একপ্রস্থ নাবিলা

নাবিলা
নাবিলা

উপস্থাপনা দিয়েই নাবিলা টেলিভিশনের পর্দায় আসেন। ২০০৫ সালের শেষের দিকে বাংলাভিশনে ‘এবং ক্লাসের বাইরে’ অনুষ্ঠান দিয়ে টিভি পর্দায় আগমন। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে আট বছর। স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে নির্মিত অনুষ্ঠান উপস্থাপনা শুরু করে সময়ের পরিক্রমায় টেলিভিশনে গানের অনুষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের স্টেজ শো আর বিপিএলের মতো বড় আসরের ইভেন্ট উপস্থাপনা করে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করে গেছেন। সম্প্রতি এই উপস্থাপিকা বিজ্ঞাপনচিত্রেরও মডেল হয়েছেন। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে তাঁর তিনটি বিজ্ঞাপনচিত্র। নাবিলা তাঁর এই নতুন পরিচিতিটা বেশ উপভোগও করছেন। বললেন, ‘আট বছর ধরেই আমি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছি। একই ধরনের কাজ করতে করতে একঘেয়েমি ভর করেছিল। ভাবলাম নতুন কিছু করার কথা। তখনই বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের প্রস্তাব পাই। বিজ্ঞাপনচিত্রগুলো প্রচারের পর অনেকেই প্রশংসা করেছেন। তবে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। সামনে আরও ভালো মানের বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করতে চাই।’
উপস্থাপনার পর মডেলিংয়ে নাম লেখালেন। সামনে কি অভিনয় করার ইচ্ছে রয়েছে? নাবিলা বললেন, ‘আমি কখনোই টিভি নাটকে অভিনয় করতে চাই না। তবে সিনেমায় কাজ করতে চাই। সেটা প্রধান চরিত্রে হতে হবে, তেমন নয়। আমি এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যেটি প্রধান চরিত্র না হলেও সিনেমায় চরিত্রটির গুরুত্ব থাকবে। এটাও ঠিক যে সিনেমায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে নেই।’
দাদার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হলে নাবিলার বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। জন্মও সেখানেই। বাবার চাকরি সূত্রে কৈশোরের সবচেয়ে আনন্দময় দিনগুলো কেটেছে জেদ্দা শহরে। এসএসসির পর ২০০০ সালে স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসেন। ভর্তি হন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে। এখানে এসে কিছু নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁদের উৎসাহে একটা সময় উপস্থাপনা করার প্রতি আগ্রহ জন্মে। বাংলাভিশনের ‘এবং ক্লাসের বাইরে’ অনুষ্ঠান দিয়ে যাত্রা শুরু। এরপর শুধু এগিয়ে যাওয়া। নিজেকে প্রথম টিভিতে দেখার অনুভূতি জানাতে গিয়ে নাবিলা বলেন, ‘আমার উপস্থাপনায় প্রথম টিভি অনুষ্ঠানটি প্রচার হয় ৮ এপ্রিল। সেদিন ছিল আমার জন্মদিন। তাই বাড়তি আনন্দ ছিল। তবে উপস্থাপনা নিয়ে আমার চেয়ে আমার পরিবারের সবার উচ্ছ্বাসটা ছিল অনেক বেশি।’
সময় পেরিয়েছে। নাবিলার কাজের ক্ষেত্রও বিস্তৃত হয়েছে। এখন প্রায় অনেক টিভি চ্যানেলেই উপস্থাপনার কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। আর এ কাজটি করতে গিয়ে নিজের মতো করে অনুষ্ঠান নির্মাণের স্বপ্নও দেখছেন নাবিলা। জানালেন, উপস্থাপনার এ দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, সেটাকে পুঁজি করে ভিন্নধর্মী ও ভালো মানের অনুষ্ঠান উপহার দিতে চাই। তবে সেটা যেন অবশ্যই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয় হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে চাই।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন নাবিলা। তাঁর কয়েকজন বন্ধুবান্ধব আছেন, যাঁরা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান করেন তাঁরা। নাবিলা বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলের অবহেলিত মানুষগুলোর জন্য আমাদের সবারই কিছু করা উচিত। আমরা যদি এগিয়ে না আসি তো কারা আসবে? ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি, তাই এটাকে কাজে লাগাতে চাই।’