'চিকনি চামেলি'র মতো কিছু আর করতে চাই না: ক্যাটরিনা

>বলিউডে ঈদ মানেই ‘ভাইজানের’ ছবি। তাঁর লাখ লাখ অনুরাগী অপেক্ষায় থাকেন। এবারও ঈদে মুক্তি পাচ্ছে সালমান খান অভিনীত ছবি ভারত। তাঁর সঙ্গে আছেন বলিউডের এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ। পর্দায় তাঁদের জুটি সব সময় দর্শকের মন জয় করেছেন। এবার কতখানি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন তাঁরা। এসব জানতেই আলী আব্বাস জাফর পরিচালিত ভারত ছবির এই জুটির মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য
ক্যাটরিনা কাইফ ও সালমান খান
ক্যাটরিনা কাইফ ও সালমান খান

প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে ভারত ছবির জন্য প্রথম প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এ কথাও শোনা গেছে, পরিচালক আলী যখন এই ছবির গল্প লিখছিলেন, তখন নাকি আপনার কথা মাথায় ছিল?

সত্যি বলতে আমার জানা নেই যে কে প্রথম পছন্দ ছিল আর কে দ্বিতীয়। টাইগার জিন্দা হ্যায় ছবির শুটিংয়ের সময় আলীর সঙ্গে আমার এই ছবির ব্যাপারে কথা হয়েছিল। তবে আমার মাথায় ছিল, সালমানের সঙ্গে ছবি মানে আলী হয়তো নতুন কোনো নায়িকা নিয়ে কাজ করবে। আমাকে বারবার রিপিট করবে কেন? প্রিয়াঙ্কা ব্যক্তিগত কারণে ছবিটা করতে পারেনি। এর পরের কাহিনি সবার জানা। আমার মনে হয় ছবিটা আমার ভাগ্যেই ছিল। ছবির চিত্রনাট্য পড়ে আমার দারুণ লাগে। আমি আলীকে বলেছিলাম যে এটা ওর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা ছবি হতে চলেছে।

জিরো ছবিতে আপনার অভিনয় সবাই পছন্দ করেছে। এই ছবিতে একজন অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কি আবারও প্রমাণ করতে পারবেন?

অভিজ্ঞতা যত বাড়ে, একজন অভিনেত্রী তত সমৃদ্ধ হয়। মানুষ জীবন থেকে শেখে। অভিজ্ঞতা কাজের জগতে পরিপূর্ণতা আনে। খুব ভালো লাগে যখন সবাই আমার কাজের প্রশংসা করে। আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আরও ভালো চরিত্রে অভিনয় করার অনুপ্রেরণা পাই।

একজন অভিনেত্রী হিসেবে কোনটাকে বিশেষ গুরুত্ব দেন—বক্সঅফিস সফলতা, নাকি সমালোচকদের সমালোচনা?

আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান বক্সঅফিস। কারণ, এটা দর্শকের হাতে। তাঁরাই ফয়সালা করেন। বক্সঅফিসের সফলতা মানে দর্শক আপনার ছবিতে সাড়া দিচ্ছেন। দর্শকের জন্যই ছবি বানানো হয়। চিত্রসমালোচকদের জন্য বা পুরস্কারের জন্য ছবি বানানো হয় না। দর্শক তো চাই। এরপর বাকি সব বোনাস।

১৬ বছরের এই অভিনয়জীবনকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমার মনে হয়, একজন মানুষ হিসেবে আমার যে সফর হয়, পেশাগত সফরের থেকে আলাদা নয়। আমি এখন অন্য ধারার চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতে চাই। নিজেকে নতুন নতুনভাবে আবিষ্কার করতে চাই। গ্ল্যামারাস চরিত্রের বাইরে নিজেকে দেখতে চাই। আমি এখন এমন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যাতে গভীরতা আছে, নারীসুলভ আবেগ আছে। একটা সময়ে ‘শীলা কি জাওয়ানি’, ‘চিকনি চামেলি’র মতো কাজ করেছি। কিন্তু এখন আর তা করতে চাই না। ওই সময় দাঁড়িয়ে ওই চরিত্রগুলো ঠিক মনে হয়েছিল, তা–ই করেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হয় না। তাই আর করতে চাই না।

একসময় আপনার হিন্দি নিয়ে রীতিমতো সমালোচনা হতো। এখন আপনার হিন্দি অনেক ভালো। এ ব্যাপারে কী বলতে চান?

আমি অনেক পরিশ্রম করেছি আমার ভাষা নিয়ে। ভালো লাগে সবাই যখন আপনার পরিশ্রমকে গুরুত্ব দেয়। আমি সব সময় বলে এসেছি যে ইংরেজি আমার প্রথম ভাষা। এমন অনেক হলিউড অভিনেত্রী আছেন, যাঁরা ইংরেজি ছবি করেন, কিন্তু তাদের প্রথম ভাষা স্প্যানিশ। তাঁদের উচ্চারণে হালকা স্প্যানিশ টানও চলে আসে। এর মধ্যে কোনো অন্যায় নেই। আমার ক্ষেত্রেও তা–ই হয়। তবে আমি এখন হিন্দিকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি। এর ফলে দৃশ্যগুলো ভালো করে করতে পারি। এখনো আমি হিন্দি শিখছি। সব ছবির সেটেই আমার সঙ্গে উচ্চারণের জন্য একজন প্রশিক্ষক থাকেন।

শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় ক্রীড়াবিদ পিটি ঊষার বায়োপিকে আপনি কাজ করতে চলেছেন?

হ্যাঁ, এই ছবির ব্যাপারে একটা মিটিং হয়েছে। তবে এখনো চুক্তিবদ্ধ হইনি। আমি শুধু বায়োপিক ছবির অংশীদার হতে চাই না। ছবির গল্প আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

 শুনলাম, সৌন্দর্য প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসা শুরু করতে চলেছেন।

হ্যাঁ, তা করছি। তবে এ ব্যাপারে এ বছরের শেষের দিকে বিস্তারিত বলব।

সালমান খানের সঙ্গে আপনি একাধিক ছবি করেছেন। তাঁর কোন কোন গুণ আপনাকে আকৃষ্ট করে?

সালমানের সবচেয়ে ভালো গুণ তিনি ভয়শূন্য। আমার মনে হয়, এই শিক্ষা তাঁর কাছ থেকে সবার নেওয়া উচিত। তাঁর সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক কথা কেউ লিখলে বা বললে এটা সালমানের ওপর প্রভাব ফেলে না। আমার মনে হয়, আমাদের সবার তাঁর মতো হওয়া প্রয়োজন। আমি আগে গণমাধ্যমের কথায় খুবই প্রভাবিত হতাম।

সূর্যবংশী ছবির মাধ্যমে আপনি আর অক্ষয় অনেক দিন পর পর্দায় আসছেন। এই ব্যাপারে কিছু বলতে চান?

দীর্ঘদিন পর আমি আর অক্ষয় সেটে একসঙ্গে এলাম। এটা সত্যি দারুণ অনুভূতি। অক্ষয় নিজের দর্শকদের খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে। জানে, দর্শক তাঁর কাছ থেকে কখন কী চায়। সে সেই মতো কাজ করে।

আগামী মাসে আপনার জন্মদিন—

হ্যাঁ। জুলাই আমার সবচেয়ে পছন্দের মাস। আমার মতে, এটা বছরের সেরা মাস। জন্মদিনে খুব মজা করব। এটাই চাই।