আবদুর রহমান ভালো নেই

রূপসজ্জাশিল্পী আবদুর রহমান
রূপসজ্জাশিল্পী আবদুর রহমান

রূপসজ্জাশিল্পী আবদুর রহমান খুব অসুস্থ।
দেশে শিল্পীদের মধ্যে সুমিতা দেবী থেকে শুরু করে আনোয়ার হোসেন, রাজ্জাক, কবরী, শাবানা, আলমগীর, ববিতা, জাফর ইকবাল, ফারুক, ফেরদৌস, রিয়াজ, শাবনূর, মৌসুমী, পূর্ণিমা—এমন কেউ নেই, যাঁদের রূপসৌন্দর্য পর্দায় সুন্দরভাবে উপস্থাপনের কাজ করেননি তিনি। দেশের বাইরের শিল্পীর মধ্যে শাবানা আজমী, প্রসেনজিৎ, এখনকার পরমব্রতসহ আরও অনেকেই আছেন এই তালিকায়। ৫২ বছর ধরে মঞ্চ, টেলিভিশন আর সিনেমার পর্দায় যিনি নিরলসভাবে দেশের ও দেশের বাইরের শিল্পীদের রূপসজ্জার মাধ্যমে পর্দায় আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরেছেন, সেই আবদুর রহমান এখন অসুস্থ হয়ে অর্থাভাবে অন্যের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।
দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই রূপসজ্জাশিল্পীর এখন ঠাঁই হয়েছে ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডার দারোগা বাড়ি মোড় এলাকার একটি বাড়ির দোতলায়। সেখানে দীর্ঘদিনের পরিচিত আলী আহসান নামের একজন পরিচালক তাঁর দেখাশোনার সাময়িক দায়িত্ব নিয়েছেন। নিজের বাসায় থাকার ব্যবস্থা করেছেন।
এ বছরের ২ জানুয়ারি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আবদুর রহমান। পরে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায়, তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বার্ধক্যজনিত রোগেও ভুগছেন। পরিচিতজনেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দিলেও টাকার অভাবে সম্ভব হয়নি বলে জানান আবদুর রহমান।
গত সোমবার বিকেলে আবদুর রহমানের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো তাঁর সব কথা বোঝা যাচ্ছিল না। পাশে থাকা মনজুর আলম (আলী আহসানের ছোট ভাই, পেশায় ভিডিও এডিটর) বললেন, ‘তাঁর এখন উন্নত চিকিৎসা দরকার। শরীরের বাঁ পাশটা কিছুটা অচল হয়ে গেছে। এখন তাঁর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। ভাইয়ার সঙ্গে তাঁর অনেক দিনের যোগাযোগ, সে কারণে তাঁকে আমাদের বাসায় এনে রাখা হয়েছে। রামপুরার বনশ্রীতে যে বাড়িতে রহমান ভাই ভাড়া থাকতেন, সেটি ছেড়ে দিতে হয়েছে। তিনি যেহেতু বিয়ে করেননি, তাই তাঁকে দেখার মতো কেউ নেই।’
১৯৪৬ সালে ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুর রহমান। ঢাকার বিক্রমপুরের বাসিন্দা আবদুর রহমান ১৯৬৪ সালে রূপসজ্জাশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ডব্লিউ ডি সিদ্দিকীর মিলাদ সিনেমায় তিনি প্রথম রূপসজ্জা করেন সুমিতা দেবীর। এরপর ১০ বছর সিনেমার কাজ করেননি। ১৯৬২ সাল থেকে মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে রূপসজ্জাশিল্পীর কাজ শুরু করেন। ১৯৭৪ সাল থেকে আবার সিনেমায় কাজ শুরু করেন। গৌতম ঘোষের মনের মানুষ ও মাসুদ পথিকের নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এই রূপসজ্জাশিল্পী। সর্বশেষ কাজ করেন ভুবনমাঝি ছবির জন্য।