দক্ষিণ এশিয়ার শিল্পকলার অন্যতম আয়োজন

দক্ষিণ এশিয়ার শিল্পকলার এক বড় আকারের আয়োজন শুরু হচ্ছে কাল শুক্রবার থেকে। ‘ঢাকা আর্ট সামিট’ নামের তিন দিনের এ আয়োজন করেছে যৌথভাবে সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী। এ আয়োজনে দক্ষিণ এশীয় শিল্প উন্নয়ন, বাংলাদেশে জাদুঘর মানসম্পন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন এবং আন্তর্জাতিক শিল্প উন্নয়নের জন্য এ অঞ্চলের ২৫০ জনের বেশি শিল্পীর শিল্পকর্ম তুলে ধরা হবে। এ বছর দ্বিতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আর্ট সামিট। প্রথম বারের সামিট হয়েছিল ২০১২ সালে। এবার আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর শিল্পীদের উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম পরিবেশন করা হবে ঢাকা আর্ট সামিটে। এতে প্রধান সহযোগিতা দিয়েছে এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড ও গোল্ডেন ইনভেস্ট গ্রুপ। আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে।
ঢাকা আর্ট সামিট উপলক্ষে গত মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উদ্যোক্তারা সামিটের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, এবার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী জিতীশ কাল্লাত, রুনা ইসলাম, শিল্পা গুপ্ত, শাজিয়া সিকান্দার, রশীদ রানা ও নিখিল চোপড়ার শিল্পকর্ম ছাড়াও এ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে এ অঞ্চলের প্রতিভাবান উঠতি শিল্পীদের কাজ। এ ছাড়া এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় অংশ নেবেন বিশ্বখ্যাত টেট মডার্ন, ব্রিটিশ মিউজিয়াম, সেন্টার পম্পিডু এবং সলোমন আর গুগেনহাইম জাদুঘরের প্রতিনিধিসহ অন্যরা। তিন দিনব্যাপী এ শিল্প সম্মেলনে থাকছে একক কর্ম, সংরক্ষিত প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, পরিবেশনা, পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা ৩৩টি গ্যালারির উপস্থাপনা প্রভৃতি।
সংবাদ সম্মেলনে সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ডায়ানা ক্যাম্পবেল বেটানকোর্ট বলেন, সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন দক্ষিণ এশীয় প্রতিভাবান শিল্পীদের জন্য এ অঞ্চলের শিল্পের সঙ্গে বাকি বিশ্বের সংযোগ স্থাপনের একটি সুযোগ তৈরি করেছে।
এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার রাজনিশ কওল বলেন, ‘দক্ষিণ এশীয় শিল্পকলা ও শিল্পীদের কাছে বাংলাদেশকে
তুলে ধরার আন্তর্জাতিক এ রকম উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে এয়ারটেল গর্বিত। এ উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো একে অন্যের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার একটি বিশেষ সুযোগ লাভ করবে।’
সামিটের প্রদর্শনীগুলোর ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশনের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর, ডায়ানা ক্যাম্পবেল বেটানকোর্ট ও বৃত্ত আর্টস ট্রাস্টের শিল্পী মাহবুবুর রহমান। এ আয়োজনের সহযোগিতায় রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, গ্যেটে ইনস্টিটিউট, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, সুইস প্রো হেলভেশিয়া ও বৃত্ত আর্টস ট্রাস্ট।
দুই বাঙাল চিত্রীর প্রদর্শনী
আজ বৃহস্পতিবার থেকে ধানমন্ডির গ্যালারি-২১-এ যৌথভাবে শুরু হচ্ছে শিল্পী হাশেম খান ও মোহাম্মদ ইকবালের ‘দুই বাঙাল চিত্রীর প্রদর্শনী ঢাকা ও ওসাকা’ শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। গতকাল বুধবার সকালে গ্যালারিতে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন ও প্রেস প্রিভিউয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান, মোহাম্মদ ইকবাল ও গ্যালারির পরিচালক শামীম সুব্রানা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প সমালোচক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, মুনতাসীর মামুন এবং কবি রবিউল হুসাইন। সংবাদ সম্মেলনে হাশেম খান বলেন, ‘আজ বিশেষ ভালো লাগছে এই ভেবে যে আমি ও আমার ছাত্র ইকবাল একসঙ্গে একটা প্রদর্শনী করতে যাচ্ছি দুজনের। বিষয়বস্তুও এক। চিত্রাঙ্কনে আমরা বেছে নিয়েছি বাংলার রূপ, রং, মাটি ও গন্ধ।’
শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘আমার শিক্ষকের সঙ্গে যৌথভাবে প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ আগামী ১৭ এপ্রিল এই প্রদর্শনীর বাছাইকৃত শিল্পকর্ম নিয়ে জাপানের ওসাকায় আরও একটি প্রদর্শনী হবে বলে জানান তিনি।
প্রদর্শনীতে শিল্পকর্ম রয়েছে ৬০টি। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। চলবে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত।