চমক লুকিয়ে ছিল ছবির শেষে

গোল্ড ছবিতে অক্ষয় কুমার ও মৌনি রায়
গোল্ড ছবিতে অক্ষয় কুমার ও মৌনি রায়

স্বাধীনতা দিবসে গোল্ড ছবির মুক্তি যথার্থ। এই ছবি ভারতীয় ইতিহাসের এক অজানা গৌরবময় জয় তুলে ধরেছে। আর এই জয় মালিকের বিরুদ্ধে ভৃত্যের জয়। দুই শ বছর ভারতকে শাসন করেছিল ইংরেজরা। ১৯৪৮ সালে অলিম্পিক ফাইনালে ইংল্যান্ডের মাঠে ভারত তাদেরই হারিয়ে ‘গোল্ড’ পদক জেতে। তাই এটি অন্য রকম সম্মানের। এর আগেও ভারত একাধিকবার হকিতে সোনা এনেছে। কিন্তু ভারত তখন ছিল ব্রিটিশ শাসনের পরাধীন। তাই ওই জয় ছিল ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার জয়।

স্বাধীন ভারতের হকিতে প্রথম জয় আসার পেছনে ছিলেন এক বাঙালি। নাম তপন দাস। ভারতীয় হকি দলের ম্যানেজার। সেই তপন দাসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার। ছবিতে অক্ষয় মদ্যপ, প্রতারক, খ্যাপাটে। কিন্তু তাঁর দুচোখজুড়ে শুধু স্বপ্ন। হকিতে ভারতকে বিশ্বের দরবারে সেরা করার স্বপ্ন। তপনকে একাধিকবার তাঁর স্বভাবের জন্য ভারতীয় দল থেকে বিতাড়িত করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁর স্বপ্নকে বুকে আঁকড়ে রেখেছেন সব সময়। তপনকে ছাড়া এই জয় কখনোই সম্ভব ছিল না। তাই ভারতীয় হকি দল তাঁকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়।

গোল্ড ছবিতে তপন দাসের চরিত্রে অক্ষয় কুমার দারুণ। তবে অক্ষয়কেও কোথাও ছাপিয়ে গেল বাকি চরিত্ররা। সানি কৌশল, বিনীত কুমার সিং, অমিত সাধ, কুনাল কাপুর-প্রত্যেকে নিজেদের চরিত্রে অসাধারণ করেছেন। অক্ষয়ের পাশে তাঁরা যোগ্য সহযোদ্ধা। তবে কোথাও অক্ষয়ের বাঙালিয়ানা দেখাতে গিয়ে একটু বেশি নাটুকেপনা করে ফেলেছেন পরিচালক রীমা কাগতি। অক্ষয়ের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাঙালি মেয়ে মৌনি রায়। মৌনির উপস্থিতি কখনো হতাশ করেছে। অক্ষয়ের সঙ্গে তাঁর রোমান্সও সেভাবে জমে ওঠেনি। অক্ষয়ের স্ত্রী হিসেবে বাঙালি অভিনেত্রীর প্রয়োজন খুব একটা ছিল বলে মনে হয় না। ছবির সেট ডিজাইন ছিল অসাধারণ। ছবির সংগীত যথাযথ। ‘নয়নো মে বাঁধি’ রোমান্টিক ট্র্যাকটি বারবার শুনতে ইচ্ছা করে। ছবির গল্পকার এবং পরিচালক রীমা কাগতি। তবে রীমার পরিচালনা মাঝেমধ্যে হতাশ করেছে। তবে গোল্ড ছবির পুরো চমক লুকিয়ে ছিল ছবির শেষ ১৫ মিনিটে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের সেই রুদ্ধশ্বাস জয় আজও রোমাঞ্চকর।