কান উৎসবে বোমা আতঙ্ক

প্যালে দো ফেস্তিভালের বাইরে লালগালিচা। ছবি: এএফপি
প্যালে দো ফেস্তিভালের বাইরে লালগালিচা। ছবি: এএফপি

প্রেস অফিসে বসে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে নিয়ে লিখছি। হাতে সময় খুব কম। খানিক আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে দেখি পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে পুলিশ! ফরাসি ভাষায় উত্তেজিত ভঙ্গিতে কিছু একটা বলছেন। বিশেষ কর্ণপাত করলাম না। যা বলে বলুক, আমার লেখা জলদি শেষ করা দরকার। ঐশ্বরিয়ার ‘মহা মূল্যবান’ ভিডিও তখন সবে অর্ধেক আপলোড হয়েছে। কিন্তু না, ঘটনা আদতেই জটিল। এক পুলিশের পেছনে ছুটতে ছুটতে আরও দুজন হুড়মুড় করে ঢুকলেন। একজন এসে অনুবাদ করে দিলেন—‘প্রেস অফিস খালি করতে হবে এখনই!’

অগত্যা কম্পিউটার চালু রেখেই হুড়মুড় করে বেরোতে হলো।
শনিবার বিকেলের ঘটনা এটা। প্রতিযোগিতা বিভাগের ‘রিডাউটেবল’ ছবির প্রেস স্ক্রিনিংয়ের ঠিক আগে আগে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যে একটা সন্দেহজনক পরিত্যক্ত ব্যাগ পাওয়া গেছে প্যালে দো ফেস্তিভালে। এর পরপরই তৎপর হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উৎসবস্থল থেকে তারা সবাইকে দ্রুত নিরাপদে বের করে আনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
পুলিশের কথামতো বেরিয়ে আসি প্রেস অফিস থেকে। বের হওয়ার পথে প্যালে দো ফেস্তিভালের মুখেই দেখি একটি কুকুর জিব বের করে বসে আছে। বোমা খোঁজা তাদের কাজ। তাই পুলিশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই আঁচ পাওয়া গেল যে এ বছরও কানে ছড়িয়েছে বোমা আতঙ্ক।
মিনিটের মধ্যে প্যালে দো ফেস্তিভালের ভেতরটা খালি হয়ে গেল। উৎসবস্থলের সামনের রাস্তাটা ভরে গেল মানুষে। কী হচ্ছে ভেতরে? কারও কাছে প্রশ্নের উত্তর নেই।
প্রায় ১০ মিনিট অস্থির হাঁটাহাঁটির পর মূল ফটকে অপেক্ষমাণ সবার কপাল খুলল। জানানো হলো, এবার ঢোকা যেতে পারে। নিরাপত্তাবিষয়ক কোনো শঙ্কা নেই।
কান উৎসবে এই বোমা আতঙ্ক এবারই প্রথম নয়। গত বছরও উৎসবের ১২ দিনে অন্তত তিনবার পাগলাঘণ্টা শুনে ছুটতে ছুটতে বের হতে হয়েছে কাজ ছেড়ে। ফ্রান্সে যে নিরাপত্তাসংকট চলছে, তার ছায়া কানেও যে পড়বে—এটাই তো স্বাভাবিক।