ক্যামেরামুখে এ আর রাহমানের সন্তানেরা

ম্যাগাজিনের ছবির জন্য মডেল হয়েছেন রহিমা, খাতিজা ও আমিন
ম্যাগাজিনের ছবির জন্য মডেল হয়েছেন রহিমা, খাতিজা ও আমিন

মেয়েকে জোর করে নেকাব পরান সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান! এ রকম অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন অস্কারজয়ী এই সংগীতজ্ঞ। এমনকি নেকাব পরা প্রসঙ্গে নিজের সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন রাহমান-কন্যা। আলোচনার এই পর্যায়ে এবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন সংগীত পরিচালক এ আর রাহমানের তিন সন্তান। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে সেই ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।

‘হ্যালো’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মডেল হয়েছেন এ আর রাহমানের মেয়ে খাতিজা ও রহিমা আর ছেলে আমিন। ছবিতে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গেছে নেকাব পরা খাতিজাকে। তাঁর ডান পাশে সবুজাভ গাউনে রহিমা এবং বাঁ পাশে কালো ব্লেজার পরা আমিন। কিছুদিন আগে মেয়ের নেকাব পরা নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে ট্রলের শিকার হন এ আর রাহমান। মেয়ের বোরকা ও নেকাব পরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে তির্যক মন্তব্য করেছেন একদল লোক। অন্যদিকে ‘পোশাক বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা সবারই আছে’, এমন মন্তব্য করে এ আর রহমানের পাশে দাঁড়িয়েছেন অন্যরা।

‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ ছবিতে সংগীত পরিচালনা করে অস্কার জিতেছিলেন সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান। সেই সাফল্যের দশক পূর্তিতে ভারতের মুম্বাইতে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন রাহমানের মেয়ে খাতিজাও। সেখানে লাল পাড়ের কালো শাড়ি পরা খাতিজার মুখ ঢাকা ছিল কালো নেকাবে। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে বাবাকে নিয়ে কথা বলতে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাঁকে। সেখানেই বোরকা ও নেকাবে ঢাকা খাতিজাকে দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজেবাজে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এক টুইটার ব্যবহারকারী এ আর রাহমানের টুইটে মন্তব্য করে লিখেছিলেন, ‘খাতিজার নিশ্চয়ই খেতে বেশ অসুবিধা হয়েছে। খাতিজার বদলে অন্য কাউকে নিয়ে গেলে কেউ টের পেত না।’ এ টুইটের জবাবে অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এমন মন্তব্য করে রুচি বিকৃতির পরিচয় দিলেন। রাজপুত নারীরাও মাথায় ঘোমটা দিয়ে থাকেন। তাঁরাও নিজেদের মুখ কাউকে দেখান না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সব ধর্মের মানুষকে সম্মান করে। সে জন্যই ভারতে সব ধর্মের সহাবস্থান রয়েছে।’

(বাঁ থেকে) মুকেশ আম্বানির মেয়ের বিয়েতে এ আর রাহমানের মেয়ে খাতিজা ও রহিমা, নীতা আম্বানি এবং এ আর রাহমানের স্ত্রী সায়রা
(বাঁ থেকে) মুকেশ আম্বানির মেয়ের বিয়েতে এ আর রাহমানের মেয়ে খাতিজা ও রহিমা, নীতা আম্বানি এবং এ আর রাহমানের স্ত্রী সায়রা

বাবাকে আক্রান্ত হতে দেখে ফেসবুকে খাতিজা লিখেছেন, ‘আমি যে পোশাক পরি বা যা করতে পছন্দ করি, এর পেছনে আমার মা-বাবার কোনো হাত নেই। নেকাব আমার ব্যক্তিগত পছন্দ। আমি মনে করি এটা সম্মানের ব্যাপার। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে নিজের পোশাক পছন্দ করার অধিকার আমার আছে।’

আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের পরিবারের ছবি পোস্ট করেছিলেন এ আর রাহমান। ভারতীয় ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির মেয়ের বিয়েতে সপরিবার গিয়েছিলেন তিনি। মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানির সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন খাতিজা, রহিমা ও স্ত্রী সায়রা। ছবিতে তিনি লিখেছিলেন, আমার পরিবারের তিনজন অমূল্য নারী খাতিজা, রহিমা ও সায়রার সঙ্গে নীতা আম্বানি।

নিন্দুকদের প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ আর রহমান বলেন, ‘যাঁরা এসব নিয়ে কথা বলছেন, তাঁরা আসলে ভালো মানুষ। কখনো কখনো তাঁরা একটু বেশি সচেতন হয়ে ওঠেন। তাঁরা এ আর রাহমানকে নিজেদের ঘরের লোক মনে করেন। এ জন্যই আমি কী করি না করি, সেসব নিয়ে উদ্‌গ্রীব থাকেন তাঁরা। এসব প্রতিক্রিয়া তাঁরা দেখান অতিরক্ষণশীলতা থেকে।’ হিন্দুস্তান টাইমস