আমি আমার বাবার জন্য গর্ব বোধ করি

বলিউডে পা রাখলেন আরেক তারকা–কন্যা। নবাগতা এই সুন্দরী হলেন বলিউড অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডের কন্যা অনন্যা। তাই ক্যারিয়ারের শুরু থেকে তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ‘স্বজনপ্রীতি’ শব্দটা। কিন্তু এ নিয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। করণ জোহরের স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু ছবি দিয়ে তাঁর বলিউডে অভিষেক হতে চলেছে। বলিউডের নবাগতা দুষ্টুমিষ্টি নায়িকা অনন্যা পান্ডের মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য
অনন্যা পান্ড
অনন্যা পান্ড

‘স্বজনপ্রীতি’—নিশ্চয় এই শব্দটার সঙ্গে বারবার মুখোমুখি হতে হচ্ছে? এর মোকাবিলা করছেন কীভাবে?
‘স্বজনপ্রীতি’ শব্দটা যাঁরা ব্যবহার করতে চান, তাঁরা করতে পারেন। এ নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমি পরিশ্রমের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা বানাতে চাই। আমি আমার বাবার জন্য গর্ব বোধ করি। তাঁর বাবা-মা ডাক্তার ছিলেন। বাবা অনেক পরিশ্রম করে অভিনেতা হয়েছেন। তাঁর এই পরিশ্রমকে হাতিয়ার করে আমি আমার নাম–যশ বানাতে চাই না। আর স্বজনপ্রীতি শুধু বলিউডে নয়, সব ক্ষেত্রেই আছে।

বাবাকে দেখেই কি অভিনয়জগতে আসার ইচ্ছা?
ফিল্মের পোকা আমার মধ্যে বরাবরই ছিল। ছোটবেলায় আমি, সুহানা (শাহরুখ খানের মেয়ে), সানায়া (সঞ্জয় কাপুরের মেয়ে) অভিনয় অভিনয় খেলতাম। আমরা নিজেদের মায়েদের নকল করতাম।

অভিনয়ের তথাকথিত কোনো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কি?
শুটিং সেটের থেকে ভালো ট্রেনিং আর কোথায় হতে পারে? আমি শাহরুখ খানের ছবি রইস-এর সেটে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি। আমার দায়িত্ব ছিল দ্বিতীয় সারির অভিনেতাদের ভ্যান থেকে সেটে ডেকে নিয়ে আসা। আমার দারুণ মজা লেগেছিল। আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলাম। রইস-এর কারণে আমি প্রথমবার কোনো ফিল্মের সেটে গিয়েছিলাম। এর আগে শাহরুখ খানের সঙ্গে আমার দেখা–সাক্ষাৎ হতো সুহানার বাবা হিসেবে। রইস ছবির মাধ্যমে আমি অভিনেতা শাহরুখ খানকে দেখেছি।

স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু ছবির দৃশ্যে টাইগার শ্রফ ও অনন্যা
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার টু ছবির দৃশ্যে টাইগার শ্রফ ও অনন্যা

প্রতিবছর আইপিএলের সময় শাহরুখ খানের সঙ্গে আপনাকে মাঠে দেখা যায়। এ বছর নিশ্চয় মিস করছেন?
শাহরুখ খানের সঙ্গে আমি সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম। এ বছর আমি আমার ছবির প্রচারের কাজে ব্যস্ত। আর সুহানা লন্ডনে পড়াশোনা করছে। তাই চাইলেও এ বছর আমরা আইপিএল ম্যাচ দেখতে পারছি না। তবে ফোনে আমরা একে অপরের সঙ্গে আইপিএল নিয়ে আলোচনা করি।

প্রথম শটের সময় কতটা নার্ভাস ছিলেন?
পরিচালক পুনিত মালহোত্রা খুবই মিষ্টি স্বভাবের। তিনি প্রথমেই বলে দিয়েছিলেন যে তারা (সুতারিয়া) এবং আমার প্রথম শট একা একা। কারণ আমরা দুজনই নতুন। ওই দিন সেটে খুব মজা হয়েছিল। কারণ আউটডোর শুটিং ছিল। তার ওপর বৃষ্টিও হয়েছিল। তবে প্রথম শটে আমি ভালোভাবে উতরে যাই।

বাবার থেকে অভিনয়–সংক্রান্ত কোনো টিপস নেননি?
বাবা আমাকে অভিনয়–সংক্রান্ত কোনো উপদেশ কোনো দিনই দেননি। তবে বাবার ব্যক্তিত্ব থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তিনি কখনো সফলতা বা ব্যর্থতা দ্বারা প্রভাবিত হননি। বাবা যেকোনো পরিস্থিতির মধ্যে আনন্দে থাকতে ভালোবাসেন। তিনি কোনো দিন কোনো ফ্যানকে নিরাশ করেন না। বাবা রেস্তোরাঁয় বসে যখন খাবার খান, তখনো ফ্যানদের আবদার মেটান। বাবা ড্যান্সার হিসেবে মোটেই ভালো ছিলেন না। তবে তাঁর অভিব্যক্তি দারুণ ছিল। আমি তাঁর থেকে এটা শিখেছি।

ছাত্রী হিসেবে আপনি কেমন ছিলেন?
আমি খুবই পড়ুয়া ছিলাম। ধীরুভাই ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে আমি পড়তাম। বকাঝকা খেতে একদম পছন্দ করি না। তাই সবকিছু আমি খুব ভালোভাবে করতাম। শিক্ষকদের সব কথা শুনতাম। আমি কখনো ফাঁকি দিতাম না। এই ছবির চরিত্র থেকে আমি একদম আলাদা ছিলাম।

আলিয়ার ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’কে ঘিরে কোনো স্মৃতি?

এ ছবিটা যখন মুক্তি পায়, তখন আমার বয়স ১৪ কি ১৫ বছর হবে। আমার বাবা-মা ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীর জন্য যাচ্ছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ ছিল প্রদর্শনী। ছোট ছিলাম তাই অত রাতে বাবা-মা নিয়ে যাচ্ছিলেন না। আমি সেদিন যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করি। অবশেষে আমি ছবিটা দেখেছিলাম। আর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমাকে সানায়ার (ছবিতে আলিয়া ভাটের চরিত্রের নাম) মতো হতে হবে।