হতাশা দিয়েই বছর শুরু

৪ জানুয়ারি কলকাতার ছবি বিসর্জন মুক্তি পায় ও মাসের শেষে মুক্তি পেতে পারে প্রেম আমার ২
৪ জানুয়ারি কলকাতার ছবি বিসর্জন মুক্তি পায় ও মাসের শেষে মুক্তি পেতে পারে প্রেম আমার ২

গত বছর দেশীয় ছবি দেবী ও যৌথ প্রযোজনার স্বপ্নজাল দেশ–বিদেশে সুনাম অর্জন করলেও মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা ছিল গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১৮ সালে দেশীয় ছবি মুক্তি পায় ৩৫ টি, আমদানি করা ছবি ৯টি ও যৌথ প্রযোজনার ২টি। সেই ধারাবাহিকতায় যেন ২০১৯ সালটিও শুরু হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম মাসে ঢাকার চলচ্চিত্র যেন হতাশা দিয়ে যাত্রা শুরু করল। মাসের অর্ধেকটা চলে গেল, এখনো দেশীয় কোনো ছবি প্রেক্ষাগৃহে ওঠেনি বললেই চলে। ৪ জানুয়ারি আই অ্যাম রাজ নামে একটি দেশীয় ছবি মাত্র চার-পাঁচটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। একই দিন আমদানি করা কলকাতার ছবি বিসর্জন মুক্তি পায়। এরপর আর কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। ১৮ জানুয়ারি নতুন কোনো ছবি মুক্তির সংবাদ নেই। ২৫ জানুয়ারি যৌথ প্রযোজনার ছবি প্রেম আমার ২ মুক্তির কথা থাকলেও ছবিটির এখনো প্রিভিউ ও সেন্সর হয়নি। ছবির বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, মুক্তির আগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ২৫ জানুয়ারি প্রেম আমার ২–এর মুক্তি এখনো অনিশ্চিত।

নতুন বছরের প্রথম মাসেই ঢাকার চলচ্চিত্রের এই হলো হাল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কোনোভাবেই হতাশ নন পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। তাঁর মতে, নতুন ছবি প্রেক্ষাগৃহে ওঠার আগে ও পরে ছবির প্রযোজক পদে পদে নানাভাবে আর্থিক প্রতারণার শিকার হন। প্রতারণা বলতে বুকিং এজেন্টদের কার্যকলাপ, প্রযোজকদের প্রতিনিধি ও হল ব্যবস্থাপকদের যোগসাজশে অসাধু কার্যকলাপ, মেশিন ভাড়া, হলমালিকদের টাকা আটকে রাখা, সময়মতো প্রযোজককে টাকা না দেওয়াসহ অনেক ধরনের অসাধু কার্যকলাপ তো রয়েছেই। ফলে প্রযোজকেরা নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না। এতে ছবির নির্মাণ ও মুক্তি কমে গেছে। গুলজার বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে কোনোভাবেই হতাশ নই। এটি নিয়মই, খারাপের পর ভালো অবস্থা ফিরবে। আমাদের নতুন তথ্যমন্ত্রী এসেছেন। এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গে আমরা কথাও বলেছি। প্রতারণার সব পথ বন্ধ করা হবে। আশা করছি, মাস তিনেকের মধ্যেই আমাদের চলচ্চিত্রের একটা ভালো ফল পাওয়া যাবে।’

তবে চলচ্চিত্রের এই অবস্থার জন্য চলচ্চিত্রের একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করে আরও খারাপের ইঙ্গিত দিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রের নেতাদের বিগত দিনের আন্দোলনের ফলেই বর্তমান এই দুরবস্থা। এসব নেতা আমাদের চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। তাঁরা নেতাগিরিই করেছেন। আমাদের চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবেননি। অনেকটাই কলকাতার চলচ্চিত্রের বাজার তৈরি করে দিয়েছেন। প্রথম মাসের চলচ্চিত্রের মুক্তির অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, সামনে আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা আরও খারাপ হবে।’

এ ব্যাপারে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম বলেন, ‘অনেক সময় শুরুটা খারাপ হলেও শেষটা ভালো হয়। অনেকেই তো বলেন, ঢাকার চলচ্চিত্রের সুদিন আসছে। আমিও তা-ই মনে করি। কারণ অনেক দিনই তো খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। ভালো অবস্থা হয়তো তাড়াতাড়িই ফিরবে।’