বাহুবলীর দেশে আবার বাংলাদেশের মেঘলা, তবে ছবির নাম বলতে বারণ

তেলেগু ভাষার নতুন ছবিতে আবার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী মেঘলা মুক্তা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
তেলেগু ভাষার নতুন ছবিতে আবার চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী মেঘলা মুক্তা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমার পক্ষ থেকে বলা বারণ আছে। তাই এই মুহূর্তে আমার পক্ষে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’ তেলেগু ভাষার নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশের মেঘলা মুক্তা। এই সিনেমার কাজে আগামী ৮ মার্চ হায়দরাবাদের উদ্দেশে ঢাকার ছাড়বেন বলেও জানালেন।

মেঘলা জানান, হায়দরাবাদে গিয়ে তিনি শুরুতেই এক সপ্তাহের একটি কর্মশালায় অংশ নেবেন। এরপরই শুটিং শুরু করবেন। ভারতের অন্যতম ব্যয়বহুল ও আয়ের রেকর্ড গড়া ছবি ‘বাহুবলী’ তেলেগু ভাষার। এ ছবিটি হিন্দিতে মুক্তি পায়। প্রভাস, আনুশকা, তামান্না ভাটিয়া, রানা দাগ্গুবতী অভিনীত ‘বাহুবলী’র দুটি পর্বই ভারতে সুপার ডুপার হিট ছবি। সেই বাহুবলীর এলাকায় আবারও নতুন সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বাংলাদেশের মেঘলা।

বাংলাদেশের কয়েকটি ছবিতে ছোট কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেঘলা মুক্তা। অনেকের মতে, সবদিক থেকে যোগ্য হওয়ার পরও দেশের চলচ্চিত্রে উঠতি এই নায়িকার মূল্যায়ন সেভাবে হয়নি। ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’, ‘পাষাণ’ ও ‘নবাব’ ছবিগুলোতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ১ ফেব্রুয়ারি এই মেঘলার অভিষেক হয় তেলেগু ছবির প্রধান নায়িকা হিসেবে। ‘সাকালাকালা ভাল্লাভুডু’ নামের সেই ছবিটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, কেরালা, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর ১৬৮ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। বাহুবলীর এলাকায় মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমা দিয়ে সবার প্রশংসা কুড়ান বাংলাদেশের মেঘলা। তাই তো ছবি মুক্তির পরপরই সেখানকার আরেকটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিপত্রে সই করলেন।

এই ফেব্রুয়ারিতেই মেঘলার অভিষেক তেলেগু ছবি ‘সাকালাকালা ভাল্লাভুডু’র প্রধান নায়িকা হিসেবে। ছবিটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, কেরালা, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর ১৬৮ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
এই ফেব্রুয়ারিতেই মেঘলার অভিষেক তেলেগু ছবি ‘সাকালাকালা ভাল্লাভুডু’র প্রধান নায়িকা হিসেবে। ছবিটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, কেরালা, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর ১৬৮ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

মেঘলা জানান, ‘আমি যখন তেলগু ভাষার ছবিটির প্রচারণার জন্য হায়দরাবাদে গিয়েছিলাম, তখনই ছবির ব্যাপারে কথাবার্তা হয়। মুক্তির পর চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করি। কিন্তু ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আমাকে এখনো এ বিষয়টি বিস্তারিত বলতে অনুমতি দেননি। তা ছাড়া আমি নিজেও কোনো কাজ শুরু ছাড়া বলতে চাই না।’

শুরুর দিকে র‍্যাম্পে কাজ করেছেন মেঘলা। মডেল হিসেবে কাজ করেছেন বিলবোর্ড আর গানের ভিডিওতে। বড় পর্দায় অভিনয়ের স্বপ্ন থেকে নাম লেখান সিনেমায়। সেই স্বপ্ন দেশের গণ্ডি পেরিয়েছে, মেঘলা অভিনীত ছবি দেশের বাইরেও মুক্তি পেয়েছে। প্রথম সিনেমার কাজ করতে গিয়ে তেলেগু ভাষা নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে। প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে তা উতরে গেছেন। মেঘলা বলেন, ‘নতুন ভাষা জটিলতা নিয়ে একটা সিনেমায় কাজ করে ফেলেছি। আশা করছি, এই ছবিতে আমার উন্নতি হবে। একই ভাষায় দ্বিতীয়বার কাজ করতে যাচ্ছি যেহেতু, বিষয়টি আরও সহজ হয়ে যাবে।’

মেঘলা মুক্তা
মেঘলা মুক্তা

হায়দরাবাদে প্রথম ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এমনকি ওখানকার সবার আন্তরিকতায় মেঘলা মুগ্ধ। জানালেন, ‘ওখানকার সবাই আমার প্রতি খুবই আন্তরিক। শুটিংয়ে আমি কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়িনি। সবাই খুবই সহযোগিতা করেছেন—একজন শিল্পী হিসেবে যে সম্মান, যে সহযোগিতা করার। আমার তো এ–ও মনে হয়, বাইরের দেশের বিধায় হয়তো আরও বেশি সহযোগিতা পেয়েছি। তাঁরা এটা বিশ্বাস করেন, অতিথি হচ্ছেন দেবতার মতো। তাই অতিথির সন্তুষ্টির ব্যাপারে খুব সচেতন ছিলেন।’

‘সাকালাকালা ভাল্লাভুডু’ সিনেমাটি মুক্তির সময় মেঘলা মুক্তি ছিলেন হায়দরাবাদে। প্রচারণা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে ফিরেন। এক মাস দেশে থাকার পর আবারও উড়াল দিচ্ছেন। জানতে চেয়েছিলাম, বাংলাদেশে থেকে এরই মধ্যে কেউ কি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন? ‘আপাতত বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রস্তাব পাইনি। প্রস্তাব পেলে তো অবশ্যই করব। যাকে আগে কথা দেব, তার কাজটি করে ফেলব। সেটা বাংলাদেশ হলে তো বাংলাদেশ, তেলেগু হলে তেলেগুই। এটাই। এমন না যে আমি বাংলাদেশে কাজ করব না!’ বললেন মেঘলা।

মেঘলার পরিবার তাঁকে বেশ সহযোগিতা করছে। বাবা যদিও শুরুর দিকে শোবিজে কাজ করা নিয়ে কথা বলতেন না, কিন্তু এখন মেয়ের কাজে ভীষণ আনন্দিত তিনি। মেঘলা বলেন, ‘পরিবারের জন্য আমি আজ এত দূর আসতে পারেছি। আমি ২০১২ সালে যখন মডেলিং শুরু করি, তখন বাবা আমার সঙ্গে কথা বলতেন না। দেড় বছর এমন ছিল। এখন আমার কোনো সংবাদ প্রকাশ হলে বাবাই খোঁজখবর দেন। ছবির গান দেখা যায় বাসায় সারা দিনই বাজতে থাকে। মা–ও অনেক সহযোগিতাপরায়ণ। দেখা যায়, আমি যদি বাসায় থেকে কয়েক দিন খাওয়াদাওয়া করে মুটিয়ে যাই, তখন মা–ই আমাকে রুটিন করে দেন। বোনও আমাকে অনেক সাপোর্ট করেন।’