সদস্যপদ স্থগিত হতে পারে অনেক তারকার

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান

নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ না করার কারণে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির শ-খানেক শিল্পীর সদস্যপদ স্থগিত হতে পারে। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হারাতে পারেন ভোটাধিকারও। এই তালিকায় বেশ কজন তারকা শিল্পীও রয়েছেন।

শিল্পী সমিতির কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বেশ কয়েকজন তারকা শিল্পীসহ প্রায় ১০০ জন সদস্যকে চাঁদা পরিশোধের জন্য অনেকবার ফোন করেছি, এসএমএস দিয়েছি। কিন্তু এখনো চাঁদা পরিশোধ করেননি তাঁরা।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদা বকেয়া এমন শিল্পীদের তালিকায় শহীদুজ্জামান সেলিম, জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, এজাজুল ইসলাম, আরিফিন শুভ, পরীমনিও আছেন। তাঁরা চলতি মাসসহ ১৯ মাসের চাঁদা পরিশোধ করেননি।

শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রের ৬ (খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সমিতির কোনো সদস্য পরপর তিন মাস চাঁদা না দিলে পরের মাস থেকে চাঁদার সঙ্গে ৫০ টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে। যদি টানা ছয় মাস চাঁদা পরিশোধ না করেন, তাহলে তাঁর শিল্পী সমিতির সদস্যপদ স্থগিত হয়ে যাবে। তবে তাঁরা সহযোগী সদস্য হিসেবে সমিতিতে থাকবেন, কিন্তু তাঁদের ভোটাধিকার থাকবে না। পরবর্তীকালে সদস্যপদ ফিরে পেতে হলে পুরো চাঁদা পরিশোধ করতে হবে। এরপর সমিতির কার্যকরী পরিষদের সভায় সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ না করা সদস্যদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না, এ ব্যাপারে কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ বলেন, ‘নেওয়াই তো যায়। কিন্তু তারকা শিল্পী হওয়ার কারণে আমরা ছাড় দিচ্ছি। এখনো তাগিদ দিচ্ছি, যাতে তাঁরা বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করেন। তবে এর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিগগিরই চাঁদা পাঠিয়ে দেবেন তাঁরা।’

এ ব্যাপারে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘সদস্যদের চাঁদা প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে। তারপরও অনেক সদস্যই ঠিকমতো পরিশোধ করেন না। আমার কাছে মনে হয় শিল্পী সমিতির প্রতি তাঁদের দায়িত্ব কম। এবার ছাড় দিয়ে বকেয়া চাঁদা সংগ্রহের চেষ্টা করছি আমরা। আরও কিছুদিন দেখব, না হলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

চাঁদা বকেয়া বিষয়ে যেসব তারকার নাম এসেছে, তাঁদের অনেকেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বলেছেন, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে সময় করে চাঁদা পরিশোধ করতে পারছেন না।

শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘সমিতি থেকে ফোন দিয়েছিলেন। সময়ের অভাবে চাঁদা পরিশোধ করা হয়নি। শিগগিরই চাঁদা পাঠিয়ে দেব।’ একই রকম কথা বলেছেন আরিফিন শুভ।

মাহফুজ আহমেদ বলেন, ‘অনেক মাসের চাঁদা বাকি আছে। পাঠাব পাঠাব করে ভুলে যাই। আজই (মঙ্গলবার) আমার অফিসকে বলে দিচ্ছি সব চাঁদা পরিশোধ করে দিতে।’

নিজে সমিতিতে গিয়ে চাঁদার টাকা পরিশোধ করতে চান ইজাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই শুটিং থাকে। সময়ের অভাবে চাঁদা পরিশোধ করতে পারিনি। অন্য কাউকে দিয়ে তো পাঠানোই যায়। কিন্তু আমি সমিতিতে গিয়ে নিজ হাতে চাঁদা দিতে চাই। সমিতিতে বসে এক কাপ চা খেতে চাই। সামনের সপ্তাহের মধ্যেই সমিতিতে যাব।’