শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হল ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬’। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিভাগের সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আজীবন সম্মাননা পদক গ্রহণ করেন ফারুক ও ববিতা।

চলচ্চিত্র শিল্পের গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আজীবন সম্মাননাসহ মোট ২৪টি বিভাগে শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়। চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে যা সহায়তা লাগবে তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের দল অব ফেম মিলনায়তনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

চলচ্চিত্র মানুষের জীবনের প্রতিচ্ছবি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলচ্চিত্র দেশ ও সমাজের উন্নতির জন্য অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। একটা সময় ছবি দেখা বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এখন মানুষ আবারও ছবি দেখছে। এটা আনন্দের খবর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে, এমন বিষয় সিনেমায় তুলে ধরা প্রয়োজন।’

চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, সময় পেলেই তিনি চলচ্চিত্রও দেখেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন অনেক ভালো চলচ্চিত্র হয়। সব সময় তো দেখতে পারি না, তবে বিমানে যখন দেশের বাইরে যাই, চলার পথে ছবি দেখি। এ ছাড়া অন্য সময় তো খুব একটা সুযোগ পাই না। সারা দিন মিটিং আর ফাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুটা ছিল সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের নাচের মধ্য দিয়ে। এরপর কোনাল, বেলাল খান, রাজিব, অনুপমা মুক্তি ও প্রতীক হাসান পরিবেশন করেন গান। আর চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন রিয়াজ, আমিন খান, সায়মন, জায়েদ খান, ইমন, অপু বিশ্বাস, শিমলা, পপি, তমা মির্জা ও সাহারা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।

এক নজরে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’

আজীবন সম্মাননা: ফারুক ও ববিতা

সেরা চলচ্চিত্র: অজ্ঞাতনামা (ফরিদুর রেজা সাগর)
সেরা পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী, (আয়নাবাজি)
সেরা অভিনেতা: চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)
যৌথভাবে সেরা অভিনেত্রী: তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)
যৌথভাবে পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেতা: আলীরাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী: তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ)
খল চরিত্রে সেরা অভিনেতা: শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা)
সেরা শিশুশিল্পী: সাঁজবাতি (শঙ্খচিল)
সেরা সংগীত পরিচালক: ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)
সেরা গায়ক: সৈয়দ ওয়াকিল আহাদ (দর্পণ বিসর্জন, গান: অমৃত মেঘের বারি)
সেরা গায়িকা: মেহের আফরোজ শাওন (কৃষ্ণপক্ষ, গান : যদি মন কাঁদে)
সেরা গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান: বিধিরে ও বিধি)
সেরা সুরকার: ইমন সাহা (গান: বিধিরে ও বিধি)
সেরা কাহিনিকার: তৌকির আহমেদ (অজ্ঞাতনামা)
সেরা সংলাপ রচয়িতা: রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)
সেরা চিত্রনাট্যকার: অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি)
সেরা সম্পাদক: ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি)
সেরা শিল্প নির্দেশক: উত্তম গুহ (শঙ্খচিল)
সেরা চিত্রগ্রাহক: রাশেদ জামান (আয়নাবাজি)
সেরা শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ, (আয়নাবাজি)
যৌথভাবে সেরা পোশাক ও সাজসজ্জা: সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)
সেরা রূপসজ্জা: মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)
সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ঘ্রাণ (এস এম কামরুল আহসান)
সেরা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: জন্মসাথী (একাত্তর মিডিয়া লি. ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর)