গায়ক আকবর গুরুতর অসুস্থ

আকবর
আকবর

কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে’ নতুন করে গেয়েছিলেন আকবর আলী গাজী। সবার কাছে তিনি আকবর নামে পরিচিত। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে প্রচারিত এই গান তাঁকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি দেশে ও দেশের বাইরের দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তাঁকে পরিচিত করে তোলে। আলোচিত এই গায়ক এখন অসুস্থ হয়ে ঘরবন্দী। চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্যও নেই। তাই বাসায় শুয়ে কাটছে সময়। আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলোকে জানান তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

আকবর সাত বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন। দুই বছর ধরে শরীরে বাসা বেঁধেছে জন্ডিস, রক্তের প্রদাহসহ নানা রোগ। তাই আগের মতো এখন আর স্টেজ শো করতে পারেন না। সর্বশেষ গান গেয়েছেন ১১ জানুয়ারি, সাভারে। এরপর থেকে বিছানায়। কানিজ ফাতেমা জানান, বাসা ভাড়া, খাওয়া-দাওয়া আর অন্যান্য খরচ ছাড়া প্রতি মাসে আকবরের চিকিৎসা বাবদ ২০ হাজার টাকা করে খরচ হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিকিৎসার খরচ চেয়ে আবেদনও করেছেন।’

কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘আগে থেকেই আকবর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এখন বেড়েছে। কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জিরোর কোঠায় ইলেকট্রোলাইট। রক্তে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর শরীর এখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। দুই বছর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি। কিন্তু এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে, হাতে কোনো টাকা নেই। তাঁর চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিডনির চিকিৎসা না হলে তাঁকে হয়তো বাঁচানোই যাবে না।’

যশোর শহরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। সেখানে টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের একজন আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’-কিশোর কুমারের এই গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।

পরিবার নিয়ে আকবর মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকেন। তাঁর বড় মেয়ে আছিয়া আকবর অথই হারমান মেইনার স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে কামরুল ইসলাম ও মহরম থাকে গ্রামের বাড়ি যশোরে।