'আবেদনময়ী' নয় 'আকর্ষণীয়' সারা

সারা আলী খান
সারা আলী খান

বলিউডের ভেঙে যাওয়া একটি পরিবারের মেয়ে সারা আলী খান। শৈশবেই তাঁর অভিনেতা বাবা সাইফ আলী খান আর অভিনেত্রী মা অমৃতা সিংয়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। একপর্যায়ে সাইফ বিয়ে করেন তারকা অভিনেত্রী কারিনা কাপুরকে। পরিবার ভাঙলেও ভেঙে পরেননি অমৃতা সিং। মেয়ের মনে ফুলের আঁচড় পর্যন্ত লাগতে দেননি। বুঝতে দেননি, সে একটি ভাঙা পরিবারের সন্তান। সেই সারা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে ফিরেছেন বলিউডে। বাবা-মায়ের কর্মস্থলে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ‘কেদারনাথ’ ছবিতে নায়িকা হয়েছেন, ‘সিমবা’ ছবিতে রণবীর সিংয়ের নায়িকা হয়েছেন। সামনে তাঁর ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়। ফিল্মফেয়ারকে খোলামেলা নানা কথা বলেছেন এই নবাগত তারকা।

‘কেদারনাথ’ ছবির গল্পটা আপনাকে ঘিরে। অন্যদিকে ‘সিমবা’ ছবিতে আপনার উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। ছবিটা করতে গেলেন কেন?
প্রতিটি ছবি করার পেছনে আলাদা কিছু কারণ থাকে। আমি বাণিজ্যিক ছবির ভক্ত। আমি রোহিত শেঠির ভক্ত, রণবীর সিংয়েরও ভক্ত। রোহিতের ছবিতে রণবীরের নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। করব না কেন! কিছু কাজ আছে, সেগুলোর সঙ্গে থাকতে পারাটাই সৌভাগ্যের। ছবিতে কাজ করে তৃপ্ত হওয়া আর বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকা দরকার।

কোন ছবিটা করবেন, কোনটা করবেন না, এসব ক্ষেত্রে কোনো পদ্ধতি মেনে চলেন?
আমি তো নতুন। আমাকে প্রত্যয়ী থাকতে হচ্ছে। পরিচালক, চিত্রনাট্য, চরিত্র—এগুলো ভালো লাগলেই আমি রাজি হয়ে যাই। মানুষ কেবল শুক্রবারটিকে নিয়ে কথা বলে, যে শুক্রবারে ছবি মুক্তি পায়। তাঁরা মাথায় রাখে না, কত কত সোমবার, বুধবার আর রোববার চলে যায় শুটিংয়ে। বাড়ির বাইরে অচেনা একটা জায়গায় দিনের পর দিন আমাদের শুটিং করতে হয়। আমি কেবল সততা, নিষ্ঠা আর প্রত্যয়ের সঙ্গে কাজ করতে পারি। এ ছাড়া আমার আর কোনো পদ্ধতি নেই।

আপনার লক্ষ্য কি বড় তারকা হওয়া, নাকি একজন ভালো অভিনয়শিল্পী হওয়া?
আমি খ্যাতিতে বিশ্বাস করি না। তারকাখ্যাতি ব্যাপারটা আমার একটু মজার আর একটু ভয়ের মনে হয়। ব্যাপারটিকে পাত্তা না দিয়েও–বা কোথায় যাব। আমাদের দেশের লোকেরা তারকা পছন্দ করেন। আমরা তারকাদের নিয়ে মেতে থাকি, রীতিমতো মাথায় তুলে রাখি। আমি নিজেই তো শ্রীদেবীর পাগল ভক্ত। আমি মনে করি, তিনিই এই দেশের শেষ তারকা। এখন যাঁদের দেখা যায়, তাঁরা আসলে তারকা নন। কেননা, আমাকে কিন্তু রণবীরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে দেখা যাচ্ছে, সুশান্তের সঙ্গে আড্ডা মারতে দেখা যাচ্ছে, একা নাচ করতে দেখা যাচ্ছে...ইনস্টাগ্রামে সব দেখা যায়। সবই তো প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে। খুব সস্তা হয়ে গেছে সবকিছু। আমি বিশ্বাস করি, আমাকে কতগুলো অর্থপূর্ণ কাজ করতে হবে, যেগুলো লোকের ভেতরে দাগ কাটবে। সেটাই আমার চেষ্টা। আমি সব ধরনের ছবি করতে চাই। আমি ভাগ্যবতী, কারণ নিজেকে তুলে ধরার জন্য পরপর ‘কেদারনাথ’ ও ‘সিমবা’র মতো ছবি পেয়েছি। নিজেকে সুন্দর, আবেদনময়ী, মজার, শিল্পিত, বাণিজ্যিক—সব পরিস্থিতিতে তুলে ধরতে চাই। আমি অভিনয় করতে এসেছি।

