মোদিকে নিয়ে ছবির ছাড়পত্রের জন্য লড়াই!

‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ ছবির দৃশ্যে বিবেক ওবেরয়
‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ ছবির দৃশ্যে বিবেক ওবেরয়

‘ন্যায়বিচার পেয়েছে “পিএম নরেন্দ্র মোদি”।’ এমনটাই জানিয়েছেন চলচ্চিত্রটির প্রযোজক আনন্দ পণ্ডিত। ছবিটি ভারতীয় সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি) থেকে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সিনেমাটি ছাত্রপত্র পাবে কি পাবে না, তা নিয়ে জমাট বাঁধা মেঘও কেটে গেছে। কয়েক বছর ধরেই বলিউডে বায়োপিক নির্মাণের ধুম পড়েছে। নরেন্দ্র মোদির বায়োপিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিবেক ওবেরয়।

রাজনীতিবিদের জীবনীনির্ভর ছবিটি নিয়ে কম রাজনীতি হয়নি! বিরোধীপক্ষ ইতিমধ্যে পরিচালক ওমাং কুমারকে সমালোচনার বাণে বিদ্ধ করেছে। বলা হচ্ছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে জনগণকে ‘ভুল পথে’ পরিচালিত করে ভোট আদায় করতে চায় বিজেপি। কংগ্রেস তাই এই সিনেমাকে ঠেকাতে ট্রেলার মুক্তির দিনই হাইকোর্টে মামলা ঠুকে দেয়। নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি দেখবে বলে জানিয়েছিল। বাধ্য হয়ে ছবি মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দেন প্রযোজকেরা। সেখান থেকেই সিনেমাটি মুক্তি ‘পাবে’ না ‘পাবে না’—এ রকম একটা দোলাচলের সৃষ্টি হয়। অবশেষে জয় হয়েছে বিবেক ওবেরয়দের। সব ধোঁয়াশা কেটে গেল গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর ঘোষণায়, ‘কংগ্রেসের সেই আবেদন বাতিল করা হয়েছে!’

সিবিএফসি ১৩০ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের এই চলচ্চিত্রকে বিনা কর্তনে ‘ইউ’ সার্টিফিকেট দিয়েছে। জানা গেছে, সিবিএফসি চার ধরনের ছাড়পত্র দেয়। ‘ইউ’র পূর্ণ রূপ ইউনিভার্সাল। অর্থাৎ ছবিটি সবাই দেখতে পারবে। ‘এ’র মানে ছবিটি দেখার জন্য দর্শকের বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৮। ‘ইউ/এ’র মানে দর্শকের বয়স যদি ১২-এর কম হয়, তাহলে তাকে অভিভাবক সঙ্গে নিয়ে দেখতে হবে। আর ‘এস’ সার্টিফিকেট পাওয়া ছবিগুলো বিশেষ দর্শকেরা দেখতে পারবেন না। ছবিটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার মুক্তির জন্য প্রস্তুত। আর ১১ এপ্রিল থেকেই শুরু হচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। সাতটি ধাপে ১৯ মে পর্যন্ত চলবে এই ভোট গ্রহণ।

বিবেক ওবেরয় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
বিবেক ওবেরয় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ ছবির আরেক প্রযোজক সন্দীপ সিং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা ইউ সার্টিফিকেট পাওয়ায় খুবই খুশি। অবশেষে ছবিটি আগামীকাল (১১ এপ্রিল) মুক্তি পাচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালত বিরোধীপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় আমরা খুব স্বস্তি অনুভব করছি। এটা এখন সবদিক থেকেই স্পষ্ট। আমার মনে হয়, ভারতের আর কোনো রাজনৈতিক দলের এই বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। কেননা নির্বাচন কমিশন, সিবিএফসি আর সর্বোচ্চ আদালত তাদের (কংগ্রেসের) আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।’

এরই মাঝে কংগ্রেসকে দুর্বল দেখাতে তৈরি হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নিয়ে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল পিএম’। ভোটের আগে মোদির বায়োপিক হতে চলেছে কামারের শেষ ঘা। তার আগে কানাঘুষা, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় সিনেমাটি প্রমোদ করমুক্ত হতে চলেছে।