ক্র্যাক প্লাটুনের কনসার্টে রকস্টার পরমব্রত

‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়

ক্র্যাক প্ল্যাটুন, একটি ব্যান্ডের নাম। কনসার্টের মঞ্চে কালো পোশাক আর গিটার কাঁধে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য রকস্টার পরমব্রত। তিনি গান গাইছেন। মঞ্চের সামনে উপচেপড়া দর্শক। মুহুর্মুহু তালি আর গানের সঙ্গে সবাই নাচছে। দৃশ্যটি দেখা গেল এফডিসির চার নম্বর ফ্লোরে। বাস্তবের কোনো ঘটনা নয়, তবে সত্যিকারের কনসার্টের মতো করেই সাজানো হয়েছে ফ্লোরটি। এখানে ‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রের শুটিং হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এখানে একটি কনসার্টের দৃশ্য ধারণ করা হয়। শুটিংয়ে অংশ নেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ভারতে বাংলা ছবির এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক তিনি।

‘আজব কারখানা’ চলচ্চিত্রে রকস্টার চরিত্রে অভিনয় করে পরমব্রত দারুণ উচ্ছ্বসিত। তিনি নিজেও গান করেন। বললেন, ‘রকস্টার বলতে আমরা এক রকম চেহারা ভাবি। তবে রকস্টারের সংজ্ঞা কিন্তু স্থান ও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়। সে যা ইচ্ছা, তা-ই করতে পারে। সেটা কিন্তু ভারতের কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশে সব সময়ই বেশি। সোলস, মাইলস, আর্টসেল, ওয়ারফেজ, আইয়ুব বাচ্চু—ছোটবেলা থেকে এই নামগুলোর সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদের গান নিয়মিত শোনা হয়। হেভি মেটাল বা হার্ড রক গানের চর্চা কলকাতার তুলনায় ঢাকায় বেশি হয়। যখন ছবিটিতে কাজ করার ব্যাপারে আলাপ হলো, তখন চোখের সামনে অনেক স্মৃতি ভেসে ওঠে। কনসার্টে বাংলাদেশের রকস্টারদের যে চেহারাগুলো দেখেছি, এবার তা নিজের মধ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি।’

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকগান আর রক গানের মেলবন্ধন নিয়ে তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘আজব কারখানা’। পরিচালক শবনম ফেরদৌসী। ছবিটি তৈরির জন্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়েছে। ছবিতে অভিনয় করছেন শাবনাজ সাদিয়া ইমি ও দোয়েল। গত ১৫ মার্চ থেকে ময়মনসিংহের কেন্দুয়া, কুষ্টিয়া আর ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির কাজ হচ্ছে।

শবনম ফেরদৌসী বললেন, ‘“আজব কারখানা” আমার অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি করছি। আমি সব সময় জানার চেষ্টা করেছি, আসলে শিল্পী কে? প্রকৃত শিল্পের কথা বলি, সেটা আসলে কোনটা? এই ছবিতে আমি তা-ই খোঁজার চেষ্টা করছি।’

পরমব্রতকে নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা তিনি বলেছেন এভাবে, ‘পরমব্রত বুঝতেই দেয়নি ও একজন বড় মাপের অভিনেতা। নিজের চরিত্রের ব্যাপারে তাঁর আন্তরিকতা আর নির্মাতার সঙ্গে বোঝাপড়ার বিষয়টি চমৎকার। দিনে দিনে ও যে ছবির রকস্টার হয়ে উঠছে, এটাই আমার জন্য আনন্দের। চরিত্রটির ভেতর ঢুকছে, প্রতিনিয়ত দারুণভাবে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে। আশা করি, দর্শকের কাছেও তা ভালো লাগবে।’

ছবিটির অন্যতম প্রযোজক সামিয়া জামান বলেন, ‘এর আগে যতগুলো ছবি করেছি, তার মধ্যে এই ছবিটি বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সেট ফেলে শুটিংয়ের ঝক্কি তো আছেই, আবার টাকারও ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। তবে সবকিছু পেরিয়ে এ পর্যন্ত ছবিটির যতটুকু কাজ হয়েছে, তাতে আশা করছি, দর্শকদের একটি ভালো ছবি উপহার দিতে পারব।’