আপনি উচ্চাভিলাষী?
খুব খুব খুব উচ্চাভিলাষী। ধিরুভাই আম্বানি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, যেখানে আমি পড়েছি, জায়গাটা খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় খুব সহজে ভর্তি হতে পারার মতো প্রতিষ্ঠান নয়। বলিউডও খুব সহজ বা মজার জায়গা না যে মোটাসোটা একটা মানুষ পায়জামা পরে গিয়ে সেখানে হাজির হলেই সবাই জায়গা ছেড়ে দেবে। আবার কেউ প্রস্তুত হয়ে তারপর সেখানে গিয়ে ঢুকতে পারবে, সেটাও না। এখানে প্রতিনিয়ত নিজেকে বদলের ওপর রাখতে হয়। আমি সেই সুবিধাটা পেয়েছিলাম। নিজের জন্য আমি সবচেয়ে ভালো কাজটা করতে চাই। সহজেই কিছু পেয়ে যাব—সেই আশা আমি করি না।

ভক্তদের কাছ থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পান, বিশেষ করে ছেলেদের কাছ থেকে?
ছেলেদের তোষামোদি আমি পাত্তা দিই না। বিশ্বাস করুন। এটা নিয়ে আমি আর মা প্রায়ই হাসাহাসি করি। আমার ধারণা, আমি একটু ভিতু প্রকৃতির। আমি একটু বেশি উৎসুক, উচ্চকিত আর সঙ্গপ্রিয়। ছেলেদের প্রশংসা বা তোষামোদ আমি টের পেয়ে যাই।

মা অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে সারা আলী খান
মা অমৃতা সিংয়ের সঙ্গে সারা আলী খান

আপনার ভেতরে কিন্তু একটা মেয়েলিপনা আছে। সালোয়ার-কুর্তা পরে আপনাকে মন্দিরের বাইরে প্রসাদ বিতরণ করতে দেখা গেছে।
ছেলেরা তো আজকাল মেয়েদের সালোয়ার পরাটা দেখতেই পারে না। যেমনটা আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি ছোট জামাকাপড়ে। তবে আমি দুই ধরনের পোশাকেই সমান আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু ছেলেরা এ দুই ধরনের পোশাকের ব্যাপারে সমান আগ্রহী নয়।

আপনার আবেদনটা কোথায় তাহলে?
আমি আবেদনময়তা নিয়ে চিন্তিত নই। আমি ‘আবেদনময়ী’ শব্দটিতেও বিশ্বাস করি না। এটা একটু বেশি বেশি। বরং ‘আকর্ষণীয়’ শব্দটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাকে আকর্ষণীয় দেখায় কারণ আমি নকল নই। লোকে চিনে ফেলে এ কারণেই। অন্তত সেই কারণে হলেও আমি আত্মবিশ্বাসী। সেটা আমি যেখানেই থাকি না কেন—সেট, পার্টি, স্টুডিও, মিটিং বা স্কার্ট পরে রাস্তায় হাঁটলেও।

