সারেগামাপা থেকে ফিরে যা বললেন সিঁথি

২০১২ সালে বাংলাদেশে আয়োজিত ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতার সেরা ১০–এ জায়গা করে নিয়েছিলেন অবন্তী সিঁথি। আর গত বছর থেকে শুরু হওয়া ভারতের কলকাতার জি বাংলার রিয়েলিটি শো সারেগামাপার শেষ ১৪–তে ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়ে চলে এসেছেন বাংলাদেশে। কেমন ছিল দীর্ঘ সাত মাসের সংগীত প্রতিযোগিতার এই সফর? তাঁর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক
অবন্তী সিঁথি। ছবি: কবির হোসেন
অবন্তী সিঁথি। ছবি: কবির হোসেন

‘আপনার বেলায় সব সময় তীরে এসে তরি ডুবে যায়!’
কথায় কথায় হাসির অভ্যাস আছে অবন্তী সিঁথির। এই কথা শুনে কিছু বলার আগে সিঁথি হেসে নিলেন একচোট। কে জানে এই হাসির সময়টুকুতে মাথার ভেতর প্রত্যুত্তরে জানানো কথাগুলো গুছিয়ে নিলেন কি না! হাসি থামলে বললেন, ‘আমি তরি ভেড়াতেই চাইনি। কোনো প্রতিযোগিতাতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোয়নি বা যাইনি। আমি কিছু শিখতে গিয়েছি। এটাতেও তা–ই হয়েছে। ’

এটা কি নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়া? ‘না। সত্যিটাই বলছি। এই যেমন ধরেন, সারেগামাপাতে আমি প্রায় সাত মাস ছিলাম। এই সময়ে গান নিয়ে যতটা জেনেছি বা শিখেছি, এতটা অন্য কোথাও শিখিনি। একটা দারুণ সময় গেছে এত দিন।’ সিঁথি জানান, তিন-চারজন প্রশিক্ষক নিয়মিত গানের চর্চা করাতেন। সকাল থেকে রাত অবধি ছিল সেই চর্চার সময়কাল। এক গান গলায় তুলতে গিয়ে যতটা সময় দিয়েছেন, সেটা যে বৃথা যায়নি, এটা বেশ স্পষ্ট করেই জানালেন তিনি।

প্রশ্ন রাখি, ‘শুধু গান নয়, পুরো সারেগামাপায় অংশ নিয়ে আপনার শেখা যেকোনো পাঁচটি বিষয়ের নাম বলুন তো দেখি—’

একটু সময় নেন। হাতের কর গুনতে গুনতে ‘শিস প্রিয়া’ উপাধি পাওয়া শিল্পী বলেন, এক. উচ্চারণ, দুই. পরিবেশনা, তিন. আত্মবিশ্বাস অর্জন করা, চার. মিউজিক নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা এবং পাঁচ. মিষ্টি খাওয়া। শেষটা বলতে গিয়ে আবার একগাল হাসি।

এসবের সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত করেন সিঁথি। ‘আমার গলাটা আগের চেয়ে বেশ শার্প (তীক্ষ্ণ) হয়েছে। আমি নিজেকে নিজে তো বুঝতে পারি। আর একটা ব্যাপার ঘটেছে সেটা হলো, মানুষ আমাকে আগে অত বেশি চিনত না। কিন্তু এখন চেনে। বাইরে বের হলে এটা টের পাই।’ তাঁকে চেনার ব্যাপারটা টের পাওয়া গেল সাক্ষাৎকার শেষে যখন বাইরে ছবি তুলতে নিয়ে যাওয়া হলো। মানুষের ভিড়, ফিসফাস আর সেলফি তোলার আবদার বলে দিল অনেক কিছুই।

এই চেনাটা বেশ কাজে লাগছে বলে জানালেন সিঁথি। এখন প্রচুর কনসার্টের প্রস্তাব আসছে। সব কনসার্টেই ‘হ্যাঁ’ বলছেন না তিনি। বেছে, দেখেশুনে তবেই হ্যাঁ বলছেন। তবে কনসার্টে গিয়ে অভিজ্ঞতাও কম হচ্ছে না। সবশেষ গিয়েছিলেন চট্টগ্রামের একটি স্কুলের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে। সেখানে গিয়ে দেখেছেন তাঁকে ঘিরে মানুষের উচ্ছ্বাস কতটা!

সেই উচ্ছ্বাসের অনেকটাই তাঁর চোখমুখ ঠিকরে বের হচ্ছে। শুধু কি কনসার্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন নাকি আর কিছু করার পরিকল্পনা আছে? সিঁথি বলেন, ‘অনেক কিছুই করার ইচ্ছা আছে। সবকিছুই গান ঘিরেই। ইচ্ছা আছে একটা গানের দল করার। ইতিমধ্যে অনেকটাই গুছিয়ে এনেছি। আর নিজের ইউটিউব চ্যানেলটা গতিশীল করব। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গান প্রস্তুত করেছি। উপলক্ষ বুঝে সেগুলো মুক্তি দেব। তবে মুক্তি দেওয়ার আগে হবে ভিডিও। এটাই আপাতত চিন্তা।’

আর বিয়ে?
‘সেটা পরিবারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। কাল হতে পারে আবার পরশুও হতে পারে। আমি আপাতত গান নিয়েই ভাবছি। বিয়ে নিয়ে নয়।’ অকপটে বলেন সিঁথি।