দুই ভাষায় গাজী রাকায়েতের 'গোর'

গোর চলচ্চিত্রের দৃশ্যে গাজী রাকায়েতের (ডানে) সঙ্গে সহশিল্পী
গোর চলচ্চিত্রের দৃশ্যে গাজী রাকায়েতের (ডানে) সঙ্গে সহশিল্পী

একসঙ্গে দুটি ভাষায় নির্মিত হলো গাজী রাকায়েতের ‘গোর’ চলচ্চিত্রটি।  এরই মধ্যে ইমপ্রেস টেলিফিল্মসের এই চলচ্চিত্রটির শুটিং শেষ হয়েছে। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন গাজী রাকায়েত। দুটি ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছবিটি আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন উৎসবে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সেই চিন্তা থেকেই দুই ভাষায় শুটিং করা হয়েছে। বাংলা আর ইংরেজি।’

তবে এই সিনেমায় শুধু দুই ভাষায় নয়, আরও বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে বলে জানালেন নির্মাতা। তার আগের সিনেমা ‘মৃত্তিকা মায়া’র প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘২০১২ সালে মৃত্তিকা মায়া ছবিটি ১-১৬ অক্টোবর এবং নভেম্বরের ১-১০ তারিখ অবধি শুটিং করেছিলাম। মজার ব্যাপার হলো, ২০১৮ সালে একই সময়ে গোর ছবির শুটিং করেছি।’ তবে ব্যাপারটি পরিকল্পনার চেয়ে কাকতালীয় বলে জানালেন তিনি।

তবে শুটিং সময়ের পরিকল্পনা না করলেও পুরো শুটিংয়েই ছিল পরিকল্পনার ছাপ। এমনটা জানালেন এই ছবির অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। বললেন, ‘ছবির শুটিংয়ের আগে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আমরা। এ কারণে সময়ের আগেই শুটিং শেষ করতে পেরেছি।’

ছবিটি চূড়ান্ত শুটিংয়ে যাওয়ার আগে করা হয়েছে মহড়া। মহড়ার আগে প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীকে নিজের সংলাপ মুখস্থ করে আসতে হয়েছে। একাধিকবার এই মহড়ার কারণে অল্প সময়েই শেষ করা গেছে শুটিং।

প্রস্তুতি প্রসঙ্গে কথা বলেন নির্মাতা গাজী রাকায়েত। বলেন, ‘আমরা শুটিং করেছি দোহারের শাইনপুকুর গ্রামে। সেই গ্রামের একটা ভিটাবাড়ি, তার পাশে ঘন জঙ্গল ছিল। সাপের বসবাস ছিল। সেই জঙ্গল পরিষ্কার করে তিন মাস আগে সেখানে একটা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু বাড়িই না, রীতিমতো গৃহস্থের বাড়ি; যেখানে লাউয়ের মাচা, মুরগি পালন, গরু–ছাগল সবই ছিল।’ শুটিংয়ের জন্য এমন বাড়ি সচরাচর তৈরি হয় না বলেই জানালেন তিনি। বললেন, ‘আমরা একটানা এত দিন শুটিং করব, কে আমাদের বাড়িঘর ছেড়ে দিয়ে করতে দেবে? তাই নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে করেছি।’

এত কিছুর কারণে ছবিটি নিয়ে দারুণ প্রত্যাশা এই নির্মাতার। এমনকি প্রত্যেক অভিনয়শিল্পীই আশা করছেন, এটা দারুণ একটা চলচ্চিত্র হয়েছে। এটার পেছনে একটা কারণও ব্যাখ্যা করলেন নির্মাতা। গাজী রাকায়েতের চিত্রনাট্য ও অভিনয়ে ১৯৯৭ সালে গোর নামে একটি ৫৫ মিনিটের নাটক নির্মাণ করেছিলেন নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। সেটি প্রচার হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। পরের বছর প্রথমবার আয়োজিত মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কারে সেরা নির্মাতার পুরস্কার পেয়েছিলেন লাভলু। এই নাটকে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন বিপাশা হায়াত। ওই গল্পটিকে সিনেমার উপজীব্য করেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন গাজী রাকায়েত। তাঁর মতে, ‘আমাদের এক ঘণ্টার নাটক গল্প দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব। কয়েক বছর ধরে যেসব নির্মাতা জাতীয়সহ বিভিন্ন পুরস্কার পাচ্ছেন, বেশির ভাগই নাটক নির্মাণ করে এই জগতে এসেছেন। তাই গল্পগুলোতে যত্ন করতে হবে আগে।’

গাজী রাকায়েত ও মৌসুমী হামিদ ছাড়াও ‘গোর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আশিউল ইসলাম, সুষমা সরকার, এ কে আজাদ সেতু, দীপান্বিতা প্রমুখ। নির্মাতা জানালেন, এখন চলছে সম্পাদনার কাজ। তবে দেশের আগে দেশের বাইরে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানালেন তিনি। তারপর সময়–সুযোগমতো দেশে মুক্তি দেওয়া হবে।