রূপের যত্নে আপনি নাকি দাদিদের পথ বেছে নিয়েছেন?
বাজারের পণ্যে আমার বিশ্বাস নেই। ধরুন মুখে যদি ফল, মাখন, মধু ব্যবহার করেন কিংবা মুখে ঘষার জন্য প্রাকৃতিক জিনিস হিসেবে বাদাম বা ওটস ব্যবহার করেন, তাতে ত্বক চকচক করবে। চুলের জন্য ঘৃতকাঞ্চন দারুণ। লোকে হয়তো হাসতে পারে, মেথি আর পেঁয়াজ কিন্তু চুলের জন্য খুবই ভালো। এগুলো ব্যবহার করলে চুল এত সুন্দর লাগবে যে আপনার আলোকচিত্রী খুশি হয়ে যাবে। তবে সহশিল্পী সহ্য করতে পারবে না। বাজি ধরতে পারেন। পেঁয়াজের গন্ধওয়ালা চুল নিয়ে কাছে যাওয়ার জন্য সুশান্ত আর রণবীরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম।

তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন নাকি?
(হাসতে হাসতে) হ্যাঁ, করেছিলেন। আমিই গিয়ে বলেছিলাম যে চুলে পেঁয়াজের রস দিয়েছি। একটাই তো গানের শুটিং। কষ্ট করে একটু সহ্য করেন। তাঁদের ভাবটা এমন ছিল, ‘কেন পেঁয়াজ লাগিয়ে এসেছ’, আর আমি ভাব করছিলাম, ‘সুন্দর লাগছে না!’ রণবীর আমাকে কৈলাস জীবান নামের একটা জিনিসের কথা বললেন, সেটা নাকি ভালো। ব্যস্ততা থাকলে রণবীর সেটা ব্যবহার করেন। আমি সেটা প্রতিদিন ব্যবহার করতে থাকলাম। দেখে রণবীর হতবাক। বললেন, ‘প্রতিদিন দিচ্ছ, খারাপ না।’

জাহ্নবীর (কাপুর) সঙ্গে আপনার বেশ উষ্ণ সম্পর্ক...
কলেজে পড়ার সময় থেকে জাহ্নবীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। সে সময় আমি আমার ৯৬ কেজি শরীর নিয়ে একটু ঝামেলার মধ্য ছিলাম। তাঁর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে আড্ডা হতো। আমি সব সময় তাঁকে শুভকামনা জানাই। ইদানীং দুজনেই খুব ব্যস্ত থাকি বলে তাঁর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ তেমন হয় না। তবে দেখা হলে একে অন্যের কাজ নিয়ে ভালো-মন্দ আলাপ হয়। একসময় আমাদের দুজনের মধ্যে তুলনা করা হতো। এই তো কদিন আগেও ইনস্টাগ্রামে একজন লিখল, শাড়িতে কাকে বেশি সুন্দর লাগে? এটা আগে একটা অর্থহীন ব্যাপার ছিল। এখন অবশ্য করা যেতে পারে। কারণ, এখন সেও ছবি করে ফেলেছে, আমি করেছি।

কখন মনে হলো, আপনি অভিনয়শিল্পী হতে চান?
এ রকম কোনো দৈবিক মুহূর্ত আমার আসেনি। পেছনের দিকে তাকালে মনে পড়ে, চার-পাঁচ বছর বয়সে আমি বলিউডের গানের সঙ্গে নাচ করতাম, নিজে নিজে গাইতাম। বাড়িতে বসে বসে বিজ্ঞাপনের নকল করতাম। এমনকি ‘নিরমা’ উচ্চারণ করতেই পারতাম না, বলতাম ‘মিরমা’। স্কুলে ভর্তির সময় মা বলেছিলেন, খুব ভদ্রভাবে কিছু বলতে বললে কীভাবে বলবে? আমি বলতাম ‘দামা দাম মাস্ত কালান্দার, আলিদা প্যাহলা নাম্বার’। সবাই ভাবত, আমি একটা ক্র্যাক বাচ্চা। যত দূর মনে পড়ে, ছোট থেকেই আমি এসব করতাম।

