুজ্জামান নূর, মমতাজ বেগম ও ফেরদৌস আহমেদকোলাজ

তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী দৌড়ে শামিল হন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক ও সংগীতাঙ্গনের বেশ কয়েকজন তারকা। এর আগে কোনো নির্বাচন নিয়ে তারকাদের এমন আগ্রহ দেখা যায়নি। রাজধানী ঢাকারনির্বাচনী আসন–১০ ও ১৮ থেকে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ যেমন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন, তেমনি বাগেরহাট-৩ থেকে নিয়েছিলেন আরেক নায়ক শাকিল খান। নতুন প্রজন্মের তারকারাও পিছিয়ে ছিলেন না। বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা মাহিয়া মাহিও দিনাজপুর থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন।

এ ছাড়া বরিশাল–৩ থেকে চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেল, ফেনী–৩ থেকে অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী ও শমী কায়সার, ঢাকা–৮ থেকে গায়ক এস ডি রুবেল, ঝিনাইদহ-১ থেকে চিত্রনায়িকা শিমলা এবং ঢাকা–১৭ ও টাঙ্গাইল-১ থেকে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। শেষ পর্যন্ত নতুনদের মধ্যে নৌকার হয়ে ঢাকা–১০ আসন থেকে নির্বাচনে লড়ার অনুমতি পেয়েছেন একমাত্র চিত্রনায়ক ফেরদৌস।

চিত্রনায়ক ফেরদৌস
ছবি : প্রথম আলো

ঢাকার দুটি আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। টাঙ্গাইল ও ঢাকার একটি আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। এর আগে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন অভিনয়শিল্পী আসাদুজ্জামান নূর ও লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ। অন্য সময়ের মতো এবারও যথাক্রমে নীলফামারী–২ এবং মানিকগঞ্জ–২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারকাদের মনোনয়ন–দৌড়ে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক ও সংগীতজগতের ৯ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এই ৯ জনের ৫ জনই চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী। বাকিদের মধ্যে তিনজন টেলিভিশন নাটকের এবং একজন সংগীতাঙ্গনের।

আসাদুজ্জামান নূর
ছবি : প্রথম আলো

এখানে উল্লেখ করা দরকার, ফেরদৌস ছাড়া মনোনয়ন পাওয়া বিনোদন অঙ্গনের অন্য দুজন হলেন আসাদুজ্জামান নূর ও মমতাজ, তাঁরা আগেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন আসাদুজ্জামান নূর। অন্যদিকে ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন মমতাজ বেগম। আর ২০১৪ সাল থেকে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মমতাজ।এবার তাঁদের সঙ্গে নতুন তারকা হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ফেরদৌস।

মমতাজ বেগম
ছবি : প্রথম আলো

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর তারকারা শুটিং, রেকর্ডিংসহ অন্য কাজ থেকে ছুটি নিয়ে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তবে সবারই একটাই বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চূড়ান্ত মনোনয়ন দেন, তাহলে বড় পরিসরে কাজ করবেন। যদি না–ও পান, তাহলেও সেই আসনে যাঁরা মনোনয়ন পাবেন, তাঁদের জন্য কাজ করবেন।

‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে অভিনয় শুরু চিত্রনায়ক ফেরদৌসের। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবি তাঁকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। ২৫ বছর আগে চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর বাংলাদেশ ও ভারতের ছবিতে তিনি সমান্তরালভাবে কাজ করেছেন। কয়েক বছর ধরে চলচ্চিত্রে তাঁর ব্যস্ততা কম। সম্প্রতি তাঁকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নির্বাচনে জনসংযোগে তাঁকে সরব দেখা গেছে।

ফেরদৌস আহমেদ
ছবি : প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের হয়ে ঢাকা–১০ আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়ে ভীষণ আনন্দিত ফেরদৌস। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, ‘অনেক বড় দায়িত্ব। আমার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এই আস্থা ও বিশ্বাস রক্ষার জন্য সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব।’

ফেরদৌস বলেন, ‘আস্তে আস্তে ভোটের কার্যক্রম শুরু করব। চেষ্টা করব সবার কাছে যাওয়ার। সবার সহযোগিতা চাই। এবার নির্বাচন উপলক্ষে ৩ হাজার ৩৫৯ জন মনোনয়ন নিয়েছেন। সেই হিসাবে একটা আসনে ১১ থেকে ১২ জন করে আছেন। প্রত্যেকেই যোগ্য, আমার চেয়ে অনেক বেশি যোগ্য। আমার চেয়ে ত্যাগী নেতাও আছেন। সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্বাচন করেছেন, সারা জীবনের অন্যতম একটা শ্রেষ্ঠ পাওয়া।’