দর্শকেরা গ্রহণ করলেই অভিনয়ের সার্থকতা: জ্যোতি সিনহা

স্যামুয়েল বেকেটের নাটক ‘হ্যাপি ডেজ’ মঞ্চে এসেছে ফরাসি দূতাবাসের প্রযোজনায়। প্রথম মঞ্চায়ন থেকেই প্রশংসিত হচ্ছে নাটকটি। এটি আজ থেকে দুই দিন প্রদর্শিত হবে নাটমণ্ডলে সাড়ে পাঁচটায় ও সাড়ে সাতটায়। এতে অভিনয় করেছেন জ্যোতি সিনহা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শুভাশিস সিনহা। নাটকটি নিয়ে কথা হয়েছে জ্যোতির সঙ্গে—

জ্যোতি সিনহা
জ্যোতি সিনহা

‘হ্যাপি ডেজ’ নাটকের অভিজ্ঞতা বলুন...
অভিজ্ঞতা খুব ভালো। এটা আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। এতে অভিনয়ের ধরনটা আলাদা। দর্শকেরা আমাকে গ্রহণ করেছেন। দর্শকেরা গ্রহণ করলেই অভিনয়ের সার্থকতা। কাজটি করে প্রত্যেক দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। তাঁরা নিজেদের ভেতরে অনুভব করেছেন এক নিঃসঙ্গ মানুষ বাস করে। আসলে এই সময়ে পৃথিবীতে সব মানুষই একা হয়ে পড়ছে। এবং একা মানুষটাকে অনুভব করতে পেরেছে। সেই অনুভূতিটা আমি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। এখানেই সার্থকতা।

একক অভিনয়ের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ কী মনে হয়? 
আট বছর পর আবার একক অভিনয় করলাম। এর আগে করেছিলাম কহে বীরাঙ্গনা। একক অভিনয়ে অনেক চ্যালেঞ্জ। একজনকেই পুরো স্টেজে পুরো সময় অভিনয় করতে হয়, দর্শককে ধরে রাখতে হয়। তবে এই দুটি নাটকের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। কহে বীরাঙ্গনায় মঞ্চের নানা জায়গা ব্যবহার করা যায়, কিন্তু হ্যাপি ডেজ নাটকে একটা গর্তের মধ্যেই অভিনয়টা করতে হয়।

‘অ্যাবসার্ড’ নাটক দিয়ে দর্শকের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কতটুকু সফল হয়েছেন? 
এটা অ্যাবসার্ড নাটক। ওয়েটিং ফর গডো যেমন, এটিও তেমন। কিন্তু আমরা পুরো ‘অ্যাবসার্ড’ নাটককে ভেঙে দর্শকের সঙ্গে যোগাযোগের জায়গাটা তৈরি করতে চেয়েছি। এর পুরো কৃতিত্ব নাটকের নির্দেশক শুভাশিস সিনহাকে দিতে চাই। কারণ, তিনি নিজে একজন কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক। সুতরাং সাহিত্যজগতের প্রায় সব জায়গা নিয়েই যেহেতু ভাবেন, সংলাপগুলো অসংলগ্ন হলেও কীভাবে যুক্তিসংগতভাবে ঠিক জায়গায় উপস্থাপনের মাধ্যমে দর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করাতে হয়, সেটি করেছেন।

এই সময়ে থিয়েটারের প্রতিবন্ধকতা কী মনে হয়? 
প্রতিবন্ধকতা হলো, শিল্পীকে ধরে রাখা। আমরা খুব একটা বন্ধ্যা সময় পার করছি। সব জায়গায় উন্নতি হচ্ছে, সেই জায়গায় থেকে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আরও উন্নয়ন দরকার। রাষ্ট্র চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আগে সবার যে তাগিদ ছিল ওই তাগিদটা যেন শিথিল। রাষ্ট্রের আরও ভাবা উচিত। মানবিক ব্যাপারগুলো উঠে যাচ্ছে। থিয়েটার তো মানবিকতা শেখায়। গণমানুষের কাছে এই শিল্পমাধ্যমের মাধ্যমে পৌঁছানো যেতে পারে। তা ছাড়া থিয়েটারে পেশাদারির দিকটাও এখন ভাবা উচিত।