'নতুন মুখের সন্ধানে' কার্যক্রমের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনে তিন মন্ত্রী

‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের উদ্বোধনে তিন মন্ত্রীর পেছনে দাঁড়ানো হারুন-উর-রশিদ, চম্পা, মুশফিকুর রহমান গুলজার, জয়া আহসান। ছবি: প্রথম আলো
‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের উদ্বোধনে তিন মন্ত্রীর পেছনে দাঁড়ানো হারুন-উর-রশিদ, চম্পা, মুশফিকুর রহমান গুলজার, জয়া আহসান। ছবি: প্রথম আলো

শিল্পী বাছাইয়ের নতুন রিয়ালিটি শো ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমের বর্ণাঢ্য আয়োজনে অতিথি হয়েছেন সরকারের তিন মন্ত্রী। আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার পাঁচতারা হোটেলে এই কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে অর্থমন্ত্রী প্রতীকীভাবে নিজের নাম নিবন্ধন করে নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। তিনি নতুন শিল্পী খোঁজার এই আয়োজনকে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ বলেছেন।

হোটেল র‍্যাডিসনে সন্ধ্যায় শুরু হওয়া নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় মঞ্চে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীর, পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চিত্রনায়িকা চম্পা, জয়া আহসান, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুন-উর-রশিদ প্রমুখ।

নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের অতিথির বক্তব্যে চিত্রনায়ক আলমগীর বাংলা চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে ২০০ কোটি টাকার অর্থসহায়তা চান। আলমগীর বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের কাছ থেকেই জেনেছি, গতবার ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট নির্ধারণ হয়েছিল। আমাদের এই অর্থমন্ত্রী ১২ থেকে ১৩ বার বাজেট ঘোষণা করেছেন। কোন জায়গা থেকে আমাদের, আমাদের দেশকে কোথায় এনেছেন—তিনি চাইলে সবকিছুই সম্ভব। তাঁর কাছে ২০০ কোটি টাকা কোনো ব্যাপার নয়। আমাদের অর্থমন্ত্রী কৃপণও নন। চলচ্চিত্রের জন্য তাঁর কাছে এই টাকা বরাদ্দের জন্য আমি অনুরোধ করলাম। আশা করছি, তিনি মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।’

দেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় তারকা মান্না, দিতি, মিশা সওদাগর, অমিত হাসান, আমিন খানসহ অনেকেই নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উঠে এসেছেন। দেশের চলচ্চিত্রে শিল্পী সংকট দূর করতে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে আবার শুরু হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। আজকের অনুষ্ঠানে মান্না, দিতি ও সোহেল চৌধুরীর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে গত ১৪ জুলাই রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার প্রচারস্বত্ব, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ বেশ কিছু বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয় নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতা। তারপর দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বন্ধ ছিল এটি। এর আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (বিএফডিসি) উদ্যোগে ১৯৮৪, ১৯৮৮ সালে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল।

নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নতুন শিল্পী আবিষ্কার আপনারা শুরু করলেন, এটা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। আমার বেশি কিছু বলার নেই, শুধু বলব, আমরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, সাহিত্যিক কর্মকাণ্ডে যত দূর এগিয়ে আছি, সে তুলনায় চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে অনেক পেছনে পড়ে আছি। তারেক মাসুদ এ দেশে চলচ্চিত্র বিকাশে একটা চেষ্টা করেন। তাঁর উপদেশে অনেক বছর আগে আমি একটা আইন করি, যেটা হয়তো আপনারা দেখেনও না। আমি তখন বলেছিলাম, কেউ যদি সিনেপ্লেক্স বানাতে চায়, সহজ শর্তে ঋণ দিতে চাই। ওই ঋণের কোনো পয়সা আজ পর্যন্ত ব্যবহার হয়নি। নতুন মুখ খুঁজবেন, পুরোনোদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের এখানে চলচ্চিত্র তৈরির কাজটি আমরা গ্রহণ করব।’

অর্থমন্ত্রী প্রতীকী নাম নিবন্ধন করলেও আগ্রহীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও দু-এক দিন। পরিচালক সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘অনলাইনে কবে থেকে নাম নিবন্ধন শুরু হবে, তা আমরা শিগগিরই জানিয়ে দেব।’