আপনি সিনেমায় নাম লেখাচ্ছেন জানার পর বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
পড়াশোনা ভালোবাসে—এমন মেয়ে ছবি করতে যাচ্ছে, এটাই ছিল তাঁদের জন্য আশ্চর্যের বিষয়। আমি যখন কলাম্বিয়া গেলাম, লোকে বাবা-মাকে সতর্ক করেছিল যে এই মেয়ে কিন্তু পয়সা নষ্ট করতে যাচ্ছে। সে ডিগ্রি নিয়ে ফিরবে ঠিকই, কিন্তু সিনেমায় গিয়ে ঢুকবে। আমার বাবা-মা তো ভণ্ড না। তাঁদের আজ যা আছে, সবই এই ইন্ডাস্ট্রি তাঁদের দিয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁরা সচেতন আর কৃতজ্ঞ। তাঁরা নিজেদের কাজকে ভালোবাসেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এটাই তাঁদের সবচেয়ে ভালো কাজ। আপনি যখন এই পৃথিবীর একটি অংশ, সুতরাং আপনাকে একটা ভারসাম্য বজায়ে রাখতেই হবে। তাঁরা জানতেন, তাঁদের সমর্থন পেলে আমি সেটা ধরে রাখবই।

‘কফি উইথ করণ’ অনুষ্ঠানে করণ জোহর, সারা আলী খান ও সাইফ আলী খান
‘কফি উইথ করণ’ অনুষ্ঠানে করণ জোহর, সারা আলী খান ও সাইফ আলী খান

মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে শোবিজে আসতে কেউ বারণ করেনি?
বারণ করেনি। বরং সিনেমায় আসাটা আমার জন্য বিভ্রান্তিকর ছিল। আমার ওজন ছিল ৯৬ কেজি। নিজের চেহারার ব্যাপারে একদমই আত্মবিশ্বাস ছিল না আমার। কিন্তু পড়ালেখায় আবার ভীষণ স্মার্ট ছিলাম। শিক্ষকেরা ভালোবাসতেন, কারণ বেশি নম্বর পেতাম। বন্ধুরা পছন্দ করত, কারণ আমি ছিলাম মজার একটা মেয়ে, তাঁদের হোমওয়ার্কে সহযোগিতা করতাম। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া একটা মোটা আর মেধাবী মেয়ের পক্ষে সিনেমায় আসার চিন্তা করাটা কঠিন, যদি সেটা নিজে থেকে ঠিক না হয়। মোটা হওয়ায় খুব একটা অসুবিধা বোধ করতাম না। অথচ যে কাজে নেমেছি, সেখানে হরমোনালি, ইমোশনালি আর ফিজিক্যালি মোটা হওয়া খুব খারাপ। মোটা হওয়ায় মাথার মধ্যে একটা বাজে যুক্তি নিয়ে ঘুরতাম, যেমন: ‘সাতটা বিষয়ে যদি এ গ্রেড পেতে পারি, তাহলে আমি পাঁচটা পিৎজা কেন খাব!’ ভাবতাম, আইনজীবী হয়ে যাব, ডাক্তার হয়ে যাব কিংবা হোয়াইট হাউসে গিয়ে উঠব। এই সব আরকি।

৯৬ কেজি থেকে ছিপছিপে হয়ে গেছেন, এটা একটা অর্জন বটে!
অবশ্যই। এখন আমার ওজন ৫৫ কেজি। শিগগির ৫৪ হয়ে যাবে। আমি এখন আর সেই মেয়েটি নেই। নিজের পুরোনো ছবি দেখলে এখন ভাবি, কী সব চিন্তা করতাম একদিন! একে তো আমি ভোজনরসিক, তার ওপর ওজন কমিয়েছি। যেনতেন কথা নয়! আপনি যখন খুব করে কিছু চাইবেন, সেটা অসম্ভব নয়।

খুব ছোটবেলায় আপনার বাবা-মা আলাদা হয়ে যান। এ নিয়ে কোনো কষ্ট আছে?
না।

সন্তান হিসেবে বিষয়টা আপনার কাছে কেমন মনে হয়?
শৈশবেই আমি বুঝেছিলাম, এভাবেই তাঁরা ভালো আছেন। একসঙ্গে বা আলাদা থাকার মধ্যে আমি তেমন কোনো পার্থক্য বুঝিনি। আমি তো খুব অসুখী, অস্থির এবং বিষাক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারতাম। কিন্তু আজ আমি পৃথিবীর সেরা মায়ের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ, সুখী, স্বাস্থ্যকর একটা পরিবেশে বড় হচ্ছি। বন্ধুরা জিজ্ঞেস করে, ছুটির রাতে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া মিস করি কি না। প্রতিরাতে ব্যায়াম করে ফেরার পর আমি মায়ের সঙ্গে সময় কাটাই। প্রতি রাতেই পায়জামা পার্টি হয় আমাদের, দারুণ লাগে সেটা। বাবা কখনোই বুঝতে দেন না যে আমরা একসঙ্গে নেই। তিনি সব সময় ফোন করেন। রাতের খাবার বা কফির জন্য তিনি সব সময় প্রস্তুত। তাহলে কী মিস করব, কেন মিস করব? দুজন সুখী বাবা-মায়ের সঙ্গে আমি দুটি পরিবার পেয়েছি। প্রত্যেকের আলাদা করে একটা বড় ক্ষতির বদলে এটা বরং ভালো হয়েছে।

