রহস্যঘেরা 'সাধু'কে নিয়ে ছবি

গুমনামী বাবা ও প্রসেনজিৎ। ছবি: সংগৃহীত
গুমনামী বাবা ও প্রসেনজিৎ। ছবি: সংগৃহীত

‘গুমনামী বাবা’ ভারতের রহস্যঘেরা এক সাধুর নাম। ছিলেন উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদে। ‘ভগবানজি’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। তাঁর কয়েজন শিষ্যও ছিল। তিনি ছিলেন শিক্ষা-দীক্ষায় অত্যন্ত পটু। বাংলা, হিন্দি আর ইংরেজি ভাষায় ছিল অগাধ জ্ঞান। তাঁর সংগ্রহে ছিল দেশ-বিদেশের প্রচুর বই আর পত্রিকা।

এই বাবার চেহারা ছিল অবিকল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো। তাই অনেকেই মনে করতেন, তিনি হয়তো অন্তর্ধান হওয়া নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। কারণ, ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রামী এই নেতাজির জীবিত থাকা কিংবা মারা যাওয়া নিয়ে এখনো কোনো প্রমাণ মেলেনি।

শোনা যায়, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট নেতাজিকে বহন করা বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল তাইহাকু বিমানবন্দরের কাছে। এরপর নেতাজির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মারা যাওয়ার কথা রটে যায়। অনেকে দাবি করেন, নেতাজি হয়তো সেই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত রয়েছেন। কিন্তু সেই তথ্য এখনো মানতে পারেনি নেতাজির ভক্তরা। আবার এই দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি কেউ। নেতাজির ভক্তরা বরং বলছেন, নেতাজি মারা যাননি। সেই বিশ্বাস নিয়ে এখনো বেঁচে আছেন নেতাজির ভক্তরা। কেউ কেউ দাবি করেছেন, ১৯৪৭-৪৮ সালে রাশিয়ায় দেখা গেছে নেতাজিকে।

এই ঘটনার মাঝে ফৈজাবাদের ‘গুমনামী বাবা’র নাম উঠে আসে। তাঁর কথা শুনে আর চেহারা ও চালচলন দেখে অনেকেই দাবি করেন, সম্ভবত তিনিই নেতাজি। ফৈজাবাদের কাছে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। লুকিয়ে রেখেছেন নিজেকে।

সেই ‘গুমনামী বাবা’ ১৯৮৫ সালে মারা যান। গুমনামী বাবার মৃত্যুর পর তাঁকে নেতাজি বলে অনেকেই দাবি করেন। কিন্তু তা কেউ প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। ভারত সরকার নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করতে চারবার তদন্ত কমিশন গঠন করে। সেই তদন্ত কমিশনগুলো নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে, রহস্যের আবর্তে থেকে যায় এই ‘গুমনামী বাবা’ও।

এবার সেই রহস্যঘেরা ‘গুমনামী বাবা’কে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন কলকাতার চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। গত শনিবার নেতাজির অন্তর্ধান দিবসের দিনে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, রহস্যঘেরা ‘গুমনামী বাবা’কে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। এই চলচ্চিত্রে ‘গুমনামী বাবা’র চরিত্রে অভিনয় করবেন কলকাতার প্রখ্যাত অভিনেতা প্রসেনজিৎ। আগামী বছর ছবিটি মুক্তি পাবে।