বিপদে স্পিলবার্গের পাশে অস্কার প্রেসিডেন্ট

স্টিভেন স্পিলবার্গের পাশে অস্কার প্রেসিডেন্ট জন বেইলি
স্টিভেন স্পিলবার্গের পাশে অস্কার প্রেসিডেন্ট জন বেইলি

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গোটা বিশ্বে এখন তোলপাড়। কিছুদিন আগে স্ট্রিমিং সাইটের জন্য বানানো সিনেমা নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছিলেন মাস্টার চলচ্চিত্রকার স্টিভেন স্পিলবার্গ। এবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন অস্কার প্রেসিডেন্ট জন বেইলি। তাঁর বক্তব্য, ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে স্পিলবার্গকে। হলিউডের গণমাধ্যমগুলো ভুলভাল তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন করেছে।

অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের প্রেসিডেন্ট জন বেইলি বিশ্বাস করেন, স্টিভেন স্পিলবার্গের কথা অন্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে তিনি ভুল-বোঝাবুঝির শিকার হয়েছেন। এখন স্ট্রিমিং সাইটের সিনেমা নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে নেটফ্লিক্সের জন্য বানানো ছবি সিনেমার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার যোগ্য কি না, তা নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রতিযোগিতা বিভাগে নেটফ্লিক্সের সিনেমার অংশগ্রহণ নিয়েও বেশ বিতর্ক জমে। সেই বিতর্কে ঢুকে গেলেন স্পিলবার্গও। অস্কার প্রতিযোগিতায় স্ট্রিমিং সাইটগুলোর জন্য বানানো সিনেমা অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। স্পিলবার্গ বলেছিলেন, ‘আপনি যদি টেলিভিশন ফরম্যাটে সিনেমা বানান, তবে তা টিভি ছবিই হবে।’ তিনি যুক্তি তোলেন, যদি তা ভালো হয়, তাহলে এটা এমি পুরস্কার আসরে যেতে পারে, অস্কার নয়।

এই মন্তব্য করার পর হলিউডের কয়েকটি সাময়িকী আর ওয়েব পোর্টাল আলোড়ন সৃষ্টি করে। সম্প্রতি সাংবাদিকেরা একাডেমির প্রেসিডেন্টকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তাঁরা বলেন, ‘নেটফ্লিক্সের মতো ডিজিটাল মিডিয়াম নিয়ে স্পিলবার্গ শঙ্কিত? বেইলি বলেন, ‘স্পিলবার্গের মন্তব্যকে মিডিয়াতে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জনসমক্ষে কী বলছি, সে ব্যাপারে আমি খুবই যত্নবান। দুম করে নিজের ব্যক্তিগত মন্তব্য করে দিতে পারি না। এটা এ কারণে বললাম, স্পিলবার্গ পরিচালকদের একটি দলের গভর্নর। আর তাঁকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

বেইলি গত রোববার গণমাধ্যমের সঙ্গে এ কথা বলেন। হলিউডের গণমাধ্যমগুলোকে এই ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য দোষ দিয়ে বলেন, ‘তিনি (স্পিলবার্গ) যা বলেছেন, তা নিয়ে বেশ ভয়ে আছেন। এখানে গণমাধ্যমগুলো অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এখানে প্রচুর ভুল তথ্য আছে।’ নেটফ্লিক্স প্রসঙ্গে স্পিলবার্গ, ক্রিস নোলান, টেড স্যারানডসের (নেটফ্লিক্সের চিফ কনটেন্ট অফিসার) মধ্যে পার্থক্য করার কিছু নেই। আমরা সবাই চলচ্চিত্রকার। আমরা যেকোনো একটা পথ বের করবই।’

এরপর বেইলি স্ট্রিমিং সাইটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন। নেটফ্লিক্স নিয়ে স্পিলবার্গের ওই মন্তব্যের পরে ঝড় বয়ে যায় হলিউডে। নেটফ্লিক্সের জন্য নির্মিত ছবিগুলো হাতে গোনা কয়েকটি হলে মুক্তি দেওয়া হয়। সেটি অস্কার পাওয়ার উপযুক্ত কি না—এই বিতর্ক চলতে থাকে হলিউডজুড়ে। বেইলি বলেন, ‘এখন হুলু, অ্যামাজন, নেটফ্লিক্সের মাধ্যমে স্ট্রিমিং বিপ্লব চলছে। এগুলো আরও বড় পরিসরে কাজ করছে।’

তিনি আরও জানান, ডিজনি, প্যারামাউন্ট আর ওয়ার্নার ব্রাদার্স তাদের নিজস্ব স্ট্রিমিং সাইট খোলা শুরু করছে। যেটি নেটফ্লিক্সের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। এ কারণে নেটফ্লিক্স অনেক বেশি নিজস্ব কনটেন্ট তৈরি করছে। কারণ তাঁরা হলিউডের বেশির ভাগ ছবি খুব একটা পাবে না।

অস্কার একাডেমি এখন এই আলোচনাকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। একাডেমি বলছে, এখন তাঁরা একটা মধ্যবর্তী সময়ে আছে। সে ক্ষেত্রে এখন প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে আসলে চলচ্চিত্র মানে কী? এটা কি স্ট্রিমিং হবে? নাকি সিনেমা হলে দেখানো হবে। বেইলি বলেন, ‘দুই দলেরই সমান যুক্তি আছে। আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছি না। কারণ, দুই পক্ষেরই সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই আছে। যতক্ষণ না এর কোনো ফয়সালা হচ্ছে ততক্ষণে কোন দলকেই খারিজ করে দেওয়া যায় না।’

বেইলি জানান, বোর্ড অব গভর্নর একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সেটি হলো, এ বছরই নিয়মের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘প্রচুর চাপ আছে। কিন্তু এ বছরই পরিবর্তন করছি না। বিশেষ করে যখন স্টুডিওগুলোই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।’ ডেকান ক্রনিকল