কে বেশি কাছের, বাবা নাকি মা?
মা। তিনিই আমার পৃথিবী। তাঁকে ছাড়া আমি অচল। ‘কোন পোশাকটি পরব’ থেকে শুরু করে ‘এই ট্রেলার ভালো লাগল কীভাবে’, ‘ছেলেটা দারুণ না’...সব শেয়ার করি। তিনি সব বিষয়ে মত দেন। মায়ের খুব নেওটা আমি, আবার দুজনের খুব ঝগড়াও হয়। লোকে হাঁ করে আমাদের কাণ্ড দেখে।

বাবার কোন ছবিটা আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে?
‘হাম তুম’ আমার বেশি ভালো লেগেছে। এমনকি ‘সালাম নমস্তে’ ছবিতেও তাঁকে খুব মজার লেগেছে। আবার যখন তাঁকে ‘ওমকারা’ বা ‘সেক্রেড গেমস’-এ দেখি, তখন ভরসা তৈরি হয়। তিনি এত মেধাবী একজন অভিনেতা, যেকোনো চরিত্রে তিনি মিশে যেতে পারেন।

আর মায়ের?
মায়ের ছবি আমি দেখিনি। আমি বড় হয়ে উঠতে উঠতে তিনি কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর কিছু পুরোনো ছবি দেখেছি। তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে তেমন ভালো নন, কিন্তু ‘ওয়ারিশ’ ছবির ‘মেরে পেয়ার কি ওমর’ গানে তাঁকে খুব সুন্দর লাগছিল।

বাবা-মায়ের চরিত্র থেকে আপনি কী পেয়েছেন?
বাবার কাছ থেকে পেয়েছি মন, মায়ের কাছ থেকে হৃদয়। এসবই আমাকে সুন্দর করেছে। বাকি যা আমার নেই, সেসব আমি গড়ে নেব।

সৎমা কারিনার ব্যাপারে কী বলবেন?
আমি তাঁর মারাত্মক ভক্ত। আজ পর্যন্ত আমার কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে ‘পু’ থেকে শুরু করে ‘কাভি খুশি কাভি গম’-এর নায়িকা আমার সৎমা! শ্রীদেবীর পরেই আমি কারিনা কাপুরের ভক্ত। আমি মনে করি, আমার বাবাকে যে ভালো রাখতে পারে, সে আমার কাছে ভালো। বাবাকে যে ভালোবাসবে, আমিও তাকে ভালোবাসব। সে কে, সেটা আমার জানার দরকার নেই। বাবা মনে করেন, আমি আর কারিনা ভালো বন্ধু। আমাদের দুজনের সম্পর্ক মর্যাদার। কারিনাকে গ্রহণ করতে সহজ হয়েছে, কারণ আমার মা আমাকে বুঝিয়েছিলেন, সব ঠিক আছে। বাবার বিয়েতে তিনিই আমাকে সাজিয়ে দিয়েছিলেন। এ-ই যখন পরিবেশ, তখন সবকিছু ঠিক থাকতে বাধ্য।

পেশার নির্মম দিকগুলোর ব্যাপারে আপনি কতটা প্রস্তুত?
সব ইন্ডাস্ট্রিতে নির্মমতা আছে। আমার বাবা-মা জীবিত আছেন, তাঁরা আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমি জানি, আমার মা খুব রক্ষণশীল, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান। তিনি আমার মাথার ওপরে আছেন। আশা করি, আমি ভালো থাকব। সব জিনিসের অন্ধকার দিক আছে। সেটা ছাড়া দুনিয়াটা ভালো লাগবে না।