'শ্রাবণ ট্র্যাজেডি' আসছে ১৩ আগস্ট

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের নতুন নাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’র কারিগরি প্রদর্শনীর একটি দৃশ্য
মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের নতুন নাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’র কারিগরি প্রদর্শনীর একটি দৃশ্য

ঢাকার মঞ্চে আসছে নতুন নাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’। মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় মঞ্চায়ন করছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবার-পরিজনকে সুপরিকল্পিতভাবে নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণালব্ধ মঞ্চনাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’। এটি মহাকালের চল্লিশতম প্রযোজনা। ১৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামানের লেখা নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক রহমান লিয়ন।

নির্দেশক জানান, দীর্ঘ ১০ মাস ধরে এ পাণ্ডুলিপি পর্যালোচনা ও পাঠচক্র এবং দেড় মাস ধরে একটানা মহড়া করে উদ্বোধনী মঞ্চায়ন প্রস্তুতির জন্য প্রায় ৪০ জন নাট্যকর্মী নিয়মিত অভিনয় ও নেপথ্যে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে কারিগরি ও সংবাদকর্মীদের জন্য বিশেষ দুটি প্রদর্শনী হয়েছে।

‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ মহাকালের চল্লিশতম প্রযোজনা
‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ মহাকালের চল্লিশতম প্রযোজনা

মহাকাল দলের সভাপতি মীর জাহিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ নয় মাস গবেষণালব্ধ এ পাণ্ডুলিপিতে জাতির জনককে হত্যার পরিকল্পনাকারী রাজনৈতিক ও সামরিক বেনিয়াদের অংশগ্রহণ ও কার্যকারণ উন্মোচিত হয়েছে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জানার অধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও রাষ্ট্র গঠনে তাঁর সত্যনিষ্ঠ দুর্বার প্রচেষ্টা রচিত হয়েছে এ পাণ্ডুলিপিতে। মহান নেতার হত্যাকারী রাজনৈতিক ও সামরিক বেনিয়া আর খুনিদের মুখোশ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক করা এবং খুনি ও তাদের অনুসারীদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার প্রত্যয় তৈরিতে ভূমিকা রাখবে এ নাট্য প্রযোজনা। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের মহান স্থপতির প্রতি নৈতিক, মানবিক ও রাষ্ট্রিক দায়বদ্ধতা থেকে নয় মাসের গবেষণালব্ধ এ পাণ্ডুলিপিটি মঞ্চায়নের জন্য আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

দীর্ঘ ১০ মাস ধরে এ পাণ্ডুলিপি পর্যালোচনা ও পাঠচক্র এবং দেড় মাস ধরে একটানা এ নাটকের মহড়া করে উদ্বোধনী মঞ্চায়নের প্রস্তুতি নিয়েছে মহাকালের সদস্যরা।
দীর্ঘ ১০ মাস ধরে এ পাণ্ডুলিপি পর্যালোচনা ও পাঠচক্র এবং দেড় মাস ধরে একটানা এ নাটকের মহড়া করে উদ্বোধনী মঞ্চায়নের প্রস্তুতি নিয়েছে মহাকালের সদস্যরা।

নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন কবির আহামেদ, ফারুক আহমেদ সেন্টু, মো. শাহনেওয়াজ, মনিরুল আলম কাজল, পলি বিশ্বাস, সামিউল জীবন, রাজিব হোসেন, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, আহাদুজ্জামান কলিন্স, সুমাইয়া তাইয়ুম নিশা, আরাফাত আশরাফ, স্বপ্নিল, আজহার, পিয়াসী জাহান, কাজী তারিফ, তাজুল রনি, রেদোয়ান, সিয়াম রাব্বি, জুনায়েদ, নূর আকতার মায়া, রাফি, রিফাত হোসেন জুয়েল, ইকবাল চৌধুরী, মীর নাহিদ আহসান ও মীর জাহিদ হাসান।

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ অন্তর্ভুক্ত অন্যতম সক্রিয় নাট্যদল। মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চারত সংগঠন হিসেবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবিরাম নাট্যচর্চায় মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় ৩৯টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে ও ইতিমধ্যে প্রযোজনাগুলোর মোট ৯৯৯টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে। নাটকগুলোর মধ্যে ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক এবং ১টি প্রযোজনার দেড় শতাধিক মঞ্চায়ন সম্পন্ন হয়েছে।