মুক্তি নিয়ে জটিলতায় 'বেপরোয়া'

রোশান ও ববি
রোশান ও ববি

ঈদের সময় বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে সম্ভাব্য মুক্তির তালিকায় আছে কলকাতার রাজা চন্দ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘বেপরোয়া’। চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার আগেই জটিলতার মুখে পড়েছে ছবিটি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, ‘বেপরোয়া’ বাংলাদেশি ছবি তৈরির নীতিমালায় নির্মিত হয়নি। মুক্তি দিতে হলে আমদানি করে মুক্তি দিতে হবে। যদিও ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া বলছে সব নিয়ম মেনেই ছবিটি তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি ছবিটির অনাপত্তিপত্র না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছে পরিচালক সমিতি। কোনো ছবি সেন্সরে জমা দেওয়ার আগে বিএফডিসির অনাপত্তিপত্র লাগে। পরিচালক সমিতির প্যাডে লিখিত চিঠির একটি অংশে অভিযোগ করা হয়েছে-বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি না নিয়ে বেপরোয়া ছবিটির শুটিং কলকাতায় হয়েছে। এ ছাড়া এই ছবির পরিচালক কলকাতার রাজা চন্দ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নিয়ম অনুযায়ী অতিথি সদস্যপদ গ্রহণ করেননি। সুতরাং নিয়ম অনুযায়ী এটি বাংলাদেশি ছবি নয়।

চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন। তবে পরিচালক সমিতির অভিযোগের বিষয়ে ভিন্ন কথা বলছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘পরিচালকেরা বলছেন, সরকারি অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে বেপরোয়া তৈরি হয়েছে। কিন্তু ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সরকারি অনুমতির কাগজ আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। পরিচালক সমিতির সদস্য হওয়া না হওয়ার বিষয়টি আমাদের কোনো এখতিয়ারে নাই। এটি সরকারি কোনো নিয়মের মধ্যেও নেই।’

এখন বেপরোয়া ছবিটির অনাপত্তিপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই বলে জানান আমির হোসেন। তিনি বলেন, ‘এফডিসি থেকে লাইট, ক্যামেরাসহ বেশ কিছু কারিগরি সহায়তা নিয়েছে ছবিটি। এসব বাবদ ভাড়ার টাকা পরিশোধ করাসহ কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষ হলেই অনাপত্তিপত্র দেওয়া হবে। আগামী রোববারের মধ্যেই দিতে পারব।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কথার পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির অনাপত্তিপত্র ছাড়া বিএফডিসি ওই ছবির অনাপত্তিপত্র দিতে পারে না। সরকারিভাবে নিয়ম না থাকলেও বিএফডিসির সঙ্গে লিখিত চুক্তি আছে। তাতে বলা আছে বিএফডিসি থেকে কোনো ছবির অনাপত্তিপত্র পেতে হলে আগে পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির অনাপত্তিপত্র লাগবে। পরিচালক সালাউদ্দিন জাকি যখন বিএফডিসিতে পরিচালকের (উত্পাদন) দায়িত্বে ছিলেন তখন এই চুক্তি হয়েছিল।

চুক্তির ব্যাপারে আমির হোসেন বলেন, ‘সেসব কাগজপত্র এখন কোথায় আছে তা তো জানা নেই। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সরকারের নিয়ম মেনেই কাজ করতে চাই।’

এ ব্যাপারে ছবির প্রযোজক আবদুল আজিজ বলেন, ‘সরকারের নিয়ম মেনে কাজ করেছি। পরিচালক সমিতির অনাপত্তির বিষয়টি সরকারের কোনো নিয়মের মধ্যে নেই। সমিতি এ নিয়ে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে হাতে গোনা যে কয়েকজন প্রযোজক এখন কাজ করছেন, তাঁরাও ছবি নির্মাণ বন্ধ করে দেবেন।’