তারকা নেই বলে...

ছবির সিংহভাগ অংশের শুটিং হয়েছে দেবীগঞ্জ থানায়, আর গল্পটিও এই জনপদের
ছবির সিংহভাগ অংশের শুটিং হয়েছে দেবীগঞ্জ থানায়, আর গল্পটিও এই জনপদের

‘আহত ফুলের গল্প’ ছবিটি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছিল গত ঈদুল ফিতরের আগে। আগামী ঈদুল আজহায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। তবে সিনেমা হলে নয়, ব্যক্তি-উদ্যোগে মুক্তি দেবেন পরিচালক অন্ত আজাদ। দেশব্যাপী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী হবে, যদিও পরে বাণিজ্যিক ভাবে প্রেক্ষাগৃহেও দেওয়া হবে। ঈদের পর থেকে অংশ নেবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে।

প্রেক্ষাগৃহের বদলে এভাবে প্রদর্শনীর কারণ হিসেবে পরিচালক জানান, এটি মূলত স্বাধীন ধারার সিনেমা, এতে তথাকথিত তারকা নেই। সাধারণত এ ধরনের সিনেমা বেশি সিনেমা হল পায় না। তাই ভালো সিনেমা হওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের বিকল্পধারা বা স্বাধীন ধারার সিনেমাগুলো দেখার সুযোগ পায় না দর্শক।

পরিচালক জানান, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানা থেকে প্রথম প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এই যাত্রা। দেবীগঞ্জ থানায় সিনেমাটির সিংহভাগ অংশের শুটিং হয়েছিল, আর গল্পটিও এই জনপদের। দেবীগঞ্জের টাউন হল মিলনায়তন দুই সপ্তাহের জন্য ভাড়া নিয়েছেন ছবির প্রযোজক। ঈদের দিন থেকে সেখানে টানা দুই সপ্তাহ ছবিটির প্রদর্শনী চলবে। প্রতিদিন চারটি প্রদর্শনী হবে।

জুলাই মাসে কোনো কর্তন ছাড়াই চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘আহত ফুলের গল্প’
জুলাই মাসে কোনো কর্তন ছাড়াই চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘আহত ফুলের গল্প’

ওশান মাইন্ড এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় গত ১ জুলাই কোনো কর্তন ছাড়াই চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘আহত ফুলের গল্প’। ওই সময় প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে এই ছবি প্রসঙ্গে সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদ বলেন, বেশ ভালো লেগেছে ছবিটি। হয়তো তারকা নেই বলে বাণিজ্যিক সাফল্যের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে। সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রোকেয়া রফিক বেবী সিনেমাটির গানের বেশ প্রশংসা করছেন। ২২ জুলাই প্রকাশ পেয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার।

ঈদে মুক্তি পাচ্ছে চলচ্চিত্র ‘আহত ফুলের গল্প’
ঈদে মুক্তি পাচ্ছে চলচ্চিত্র ‘আহত ফুলের গল্প’

পরিচালক জানান, এই সিনেমায় চারটি পূর্ণাঙ্গ গান এবং উত্তরবঙ্গের বিয়ের গীত আছে। রবীন্দ্রসংগীত ও বিয়ের গীত ছাড়া বাকি তিনটি মৌলিক গান। মৌলিক গান তিনটি লিখেছেন টোকন ঠাকুর, কামরুজ্জামান কামু, লোলায়মান আকন্দ। কণ্ঠ দিয়েছেন পিন্টু ঘোষ, কামরুজ্জামান রাব্বি ও লিপ্পু অসীম। রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন রোকন ইমন। আর বিয়ের গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের স্থানীয় শিল্পীরা।

চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তাহিয়া খান, সুজন মাহাবুব, আলী আহসান, গাজী রাকায়েত, অনন্যা হক, শেলী আহসান, জয়া, অভি চৌধুরী, শান্ত কুন্ডু, কামরুল হাসান, তৌহিদুল আলম, পিয়ারা বেগম, শহীদুল ইসলাম, ওমরচাঁদ, ইকতারুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

পিতৃতান্ত্রিক বাংলাদেশের মুসলিম সমাজব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতি সংস্পর্শ; এ তিনটি বিষয় যথাক্রমে শাপলা, কামিনী ও মোহনা নামের তিনজন মেয়ের জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে, তা নিয়ে চলচ্চিত্র ‘আহত ফুলের গল্প’। পরিচালক অন্ত আজাদ বলেন, ‘এ চলচ্চিত্রে তেমন ফ্যান্টাসি নেই, আছে চারপাশে দেখা ঘটনার বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রচলিত জীবনের গভীর সংকটকে উপলব্ধির চেষ্টা। সিরিয়াস বিষয় গল্পের বিষয়বস্তু হলেও দৈনন্দিন জীবনে বয়ে চলা হাসি-ঠাট্টা, গান-গীত এবং একটি প্রেম কাহিনির মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে। পরিচালক বিশ্বাস করেন, বর্ণনাত্মক রীতির সরল ভঙ্গিতে গল্প বলার ধরনটিও আধুনিক যান্ত্রিক চাপে পিষ্ট মানুষের আবেগ ও উপলব্ধিকে একসঙ্গে স্পর্শ করবে।’